কিক অফের আগে || ঘরের মাঠে দারুণ শুরুর অপেক্ষায় ব্রাজিল
কবে, কখন
ব্রাজিল-বলিভিয়া, সকাল ৬.৩০ মিনিট, সাও পাওলো
স্বাগতিক দেশ হওয়ার আলাদা একটা স্বস্তি আছে, আনন্দও আছে। আর ঘরের সমর্থনও দলকে এগিয়ে দেয় অনেকখানি। স্বাগতিক দেশ হওয়ার সুবাদে শিরোপা জিতে যাওয়ার উদাহরণ আছে ভুরি ভুরি। সেটা আছে ব্রাজিলেরও। আগে যে চারবার কোপা আমেরিকার আয়োজক ছিল তারা, সেই চারবারই শিরোপা দেশের বাইরে যেতে দেয়নি ব্রাজিল। তবুও ব্রাজিলে ঘরের মাঠের ইতিহাসে জ্বল জ্বল করে ১৯৫০ বিশ্বকাপের মারাকানাজো আর ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে সেমিফাইনালের হার। স্বাগতিক হওয়াটা যে ভীষণ চাপের, সেটাও ভালো করেই জানে ব্রাজিল।
কোপা আমেরিকায় স্বাগতিক হওয়ার ইতিহাস সুখকর হলেও, ব্রাজিলের অস্বস্তি এবারও ধুয়ে মুছে ফেলা যাচ্ছে না। ২০০৭ সালে সবশেষ মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর টানা ৪ টুর্নামেন্টে ব্যর্থ তারা। শেষ তিনবার সেমিফাইনাল পর্যন্তও যাওয়া হয়নি ব্রাজিলের। ২০১৪ বিশ্বকাপের ভরাডুবির পর এবার ঘরের মাঠে সাফল্য পাওয়ার তৃষ্ণাটা যেন আরও বেড়ে গেছে ব্রাজিলে।
সেলেসাওদের স্বপ্নটা অবশ্য খানিকটা ধাক্কাও খেয়েছে কোপা শুরুর আগেই। ব্রাজিল দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা নেইমার বাদ পড়েছেন ইনজুরির কারণে। তার জায়গায় এসেছেন উইলিয়ান। ব্রাজিলের স্কোয়াডে একাধিক বিশ্বমানের খেলোয়াড় থাকার আরও একটা দৃষ্টান্ত সেটা। তবে নেইমারকে হারিয়ে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন গ্যাব্রিয়েল হেসুসের। ব্রাজিলের জার্সিতে ১৫ গোল তার। আর নেইমারের ৬০ গোল। বড় টুর্নামেন্টে আগেও খেই হারিয়েছে ব্রাজিলের স্ট্রাইকাররা। হেসুসও গতবার রাশিয়ায় হতাশ করেছেন। এবার তার সঙ্গে আছেন রিচার্লিসন, ডেভিড নেরেস, রবার্তো ফিরমিনোরা। সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে তিতেও হয়ত এবার খুব বেশি অপেক্ষা করবেন না বদলি করাতে।
নেইমার অবশ্য গত এক বছরে ভালো কাজের চেয়ে মন্দের জন্যই বেশি সমালোচিত হয়েছেন বেশি। তাই নেইমার না থাকা শাপেবরও হতে পারে ব্রাজিলের জন্য। যদিও তিতে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, নেইমারকে ছাড়া কোপা খেলতে হবে এটা ভাবতেও পারেননি তিনি। আর দলে নেইমারকে নিয়ে যত না কথা হয় তার চেয়ে বেশি মিডিয়াই তার নামে খবর রটাতে থাকে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। প্রথম ম্যাচে বলেই হয়ত সংবাদ সম্মেলনে নেইমার ইস্যু এড়াতে পারেননি ব্রাজিল কোচ।
টুর্নামেন্টের শুরুটা বোধ হয় এর চেয়ে সহজভাবে হতে পারত না ব্রাজিলের জন্য। সাও পাওলোতে প্রথম ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ বলিভিয়া, এই টুর্নামেন্টে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর ভেতর ফিফা র্যাংকিংয়ে সবচেয়ে পেছনে তারা।
বলিভিয়ার বিপক্ষে তাই জয়ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই ব্রাজিলের। গত বিশ্বকাপের পর এবারই প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে দুইদল। বিশ্বকাপের পর ১০ ম্যাচে খেলে তিতের ব্রাজিল এখনও অপরাজিত। আর বলিভিয়া শেষ ১৬ ম্যাচে জিতেছে মাত্র একটিতে, মায়ানমারের বিপক্ষে। আর শেষ ৬ ম্যাচে বলিভিয়া গোল করতে পেরেছে আর একটি।
কোপায় বলিভিয়ার সেরা সাফল্য ১৯৬৩ সালে, ঘরের মাঠে সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। সেবার অবশ্য ফুটবলের চেয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাঠের উচ্চতা বড় ভূমিকা রেখেছিল বলিভিয়ার সাফল্যে। এছাড়া লাতিন আমেরিকার দলগুলোর মধ্যে বলিভিয়া বরাবরই সবচেয়ে কম শক্তিশালী। টুর্নামেন্টের শুরুটা তাদের জন্য এর চেয়ে কঠিন আর হতে পারত না। ব্রাজিলের বিপক্ষে বলিভিয়া ড্র করলেও সেটা হবে মহা বিস্ময়।
দলের খবর
তিতে নিশ্চিত করে জানিয়ে দিয়েছেন বার্সেলোনা মিডফিল্ডার আর্থার মেলোকে বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলাচ্ছেন না তিনি। তবে তিতের জন্য আরও বড় সিদ্ধান্ত ফ্রন্ট থ্রি ঠিক করা। রিচার্লিসন আর ডেভিড নেরেসের জায়গা অনেকটাই নিশ্চিত। হেসুস নাকি ফিরমিনো সেটাই প্রশ্ন। তবে হেসুসের বদলে ফিরমিনো খেললে সেটা চমকই হবে।
বলিভিয়ায় মার্টিনস একমাত্র খেলোয়াড় যিনি দক্ষিণ আমেরিকার বাইরের লিগে ফুটবল খেলেন। গোলের জন্য তার ওপর নির্ভরশীল বলিভিয়া।
সম্ভাব্য ব্রাজিল একাদশ
অ্যালিসন, দানি আলভেজ, মার্কিনহোস, থিয়াগো সিলভা, ফিলিপে লুইজ, ফার্নান্দিনহো, কাসেমিরো, ফিলিপ কুতিনিয়ো, ডেভিড নেরেস, রিচার্লিসন, গ্যাব্রিয়েল হেসুস
হেড টু হেড
সাও পাওলো দুইদল একে অন্যের মুখোমুখি হবে ৩০ তম বারের মতো। এর মধ্যে বলিভিয়া জিতেছে মাত্র ৫ বার। আর ব্রাজিলের জয় ২০ বার।
প্যাভিলিয়নের প্রেডিকশন ব্রাজিল ৪-০ বলিভিয়া