ম্যান ইউনাইটেড : রক্ষণে ফিরবে শ্রী, কিন্তু গোল করবেন কে?
স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনকে ছাড়া সপ্তম গ্রীষ্ম পার করলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। এর আগে বেশ কয়েকবার বিপুল অর্থ খরচ করে ম্যান ইউনাইটেড চেষ্টা করেছে হারানো গৌরব ফিরে পেতে। ব্যর্থ হয়েছে প্রতিবার। এবারও দলবদলে দরকার ছিল বড় অঙ্কের টাকা। অনুমিতভাবেই প্রায় ১৩০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করেছে ইউনাইটেড। কিন্তু তাতে মাত্র তিনজন খেলোয়াড় এনেছে তারা দলে। এর মধ্যে দুইজন আবার ডিফেন্ডার। আরেকজন তরুণ ও প্রিমিয়ার লিগে প্রথম খেলতে আসা ড্যানি জেমস। যার কাছে বেশি কিছু প্রত্যাশা করাটাও বাড়াবাড়ি।
দলে একজন স্ট্রাইকার না ভিড়িয়েই রোমেলু লুকাকু ছেড়ে দিয়েছে ইউনাইটেড। অগত্যা অ্যান্থনি মার্শিয়ালের গায়ে চাপছে নাম্বার নাইন জার্সি। অ্যান্ডার হেরেরা রিপ্লেসমেন্ট খুঁজে পেতেও ব্যর্থ ইউনাইটেড। অথচ সোলশারের অধীনে আগের মৌসুমের শেষ অর্ধেই টের পাওয়া গিয়েছিল এই দলের উন্নতির জায়গা আছে অনেক। ফাঁকা জায়গাগুলো ফাঁকা রেখে এবার আরেকটি মৌসুম শুরু করছে ইউনাইটেড। লুই ফন গাল, হোসে মরিনহোরা যা পারেননি, সেটা এখন করে দেখাতে হবে অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে থাকা সোলশারকে।
যারা এলেন
ড্যানিয়েল জেমস- সোয়ানসি সিটি
অ্যারন ওয়ান বিসাকা- ক্রিস্টাল প্যালেস
হ্যারি ম্যাগুয়ের- লেস্টার সিটি
যারা গেলেন
অ্যান্টোনিও ভ্যালেন্সিয়া- কিতো
অ্যান্ডার হেরেরা- পিএসজি
জেমস উইলসন- রিলিজড
রোমেলু লুকাকু- ইন্টার মিলান
আমরা যা জানি
সোলশার নিচ থেকে খেলা বিল্ড আপ করতে চান। হ্যারি ম্যাগুয়ের এক্ষেত্রে বেশ কাজে আসবে ইউনাইটেডের। প্রীতি ম্যাচগুলোতে লিন্ডেলফ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, এবার সঙ্গী হিসেবে তার চেয়েও ভালো একজন বল প্লেইং ডিফেন্ডার পাচ্ছেন তিনি। আর ফুলব্যাকের বহুদিনের সমস্যাটা এবার আপাতত মেটার কথা ইউনাইটেডের। লুক শ ইনজুরির পর গত মৌসুমে বেশ কয়েকবার ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন। এবার নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ তার। আর ওয়ান বিসাকা সম্ভাবনাময় তরুণ। রাইটব্যাকে তার কাছ থেকে গত মৌসুমের ফর্মটা পেলেও খুশি থাকবে ইউনাইটেড।
গতবার মৌসুমের শেষদিকে এই নিচ থেকে খেলা বিল্ড আপ না করতে পারা ভুগিয়েছে ইউনাইটেডকে। গোটা দলকে তখন মনে হয়েছে দিশেহারা। ফল যাই হোক এবার অন্তত দিক নিশানাহীন ছোটাছুটি করতে দেখা যাবে না পগবাদের। ফ্রেড, নেমানিয়া মাতিচ সবাই মোটামুটি একই কাতারে। পগবা হয়ত শেষ পর্যন্ত থেকেই যাচ্ছেন ইউনাইটেডে। অন্তত ডিফেন্স থেকে মিডফিল্ড পর্যন্ত নিয়ম শৃঙ্খলা ঠিক থাকলে অতোখানি হয়ত ভুগতে হবে না আগেরবারের মতো।
যা নিয়ে সংশয়
ম্যাগুয়ের এখন বিশ্বের সবচেয়ে দামী ডিফেন্ডার। তবে তিনি এখনও বিশ্বসেরা নন। প্রথম মৌসুমে তার ওপর অবধারিতভাবে চাপ থাকবে বেশি। পা হড়কালে সঙ্গে ইউনাইটডের মৌসুম নিয়ে ডুববেন তিনি।
পগবা দলের কৌশলের মূল অংশ হতে পারেন না- এই প্রমাণ এতোদিনে পেয়ে যাওয়ার কথা ইউনাইটেডের। ফ্রেঞ্চ ম্যান মিডফিল্ডে সঙ্গী হিসেবে পগবা যাদের পাচ্ছেন তাদের মান আরও নিচে। ফ্রেডরা নিজেদের মান অনুযায়ী খেলতে পারলেও পগবা আরও কার্যকর হবেন ইউনাইটেডের জন্য। কিন্তু সেটাও নির্ভর করছে অনেক যদি, কিন্তুর ওপর।
আর মূল সমস্যা তো স্ট্রাইকার নিয়ে। মার্কোস র্যাশফোর্ড, অ্যান্থনি মার্শিয়ালের ওপর বাড়তি চাপ বর্তাচ্ছে। দুইজনের কেউই জাত স্ট্রাইকার নন। ইউনাইটেড এখন তাই একরকম স্ট্রাইকারশূন্যই। অ্যালেক্সিস সানচেজ নাকি এখনও ফিটনেস নিয়ে ভুগছেন। অথচ কোপা আমেরিকাতেও চিলির হয়ে দুর্দান্ত খেলেছেন তিনি কয়েকটি ম্যাচ। মেসন গ্রিনউইড আছেন একমাত্র স্ট্রাইকার, বয়স তার ১৭। নড়বড়ে ফরোয়ার্ড লাইন তাই এবারের ইউনাইটেডের মূল ভোগান্তির কারণ না হওয়ার যুক্তি খুব বেশি নেই।
শেষ পাঁচ মৌসুমে
ষষ্ঠ, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ, পঞ্চম, চতুর্থ (সবশেষ মৌসুম থেকে ক্রমান্বয়ে)
প্যাভিলিয়ন প্রেডিকশনঃ পঞ্চম