• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    'বেঈমানি' করছেন চেলসির খেলোয়াড়রা?

    'বেঈমানি' করছেন চেলসির খেলোয়াড়রা?    

    ১৬ ম্যাচে ৪ জয়, ৩ ড্র আর ৯টিতেই হার। পয়েন্ট টেবিলে চেলসির অবস্থান এখন ষোল নম্বরে, রেলিগেশন থেকে মাত্র এক পয়েন্ট উপরে। কোচ হোসে মরিনহোর মানসিক অবস্থা কি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে গত রাতে লিচেস্টার সিটির কাছে হারের পর ক্ষুব্ধ মরিনহো সরাসরি আঙ্গুল তুলে বসলেন দলের প্রতি তাঁর খেলোয়াড়দের দায়বদ্ধতার দিকেই। পরিষ্কার করেই বলছেন তাঁর ছেলেরা তাঁর সাথে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করছে।

     

     

    লিচেস্টারের কাছে ২-১ ব্যবধানে হারের পর রীতিমতো অগ্নিশর্মাই দেখা গেলো মরিনহোকে, “আমার মনে হচ্ছে আমার কাজের সাথে বেঈমানি করা হচ্ছে। এমন দুটো গোল আমরা খেলাম যেগুলো একেবারেই মেনে নেয়ার মতো না।”

     

     

    এমনটা মনে হওয়ার পিছনে নিজের যুক্তিও তুলে ধরছেন চেলসি বস, “আমি জানি আমার অন্যতম সেরা একটা গুণ হচ্ছে আমি খেলোয়াড়দের হয়ে খেলাটা পড়ে দিতে পারি, প্রতিপক্ষকে ধরতে পারি এবং প্রতিপক্ষের শক্তির জায়গাগুলো সম্পর্কে আমার ছেলেদের আগাম সতর্ক করে দিতে পারি। ভার্ডি আজ দু’জন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের ভিতর দিয়ে বল পায়ে ঢুকে গেলো। বক্সের ভিতর মাহরেজ তাঁকে একা প্রতিহত করতে গেলো। অথচ আমি চেয়েছি তাঁকে দু’জন ট্যাকল করুক। একজন মিডফিল্ডার যতোটা সম্ভব তাঁর পিছনে লেগে থাকুক। কিন্তু সেটা হয় নি। এই গোলদুটো মেনে নেয়া কঠিন।”

     

     

    মরিনহোর আক্ষেপ যেন ফুরোবার নয়, “এই ম্যাচের জন্য চারদিন ধরে কাজ করেছি। প্রতিপক্ষের সাথে যায় এমন প্রতিটা বিষয় ধরে ধরে বুঝিয়েছি। চারটা গতিবিধি আলাদা করে চিহ্নিত করে বলে দিয়েছি এইভাবেই তাঁরা প্রায় প্রতিটা গোল করছে। আমার ছেলেরা গত তিন দিনে এই সবগুলো তথ্যই পেয়েছে। তাঁদেরকেই জিগ্যেস করে দেখুন না। আমি জানি ওরা সৎ, ওরাই স্বীকার করবে আমি যা যা বলেছি সেগুলো সত্যি কিনা। যে চারটা সম্ভাবনার কথা বলেছিলাম, ওসবের মধ্যেই আজকের গোলগুলো হয়েছে।”

     

    প্রথমার্ধের ত্রিশ মিনিটের মাথায় চোট নিয়ে মাঠ ছেড়ে যান চেলসির এডেন হ্যাজার্ড। এই বেলজিয়ান ফরোয়ার্ডের আচরণও ‘অস্বাভাবিক’ ঠেকেছে ম্যানেজারের কাছে, “জানি না কি চোট নিয়ে সে মাঠ ছেড়েছে। আহত হওয়ার দশ সেকেন্ডের মধ্যে সে বললো সে আর খেলতে পারবে না। আমি তখন বদলি কাউকে নামাতে ব্যস্ত হলাম। তখন সে বললো সে চেষ্টা করে দেখবে। উঠে দাঁড়িয়ে মাঠের দিকে এক পা বাড়িয়েই আবার বলে বসলো, সে পারবে না। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এতবার কথার পরিবর্তন করলে কিভাবে হয়।”

     

    এমন পরিস্থিতিতে কোন সান্ত্বনাসূচক বাক্যে ভুলতে চাইছেন না মরিনহো। বাস্তবতাটুকু মেনে নেয়াই শ্রেয় মনে করছেন তিনি, “আর ঘুরে দাঁড়াবার কোন সুযোগ নেই। বাস্তবতা হচ্ছে আমরা রেলিগেশন জোনে আছি, শিরোপা লড়াইয়ে নয়। পয়েন্ট টেবিলের দিকে তাকান, আমরা যেখানে আছি সেটাই বাস্তবতা।”

     

    তবে গত মৌসুমের শিরোপাজয়ী দলটার খেলোয়াড়দের মান এবার নেমে গেছে, এমনটা মানতে নারাজ চেলসি বস। বরং তাঁর দাবী খেলোয়াড়দের মান তিনি আরও উপরে উঠিয়েছেন, “মাঝেমাঝে ভাবি গত মৌসুমে কি দারুণ একটা কাজ করেছিলাম। খেলোয়াড়দেরকে তাঁদের স্বাভাবিক মানের চেয়ে উপরে উঠিয়ে নিয়েছিলাম। এটাই যদি সত্যি হয় যে আমি তাঁদেরকে যে অবস্থানে উঠিয়ে দিয়েছি সেটা তাঁরা লম্বা সময়ের জন্য ধরে রাখতে অক্ষম, তাহলে তো অতিমানবীয় কোন দাওয়াই দরকার।”