নেট সেশন: চোটের কালো মেঘে শুরু বাংলাদেশের বিশ্বকাপ
বিশ্বকাপ ম্যাচ ৫
বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা
কবে কখন
২ জুন, ওভাল।
বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩.৩০
বিশ্বকাপের চার ম্যাচ পেরিয়ে যাচ্ছে, এখনো মাঠে নামা হয়নি বাংলাদেশের। বিশ্বকাপ বিশ্বকাপ আঁচটাও সেভাবে হয়তো লাগছে না। ছুটির দিনে আপনার অপেক্ষা শেষ হচ্ছে, রোববার বাংলাদেশ নামছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
সেই মে মাসের শুরুতে বাংলাদেশ পা রেখেছে আয়ারল্যান্ডে। এরপর এক মাস পেরিয়ে গেছে, এর মধ্যে ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতে প্রথম শিরোপাটাও জিতে রেখেছে বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে হারটাই একটু অস্বস্তি তৈরি করতে পারে, নইলে সবকিছু চলছিল ভালোই। তবে এসবই বিশ্বকাপের পূর্বপ্রস্তুতি, কালকের ম্যাচটার জন্যই এতো আয়োজন।
বিশ্বকাপে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে একটা সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশের। ২০০৭ বিশ্বকাপে সুপার এইটে দারুণ একটা জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। অবশ্য অন্য দুইবারই হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। সর্বশেষ স্মৃতিটাও বাংলাদেশের জন্য সুখের নয় মোটেই, দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে ২০১৭ সালে তিনটি ওয়ানডেতেই হেরেছিল বাংলাদেশ।
তবে কাল মাশরাফিরা আফ্রিকাকে একটু আহত অবস্থাতেই পাচ্ছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছিল প্রোটিয়াদের। সেই ম্যাচের মতো কালও ডেল স্টেইনকে পাচ্ছে না আফ্রিকা, এক ক্রিস মরিস ছাড়া আর কোনো ব্যাকআপ পেসারও নেই। তবে বাংলাদেশকে রাবাদা চেনেন খুব ভালোভাবেই, তাঁর আর মোস্তাফিজের অভিষেক তো চার বছর আগের ওই সিরিজেই। এরপর রাবাদা যে উচ্চতায় উঠে গেছেন, সেখানে যেতে পারেননি মোস্তাফিজ। কাল নিশ্চয়ই সেই দূরত্ব কমিয়ে আনার একটা বার্তা দিতে চাইবেন। চোটের সমস্যা আছে বাংলাদেশেরও; তামিম, সাইফ উদ্দিনকে নিয়ে থেকে গেছে শংকা।
ইতিহাস বলে, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশের। ২০০৭ বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে হারিয়ে দিয়েছিল ভারতকে, যেটি শেষ পর্যন্ত বাজিয়ে দিয়েছিল ভারতের বিদায়ঘন্টা। দক্ষিণ আফ্রিকা অবশ্য গ্রুপ পর্বে সবসময়ই দারুণ, প্রথম ম্যাচে হারের ধাক্কাটা দ্রুত ভুলে যেতে চাইবে তারা।
রঙ্গমঞ্চ
দ্য ওভাল
দুপুরের পর বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে ওভালে। আগের দিনের উইকেটেই খেলা হবে, আবহাওয়া মেঘলা থাকার সম্ভাবনা আছে। এমনিতে ওভালের উইকেট ব্যাটিংবান্ধবই থাকার কথা, আগের দিন ইংল্যান্ড শুরুতে ব্যাট করে ৩০০ও করেছিল। পেসের সঙ্গে স্পিন ধরায় বাংলাদেশের জন্য উইকেটটা খারাপ হওয়ার কথা নয়। তবে সকালের মেঘলা আবহাওয়া সাহায্য করতে পারে দুই দলের পেসারদের।
লড়াইয়ের মধ্যে লড়াই
লুঙ্গি এনগিদি-সৌম্য সরকার
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সৌম্য সরকারের দারুণ কিছু স্মৃতি আছে। দেশের মাটিতে ২০১৫ সালের সিরিজজয়ে খেলেছিলেন মনে রাখার মতো দুইটি ইনিংস। এনগিদির অবশ্য অভিষেকই হয়েছে সেদিন, বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা হয়নি এখনও।নতুন বলে সৌম্যর পরীক্ষা নেবেন, সেটার ওপর বাংলাদেশের বড় স্কোরও নির্ভর করতে পারে।
যাদের ওপর চোখ
মোস্তাফিজুর রহমান
২০১৫ সালেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মোস্তাফিজ, ১৫ গড়ে। এরপর চোটের কারণে খেলা হয়নি ফিরতি সফর। ভারতের বিপক্ষে নতুন বলে বেশ ভালো করেছেন, সেই ধারা ধরে রাখতে চাইবেন ওভালে।
ইমরান তাহির
রিস্ট স্পিনে বাংলাদেশের দুর্বলতা অবিদিত নয়। আর টুর্নামেন্টের প্রথম ওভারেই বেইরস্টকে তুলে চমকে দিয়েছিলেন তাহির। বাংলাদেশের বিপক্ষে রেকর্ডটা অবশ্য খুব ভালো নয় তাহিরের, ৭ ম্যাচে আছে ৯ উইকেট। তবে রাবাদা-এনগিদির ভীড়ে তাহির হয়ে উঠতে পারেন মূল হন্তারক।
সম্ভাব্য একাদশ
তামিম ইকবাল কাল অনুশীলন করতে গিয়ে চোট পেয়েছেন হাতে, যদিও এক্সরেতে দেখা গেছে তাতে চিড় ধরেনি। ব্যথা কমে গেলে কাল খেলার কথা। মাশরাফির হ্যামস্ট্রিংয়ে, সাইফ উদ্দিনের কাফে ছোটখাটো সমস্যা থাকলেও তা না নামার মতো নয়।
বাংলাদেশ একাদশঃ তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান, সাইফ উদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), মোস্তাফিজুর রহমান
দক্ষিণ আফ্রিকারও চোটের সমস্যা আছে। ডেল স্টেইনের নামার সম্ভাবনা খুব কম, কাঁধের চোট থেকে এখনও শতভাগ ফিট নন। হাশিম আমলা আজ অনুশীলন করেননি, আগের ম্যাচে আঘাত পেয়েছিলেন মাথায়।
আফ্রিকা একাদশঃ কুইন্টন ডি কক, এইডেন মার্করাম, রাসি ফন ডার ডুসেন, ফাফ ডু প্লেসি (অধিনায়ক), জেপি ডুমিনি, ডেভিড মিলার, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, আন্ডাইল ফেহলেকোয়ায়ো, লুঙ্গি এনগিদি, কাগিসো রাবাদা, ইমরান তাহির।
সংখ্যায় সংখ্যায়
- ৮ হাজার রান করতে আর ৭৭ রান দরকার হাশিম আমলার। এই ইনিংসে করতে পারলে কোহলিকে ছাপিয়ে ৮ হাজার রানের পথে তিনি হবেন দ্রুততম
- ৫ হাজার রান ও ২৫০ উইকেটের ডাবলের জন্য আর মাত্র একটি উইকেট দরকার সাকিব আল হাসানের