• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    ৮৭ বছরের চারুলতা যখন কোহলি-রোহিতদের অনুপ্রেরণা

    ৮৭ বছরের চারুলতা যখন কোহলি-রোহিতদের অনুপ্রেরণা    

    মুখে ভারতের পতাকা আঁকা, গলার মাফলারের নকশাতেও তেরঙ্গা। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাঁশি বাজিয়ে, লাফঝাঁপ করেই কোহলি-রোহিতদের সমর্থন জানিয়ে গেলেন চারুলতা প্যাটেল। কিন্তু এজবাস্টনে তো এভাবে ভারতকে সমর্থন জানিয়েছে হাজারো মানুষ, তাহলে তিনি সবার চেয়ে আলাদা কেনো? কারণটা শুনলে চোখ কপালে উঠবে আপনারও। চারুলতার বয়স যে ৮৭ বছর! জি ঠিক শুনেছেন, ৮৭ বছর বয়সে মাঠে এসে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখে রাতারাতি তারকা বনে গেছেন ইংল্যান্ড প্রবাসী চারুলতা প্যাটেল। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের পর তাঁর আশীর্বাদও নিয়েছেন কোহলিরা! 

    ভারতের ব্যাটিংয়ের সময় প্রথমবার ক্যামেরা খুঁজে নেয় চারুলতাকে। সেই সময় বাঁশি বাজিয়ে রোহিতের চার-ছয় উদযাপন করছিলেন তিনি। বড় পর্দায় তাকে দেখা যাওয়া মাত্রই দর্শকের করতালি শোনা যায়। ধারাভাষ্যে থাকা সৌরভ গাঙ্গুলিরাও অবাক হয়ে বলেছিলেন, এত বয়স্ক হয়েও কীভাবে তিনি এমন প্রাণবন্তভাবে সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছেন ভারতকে! মুহূর্তেই চারুলতার ছবি, ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুরো ম্যাচজুড়েই বহুবার তার দিকে ক্যামেরা তাক করা হয়েছে। প্রায় সব ধারাভাষ্যকারই বলেছেন, চারুলতাই এই বিশ্বকাপের সেরা সমর্থক। 

    চারুলতার এমন সমর্থন নজর এড়ায়নি কোহলিদেরও। ম্যাচ শেষে তাই কোহলি নিজেই ছুটে গিয়েছিলেন চারুলতার সাথে দেখা করতে। গ্যালারিতে বেশ কিছুক্ষণ তাঁর সাথে কথা বলেন কোহলি। কোহলির গালে চুমু দিয়ে, মাথায় হাত বুলিয়ে প্রাণভরেই আশীর্বাদ করেছেন চারুলতা। তাঁর আশীর্বাদ নিয়েছেন সেঞ্চুরি করে ম্যাচসেরা হওয়া রোহিত শর্মাও। 

    কোহলি এক টুইটে চারুলতাকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন এমন বয়সে মাঠে এসে সমর্থন জানানোর জন্য, ‘আমি সব সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। বিশেষ করে চারুলতা প্যাটেলকে। তাঁর বয়স ৮৭, কিন্তু তাঁর মতো প্রাণবন্ত সমর্থক আমি কখনোই দেখিনি। বয়স শুধুমাত্র একটা সংখ্যা, ইচ্ছাশক্তিটাই আসল। তাঁর আশীর্বাদ নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’ 

    বহুযুগ ধরেই পরিবারের সাথে ইংল্যান্ডে আছেন চারুলতা। ১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে যেবার প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ভারত, সেই ম্যাচটাও মাঠে বসে দেখেছিলেন তিনি। চারুলতার বিশ্বাস, কপিল দেবের মতো বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরবেন কোহলিও, ‘আমি খুবই ধার্মিক মানুষ। ঈশ্বরে আমার অগাধ বিশ্বাস। ৮৩ সালে যখন ভারত বিশ্বকাপ জেতে, আমি নেচেছিলাম গ্যালারিতে! বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে নাতনিকে বলেছিলাম, এই ম্যাচ জিতলেও আমি নাচবো! আশা করি ভারত এবারও বিশ্বকাপ জিতবে।’

    ১৯৮৩ এর লর্ডসের ফাইনালে ভারতের জয়ে নেচেছিলেন চারুলতা। তখন তাঁর বয়স ছিল ৫১। এবার যদি কোহলির হাতেই শিরোপা ওঠে, ৮৭ বছর বয়সেও নিশ্চয়ই একইভাবে নাচবেন তিনি!