সাব্বিরকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখেন না মোসাদ্দেক
বিশ্বকাপে সাত নম্বর পজিশনে ব্যাট করবে কে? বাংলাদেশ দলে এই প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকদিন ধরেই। এই পজিশনের জন্য সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ধরা হচ্ছে দুইজনকে। অভিজ্ঞ সাব্বির রহমান না ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের জয়ের নায়ক মোসাদ্দেক হোসেন, বিশ্বকাপে শেষ পর্যন্ত কে নামবেন সাত নম্বরে? গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হওয়ার পর মোসাদ্দেক বলছেন, দলে সুযোগ পাওয়ার বিষয়ে সাব্বিরকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখেন না তিনি।
গত বছর এশিয়া কাপে শেষবার খেলেছিলেন তিনি। মোসাদ্দেককে আট মাস পর ফেরানো হয়েছিল জাতীয় দলে। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে তাঁর ২৭ বলে ৫২ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংসেই বাংলাদেশকে শিরোপা এনে দিয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে ত্রিদেশীয় সিরিজে চার ম্যাচে সাব্বির রহমান খুব একটা ব্যাটিংয়ের সুযোগই পাননি, করেছেন মাত্র ৭ রান।
ব্যাট হাতেও ঝড় তোলেন, ঠিকঠাক স্পিনটাও করতে পারেন। মাহমুদউল্লাহ, মেহেদি হাসান মিরাজের ‘ব্যাকআপ’ হিসেবেই মোসাদ্দেককে রাখা হয়েছে স্কোয়াডে। ত্রিদেশীয় সিরিজের গ্রুপ পর্বে মোসাদ্দেক সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র একটি ম্যাচে। এরপর সাকিব আল হাসানের ইনজুরির কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফাইনালে সুযোগ পেয়েছিলেন, সেই ম্যাচে সাত নম্বরে নেমেই বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন ঐতিহাসিক শিরোপা। তবে সাকিব সুস্থ হয়ে ফেরায় পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করা হবে না তাঁর।
এদিকে মোসাদ্দেকের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাব্বির নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে। ডানেডিনে করেছিলেন সেঞ্চুরিও। তবে ত্রিদেশীয় সিরিজে চার ম্যাচে সাব্বির করেছেন ৭ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংই পাননি, দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্য রানে অপরাজিত ছিলেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সাত রানে অপরাজিত ছিলেন। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ফাইনালে ফিরেছেন শূন্য রান করে।
গতকাল কার্ডিফে মোসাদ্দেক বলছেন, একাদশে সুযোগ পাওয়ার জন্য অন্য কেউ খারাপ খেলুক এটা চান না তিনি, ‘আমি সাব্বিরকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছি না। আমি চাই সবাই সুযোগ পাক। কেউ খারাপ খেলার কারণে আমি একাদশে ঢুকে যাবো, এটা চাই না। বাংলাদেশ দলটাই সবার আগে, আমি চাই দল ভালো করুক।’
ত্রিদেশীয় সিরিজে কোন উইকেট পাননি মোসাদ্দেক। ইংলিশ কন্ডিশনে স্পিনারদের উইকেট পাওয়াটা কঠিন হবে বলেই ধারণা তাঁর, ‘এই কন্ডিশনে বোলিং করাটা কঠিন, স্পিনার জন্য সেটা আরও কঠিন। কোন টার্ন নেই, ব্যাটে বল আসে সহজেই। শুধু আমাদের জন্য না, সব দলের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। আমার চেষ্টা থাকবে ব্যাটসম্যানরা যেন সহজে রান না নিতে পারে। নিজের সবটুকু দিয়ে ত্রিদেশীয় ফাইনালের মতো বিশ্বকাপেও দলের হয়ে অবদান রাখতে চাই।’
এদিকে গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ ছিল সাব্বিরের। কিন্তু বৃষ্টি কারণে ভেস্তে গেছে সেই ম্যাচ। বৃষ্টির সময় সাব্বির বলেছেন, ভারতের বিপক্ষে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো কিছু করতে চান, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ত্রিদেশীয় সিরিজে খুব বেশি ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাইনি, আমাদের টপ অর্ডার খুব ভালো খেলায় এমনটা হয়েছিল। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা না হওয়ায় খুবই হতাশ। আমি সবসময়ই প্রস্তুতি ম্যাচকে গুরুত্ব দেই, কারণ এটা দিয়েই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। এই ম্যাচে ভালো করলে মূল টুর্নামেন্টেও ভালো করতে পারবো, এই বিশ্বাসটা জন্মায়। যেহেতু ম্যাচ খেলতে পারিনি, অনুশীলন করেই সেটা পোষাতে হবে।’
নিজের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলতে ইংল্যান্ডে এসেছেন সাব্বির। ২০১৫ সালের চেয়ে এবার আরও বেশি পরিপক্ব তিনি, ‘প্রথম বিশ্বকাপ হওয়ায় সেবার খুব আবেগী হয়ে পড়েছিলাম। জাতীয় দলের সাথে অনেক বছর খেলায় এবার আমি বেশি পরিপক্ব। মানসিকভাবে অনেক শক্ত হয়েছি, এটাই বিশ্বকাপে কাজে লাগাতে চাই। সবসময়ই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত আমি। এবারও সেটার ব্যতিক্রম হবে না। নিজের শতভাগ দিয়ে বিশ্বকাপে সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করবো।’
শেষ পর্যন্ত সাত নম্বরে কে সুযোগ পান, সেটা জানা যাবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচেই।