যে কারণে রিজার্ভ ডে রাখেনি আইসিসি

   

বৃষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত পরিত্যক্ত হয়েছে বিশ্বকাপের তিনটি ম্যাচ। গ্রুপ পর্বের আরও বেশ কিছু ম্যাচের দিন আছে বৃষ্টির সম্ভাবনা। গতকাল বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডস আক্ষেপ করে বলেই ফেললেন, মানুষকে চাঁদে পাঠাতে পারলে বিশ্বকাপে রিজার্ভ ডে রাখা যাবে না কেন! রোডসের মতো আক্ষেপ আছে সমর্থকদেরও। এত অভিযোগের জবাবে আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন জানালেন, বিশ্বকাপের দৈর্ঘ্য যেন বেশি লম্বা না হয় এজন্যই রাখা হয়নি রিজার্ভ ডে।

ব্রিস্টলে গত শুক্রবার বৃষ্টির কারণে মাঠে গড়ায়নি পাকিস্তান-শ্রীলংকা ম্যাচ। সাউদাম্পটনে দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচেও হানা দিয়েছিল বৃষ্টি, সেই ম্যাচে খেলা হয়েছে মাত্র ৭.৩ ওভার। গতকাল ব্রিস্টলে সারাদিনই থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে, শ্রীলংকা-পাকিস্তান ম্যাচের মতো গতকালও একটি বল হয়নি বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচে।

 

 

১৯৯৯ সালে শেষবার যখন ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ হয়, সেবার ছিল রিজার্ভ ডে। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপেও ছিল এই নিয়ম। পরিসংখ্যান বলছে, বৃষ্টির কারণে এর আগে কোন বিশ্বকাপই এতটা 'ক্ষতির' মুখে পড়েনি। এক সপ্তাহের মাঝে ব্রিস্টলে একটি বল মাঠে না গড়িয়েই পরিত্যক্ত হয়েছে দুটি ম্যাচ। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত হয়নি তিনটি ম্যাচ, যা এক বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ১৯৯২ ও ২০০৩ সালে দুটি করে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল। 

যেখানে ইংল্যান্ডের অনেক জায়গাতেই ম্যাচের সময় বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে, তাহলে আইসিসি কেন রিজার্ভ ডে রাখেনি? রিচার্ডসন বলছেন, এমনিতেই যেখানে টুর্নামেন্টের দৈর্ঘ্য ৪৫ দিন, সেখানে রিজার্ভ ডে রেখে সেটাকে আর বাড়াতে চাননি তারা, ‘প্রতি ম্যাচের জন্য রিজার্ভ ডে রাখলে টুর্নামেন্টের দৈর্ঘ্য আরও বেড়ে যেত। সেক্ষেত্রে বিশ্বকাপ আয়োজন করা অনেক বেশি জটিল হয়ে দাঁড়াত। পিচ প্রস্তুতি, দলগুলোর বিশ্রাম, ভ্রমণ, হোটেলের বুকিং, ভেন্যুর প্রাপ্যতা, টুর্নামেন্টের স্টাফ, অফিশিয়ালদের তৈরি থাকা, স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণ ও সম্প্রচারে বিঘ্ন ঘটত। আর রিজার্ভ ডেতে যে বৃষ্টি হবে না, তার নিশ্চয়তা কী?’

নির্ধারিত দিনে ম্যাচ আয়োজনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে আইসিসি, দাবি রিচার্ডসনের, ‘১২০০ মানুষ নিজেদের সবটুকু দিয়ে ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা চালাচ্ছে। রিজার্ভ ডে থাকলে আরও অনেক বেশি মানুষের দরকার হতো। নকআউট পর্বের জন্য আমরা রিজার্ভ ডে রেখেছি। কারণ গ্রুপ পর্বের দৈর্ঘ্য এমনিতেও অনেক লম্বা।’

পরিত্যক্ত হওয়া তিন ম্যাচেই খেলা দেখতে এসে হতাশ হয়ে ফিরেছেন বহু দর্শক। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বল হওয়া ছাড়াই ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে টিকেটের পুরো টাকাই ফেরত পাবেন দর্শক। যদি ১৫ ওভারের কম খেলা হয়, তবুও তারা পুরো টাকা পাবেন। ১৫ থেকে ৩০ ওভারের মাঝে খেলা হলে টিকেটের টাকার ৫০ শতাংশ ফেরত পাওয়া যাবে। অনলাইনে টিকেট কাটলে ২৮ দিনের মাঝে টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। আর মাঠ থেকে কাটলে সেটা চিঠির মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে।

এখন পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। বৃষ্টি হানা দিতে পারে, এমন সম্ভাবনা আছে সামনের আরও কিছু ম্যাচে। টন্টনে আজকের অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান ম্যাচে হতে পারে বৃষ্টি। নটিংহামে ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ, সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের দিনেও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।