• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    'বিশ্বাসঘাতকতা'র বলি হচ্ছেন মরিনহো?

    'বিশ্বাসঘাতকতা'র বলি হচ্ছেন মরিনহো?    

    সম্ভবত কোচিং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সময়টাই পার করছেন হোসে মরিনহো। উপর্যুপরি পরাজয়ে দলের বেহাল দশায় কোনঠাসা হয়ে আছেন দীর্ঘদিন ধরেই। এর উপর গত সোমবার লিচেস্টারের বিপক্ষে ২-১ গোলের পরাজয়ের পর নিজ দলের খেলোয়াড়দের বিপক্ষে ‘প্রতারণা’র অভিযোগ এনে রীতিমতো বোমা ফাটিয়ে বসেছেন। এমন প্রেক্ষিতে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ‘স্পেশাল ওয়ান’-এর রাজত্ব হারানোটা সময়ের ব্যাপার বলে মনে করছেন অনেকে। এমনকি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী মরিনহোর উত্তরসূরির খোঁজটাও বেশ জোরেশোরেই শুরু করে দিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

     

     

    ম্যাচ পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় নিজ দলের খেলোয়াড়দের উপর উষ্মা প্রকাশের পর চেলসির নিজস্ব টিভি চ্যানেলের সাথে এক সাক্ষাৎকারেও অনুরূপ মনোভাবের পুনরাবৃত্তিই করেছেন মরিনহো। অভিযোগ করেছেন তাঁর দলের অনেক খেলোয়াড়রের মাঝেই ‘দায়বদ্ধতা’র অভাব আছে, “এঁদের অনেকেরই চেলসির প্রতি, ফুটবলের প্রতি এবং নিজের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। চেলসি অনেক বড় একটা নাম, ফুটবলটাও নিছক পেশার চেয়ে বেশী কিছু- এটা একটা প্যাশন। মাঠে প্রতিটা মুহূর্ত আপনার মাথায় এই ব্যাপারগুলো থাকতে হবে। কতো লক্ষ-কোটি মানুষ ফুটবলার হতে চায় এবং হতে পারে না? ওসব ভেবে মাঠে একটা মুহূর্তও তো নষ্ট করা উচিৎ নয়। সেখানে পুরোটা সময় আপনার উপভোগ করতে শিখতে হবে, নিজের সেরাটুকু উজার করে দিতে হবে। হ্যাঁ, এসব ব্যাপারে আমার দলের কয়েকজন খেলোয়াড়কে নিয়ে আমার হতাশা যেমন আছে তেমনি অন্য কয়েকজনকে নিয়ে আমার গর্বও হয় যারা কিনা নিজেদের সবটুকু দিয়ে খেলতে চেষ্টা করে এবং এঁরা কখনও হারতে পারে না।”

     

     

    তাঁর কাজের সাথে ‘প্রতারণা’ করা হয়েছে- দলের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে মরিনহোর এমন অভিযোগ স্রেফ রাগের মাথায় করা নয় বলেই জানাচ্ছে দ্য টাইমস। নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি বলছে, পর্তুগিজ ক্লাব এফসি পোর্তোর বিপক্ষে ঘরের মাঠের ম্যাচের আগে চেলসির একজন খেলোয়াড় দলের পরিকল্পনা প্রতিপক্ষের কাছে ফাঁস করে দিয়েছিলেন- এমন তথ্য পেয়েই মরিনহোর এই বিস্ফোরন। তবে কে সেই ‘বিশ্বাসঘাতক’ সেটা মরিনহো এখনও জানতে পারেন নি।

     

    এদিকে, গত কয়েক ঘন্টায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে মরিনহোর উত্তরসূরি খুঁজতে শুরু করে দিয়েছে চেলসি কর্তৃপক্ষ। দ্য সান-এর খবর, মৌসুম শেষে বায়ার্ন ছাড়ছেন পেপ গার্দিওলা- এমন তথ্যের ভিত্তিতে এই কাতালান কোচের সাথে ‘ব্লু’দের যোগাযোগ শুরু হয়ে গিয়েছে। অবশ্য গার্দিওলার ব্যাপারে ইতোমধ্যেই দৌড়ঝাঁপ অনেকটা এগিয়ে ফেলেছে ম্যানচেস্টারের দুই ক্লাব সিটি ও ইউনাইটেড।

     

    দৈনিক টেলিগ্রাফ বলছে স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কোচ দিয়েগো সিমিওনে আগামী মৌসুমে চেলসির প্রথম পছন্দ। আর ডাচ কোচ গাস হিডিংকের হাতে চলতি মৌসুমের বাকি সময়ের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চায় কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, হিডিংকের হাত ধরে ২০০৯ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ওঠার পাশাপাশি এফএ কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছিল চেলসি।

     

    টাইমসের খবরে বলা হচ্ছে হিডিংকের পাশাপাশি সাবেক সেভিয়া ও টটেনহ্যাম কোচ জন্দে র‍্যামোসকেও ‘তত্ত্বাবধায়ক’ ম্যানেজার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। স্থায়ী কোচ হিসেবে এই গণমাধ্যমেও চেলসির প্রথম পছন্দ হিসেবে এসেছে সিমিওনের নাম। আর আগামী মৌসুমে বুন্দেসলিগায় বায়ার্ন মিউনিখে গার্দিওলার সম্ভাব্য উত্তরসূরি কার্লো আনচেলত্তির স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ফিরে যাবার কোন ইচ্ছে নেই বলেও খবর দিচ্ছে দৈনিকটি।