• নেশনস কাপ
  • " />

     

    নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রথম নেশনস লিগের শিরোপা জিতল পর্তুগাল

    নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রথম নেশনস লিগের শিরোপা জিতল পর্তুগাল    

    গন্সালো গুইদেসের একমাত্র গোলে নেদারল্যান্ডসকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথম ইউয়েফা নেশনস লিগের শিরোপা জিতেছে ইউরোজয়ী পর্তুগাল। দেশের জার্সিতে তাই আরও একটি পালক যুক্ত হল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মুকুটে। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের পর এবারই প্রথম ইউরোপের স্বাগতিক কোনও দেশ নিজেদের মাঠেই জিতল শিরোপা। আর ফাইনালে হারের বৃত্ত থেকে আর বের হওয়া হল না ডাচদের। নিজেদের শেষ ৫ ফাইনালের ৪টিতেই হেরেছে তারা। আর তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয় মেজর শিরোপা জিতেছে ফার্নান্দো সান্তোসের পর্তুগাল।

    ২০০৪ সালে পর্তুগালেই নিজ সমর্থকদের সামনে প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের হাতছানি ছিল তার সামনে। কিন্তু গ্রিসের বিপক্ষে ইউরো ফাইনাল হেরে যাওয়ায় সেবার পরাজয়ের অশ্রু নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তরুণ রোনালদোকে। ২০১৬-তে সেই ইউরো জিতেই দুঃখ ভুলেছিল রোনালদোর পর্তুগাল। এবার রোনালদো সুযোগ পেলেন ঘরের সমর্থকদের সামনেই শিরোপা উদযাপনের।

     

     

    গতানুগতিক প্রীতি ম্যাচগুলোকে আরও অর্থবহ এবং প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতেই গত বছর থেকে এই নেশনস লিগের আয়োজন শুরু করেছে ইউয়েফা। নক আউট পর্বের ভেন্যু ঠিক করা হয়েছিল পর্তুগালে।

    পোর্তোর মাঠ স্তাদিও দো দ্রাগাওয়ে প্রথমার্ধে লড়াইটা হয়েছে সমানে সমান। বল দখলে ডাচরা এগিয়ে থাকলেও গোলের সুযোগ তৈরিতে হিমশিম খেয়েছে দু'দলই। অবশ্য আক্রমণের চেয়ে গোল না খাওয়ার দিকেই যেন ঝোঁক বেশি ছিল তাদের। আক্রমণে তেমন সুবিধা করতে পারেননি ডাচরা, কিন্তু পর্তুগিজদের সব আক্রমণ রীতিমত ধূলিস্যাৎ করে দিচ্ছিলেন মাথিয়াস ডি লিট এবং ভার্জিল ভ্যান ডাইক। দুর্দান্ত সব ট্যাকেলে রোনালদোদের এগুতেই দেননি ডাচ রক্ষণজুটি। ভ্যান ডাইকদের দাপটে গোছানো আক্রমণের চেয়ে দূরপাল্লার শটেই নির্ভর করছিল পর্তুগাল। ৩০ মিনিটে রুবেন ফার্নান্দেজের শট ছাড়া জ্যাসপার সিলিসেনকে তেমন পরীক্ষায়ই পড়তে হয়নি, পর্তুগিজ গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিও ছিলেন রীতিমত নীরব দর্শক।

     

     

    প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও গোলের সুযোগ মেলেনি তেমন। আক্রমণের ধার দ্বিতীয়ার্ধে এসে কিছুটা বাড়িয়েছিল ডাচরা, আর তাতেই হয়েছিল হিতে বিপরীত। ৬০ মিনিটে প্রতি-আক্রমণে ম্যাচে পর্তুগিজদের সেরা ফুটবলার বের্নার্দো সিলভার চমৎকার পাস থেকে ডিবক্সের ঠিক বাইরে বল পান গন্সালো গুইদেস। সেখান থেকেই মারেন আগুনে এক শট, ডাচ গোলরক্ষক জ্যাস্পার সিলেসেন ঠিক দিকেই ঝাঁপ দিয়েছিলেন সেটা ধরতে কিন্তু গতির কাছে হার মানেন তিনি। গুইদেসের ওই গোলই ব্যবধান গড়ে দিয়েছে ম্যাচে।

     

     

    গোল হজমের পর অবশ্য আক্রমণে চেহারা ফিরেছিল মেম্ফিস ডিপাইদের। প্রথমার্ধের নীরব দর্শক প্যাট্রিসিও দ্বিতীয়ার্ধে ছিলেন দুর্দান্ত। দ্বিতীয়ার্ধে ডিপাই এবং মার্টিন ডি রুনকে ফিরিয়ে দিয়েছেন দারুণ দক্ষতায়। তবে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও সমতায় ফেরা হয়নি ডাচদের। তারা অবশ্য চাইলে নিজেকের কপালের দোষও দেখতে পারে। ভিআরের যুগে তো আজকাল ডিবক্সের ভেতর হ্যান্ডবল মানেই পেনাল্টি। সেই হিসাবে একটা পেনাল্টি হয়ত পেতেও পারত নেদারল্যান্ডস। তবে এছাড়াও  গোলের সামনে একজন জাত স্ট্রাইকারদের অভাবটা ভালোভাবেই টের পেয়েছে তারা। বাকি সময় মাথা ঠান্ডা রেখে ঘরের সমর্থকদের সামনে আর পথ হারায়নি পর্তুগালও।

    রোনালদোর বয়স হয়ে গেছে ৩৪। সামনে ঘরের মাঠে আর কোনো বড় টুর্নামেন্টও নেই। নিজ দেশের সমর্থকদের সঙ্গে উৎসবে মাতার তাই শেষ সুযোগ ছিল এটাই। সেমিফাইনালে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন রোনালদো। ফাইনালে অবশ্য তেমন সুবিধা করতে পারেননি, কিন্তু অধিনায়ক দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়কের মতোই। তাই শিরোপা উঁচিয়ে ধরার আনন্দটা দ্বিগুণ হয়েছে পর্তুগালের।