ফিটনেসের সঙ্গে উইকেট আর বলের দিকেও নজর দিতে বললেন শরীফ
জাতীয় লিগে ব্লিপ টেস্ট নিয়ে বেশ হইচই চলছে। নূন্যতম ১১ পয়েন্ট ঠিক করা হয়েছে, যেটা জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের জন্যও কঠিন। সিনিয়র ক্রিকেটাররা এ নিয়ে তাই প্রকাশ্যেই নিজেদের অসন্তোষ জানিয়েছেন। আজ অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শরীফ ও আরাফাত সানির কন্ঠেও একই প্রতিধ্বনি। শরিফ অবশ্য সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, এবার জাতীয় লিগে স্পোর্টিং উইকেটও চান তারা।
ব্লিপ টেস্ট নিয়ে কদিন ধরেই একটা চাপা উদ্বেগ কাজ করছে ক্রিকেটারদের। মোহাম্মদ আশরাফুল, তুষার ইমরান, শুভাগত হোমরা সেটি প্রচারমাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন। শরীফও আজ বললেন, সারা বছর অনুশীলনের ব্যবস্থা না করে হুট করে ১১তে নম্বর নিয়ে যাওয়ায় ক্রিকেটারদের জন্য কাজটা বেশ কঠিন। আবার ফিটনেসের পাশাপাশি পারফরম্যান্সের ওপর জোর দেওয়ার জন্যও বললেন শরীফ, ‘আমি যদি শুধু ফিটনেসটাই দেখি তাহলে আমার পারফরম্যান্সটা কে দেখবে? যারা পারফরম্যান্স করছে তাদেরকেও তো কাউন্ট করতে হবে।লঙ্গার ভার্সন খেলতে হলে, আমরা যেহেতু অনেক লম্বা সময় ধরে খেলি, ৭ ঘন্টা, চার দিন খেলি। অনেক সময় দেখা যায় পাঁচ দিনও হয়ে যায় সফরের কথা ধরলে। আমরা তো বাইরের দেশের মতো ফ্লাইটে সফর করি না। আমরা বাসে যাই বা ট্রেনে যেভাবেই হোক, সবকিছু মিলিয়ে পাঁচ-ছয় দিন লেগে যায়। সেই ধরণের ফিটনেস আমাদের রাখতে হবে। আমি নিশ্চিত যে যারা এতদিন খেলছে এবং নতুন যারা আছে তাদের সবারই ফিটনেস বেশ ভালো। আমরা কিন্তু অনেক হার্ডওয়ার্কার। আমরা যারা বাঙালি এবং এশিয়ান তারা অনেক হার্ডওয়ার্কার। তবে আমাদের সেটা কাউন্ট করা হয় না সেভাবে।’
সামনের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়ার কথা জাতীয় লিগ। বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, এবার কয়েকটা উইকেট ঘাসের এবং একদম নতুন রাখার পরিকল্পনা আছে বোর্ডের। শরীফ নিজেও ঘরোয়া লিগে এখন সবচেয়ে অভিজ্ঞ, হাতছানি দিচ্ছে প্রথম পেসার হিসেবে ৪০০ উইকেটের হাতছানি। তবে শরীফ বললেন, উইকেট থেকে সাহায্য না পেলে পেসারদের এখানে ভালো করা কঠিন। তার ব্যাখ্যা, ‘আমরা আসলে সবসময় বলে আসছি যে লঙ্গার ভার্সনের ক্রিকেটে যেন উইকেটটি স্পোর্টিং করা হয়। উইকেটের চরিত্র বিবেচনা করলে আমাদের যে উচ্চতা এবং যে সাহায্য পাই এটা থেকে, এখানে কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা বলেন, ইংল্যান্ড বলেন তাদের সঙ্গে মেলালে হবে না। তাদের এনার্জি কিংবা স্ট্রেন্থ যদি বলেন, আমরা তাদের চাইতে অনেক পেছনে। আমাদের যেটা করতে হবে উইকেট থেকে সাহায্য নিতে হবে। ব্যাটসম্যানদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ হবে। যেহেতু আমাদের পেস কম, উচ্চতা কম তাই উইকেট নিয়ে আমরা এর ফায়দা নিতে পারি। এটি কিন্তু আমাদের ব্যাটসম্যানদের জন্য উপকার হবে। এটা কিন্তু আমরা অনেক দিন থেকে বলে এসেছি। কিন্তু মাঠে গেলে আসলে সেটা পাওয়া যাচ্ছে না। আরেকটি ব্যাপার বলতে হয়, জানি না বলা ঠিক হবে কিনা এরপরেও বলা উচিত। বল যদি কোয়ালিটির থাকে, সেখানে বলেরও কিছু গুরুত্ব আসবে। হয়তো বা উইকেট অনেক সময় ড্রাই থাকে। কিন্তু বলটি অনেক সময় নরম থাকে। এই কারণে বল এবং উইকেট না মিললে আসলে সেখান থেকে ভালো ফলাফল আসে না।’
এখন যে বল দিয়ে খেলা হচ্ছে সেটার গুণগত মান নিয়েও সংশয় আছে শরীফের, 'আমরা যে বল দিয়ে খেলি এসজি। আমি জানি না এটা টপ লেভেল সেটা গ্রেড ওয়ানের বল কিনা। মনে হয় হতে পারে, আবার আমরা ভালো বল নাও পেতে পারি। অনেক সময় অনেক দিনের পুরনো বল থেকে যায় সেটা দিয়ে চালিয়ে যায়। যারা প্রডিউস করছে তারাও হয়তো জানে না। না বুঝেই হয়তো দিচ্ছে। আমরা যেখানে খেলি এখানে বলটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যদি ড্রাই উইকেটে খেলি, যদি বলটা ভালো থাকে তখন অ্যাডজাস্ট করে নেয়া যায়। আপনি যদি গত কয়েক বছরের রেকর্ড দেখেন, নতুন বল যদি চার পাঁচ ওভারের মধ্যে চেঞ্জ করতে হয় তাহলে আমরা কোথায় আছি বুঝতে হবে। সেদিকেও আমাদের নজর দেয়া উচিত।’
শরীফের কথা কর্তাব্যক্তিদের কানে গেলেই হয়!