• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    দ্বিতীয়ার্ধের ফেরায় ইউনাইটেডকে জিততে দিল না আর্সেনাল

    দ্বিতীয়ার্ধের ফেরায় ইউনাইটেডকে জিততে দিল না আর্সেনাল    

     

    ওল্ড ট্রাফোর্ডের বেরসিক বৃষ্টি আর ম্যাচের ফলে দারুণ মিল। ম্যানচেস্টারে সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি থামেনি ম্যাচ শেষেও। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বা আর্সেনালও ম্যাচশেষে বড় কোনো অনুপ্রেরণার যোগান পায়নি। তবে গত সপ্তাহে ওয়েস্ট হামের কাছে ২-০ গোলে হারের পর আর্সেনালের সঙ্গে ড্রটা একেবারেও মন্দ বলা যাচ্ছে না ইউনাইটেডের জন্য। পয়েন্ট টেবিলে অবশ্য প্রভাব পড়ছে না, ইউনাইটেডের অবস্থান ৯ পয়েন্ট নিয়ে দশে আর আর্সেনাল ১২ পয়েন্ট নিয়ে চারে।

    ইউনাইটেড ম্যানেজার ওলে গানার সোলশার পুরনোদের ওপরই ভরসা রেখেছিলেন। সেই অ্যাশলি ইয়াং আরও একবার ছিলেন একাদশে, এদিন অবশ্য খেলেছেন রাইটব্যাক হিসেবে। রক্ষণের অন্যপ্রান্তে খেলেছেন আক্সেল তুয়ানজিবে। আক্রমণে মার্কস র‍্যাশফোর্ডের সঙ্গে ছিলেন জেসি লিনগার্ড, ড্যানিয়েল জেমসরা। নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সাহস হয়নি ইউনাইটেড ম্যানেজারের। পুরনোরাও শ্রী ফেরাতে পারেননি ইউনাইটেডের।

    যদিও শুরুতে আন্দ্রিয়াস পেরেরা, জেমসরা আশা জাগানিয়া দৌড়ে ভরসা যোগাচ্ছিলেন ওল্ড ট্রাফোর্ডে। ধীর-স্থির শুরুর পর গোলের প্রথম সুযোগ অবশ্য তৈরি করেছিল আর্সেনাল। সেটাও প্রথমার্ধের একেবারে শেষদিকে। ডেভিড ডি গিয়া সাকা ও মাতেও গুন্দেজির পরপর দুইটি শট দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন তখন।  

    প্রথমার্ধে দুই দল যে ধাঁচে খেলছিল তার তুলনায় গোলটি হয়েছে বেশ চোখ ধাঁধানো। ৪৫ মিনিটে আর্সেনালের একটি কর্নার থেকে দ্রুত গতিতে কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠে ম্যান ইউনাইটেড। জেমসের ক্রস ডিবক্সের ভেতর থাকা র‍্যাশফোর্ডের অনেক সামনে দিয়ে গেলেও আক্রমণ বিফলে যায়নি। ডিবক্সের সামনে বল পেয়ে যান স্কট ম্যাক টমিনে। বার্নড লেনো ছিলেন একপাশে। ম্যাক টমিনে অন্যপাশের টপ কর্নারে বল জড়ান বক্সের মাথা থেকে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে স্কটিশ মিডফিল্ডারের প্রথম গোলে বিরতির আগে বড় স্বস্তি পায় সোলশারের দল।

    ওই গোলটি দ্বিতীয়ার্ধে বড় অনুপ্রেরণা হওয়ার ছিল ইউনাইটেডের। হয়নি। আর্সেনাল শুরু থেকেই দারুণ সব সুযোগ তৈরি করতে থাকে। লুকাস তোরেয়েরা ৫১ মিনিটে ভালো সুযোগ হাতছাড়া করেন। তার জায়গায় এরপর নামেন দানি সেবায়োস। এরপর গোল পেয়ে যায় আর্সেনালও। তরুণ তুয়ানজিবে ভুল করেছিলেন, নিজের রক্ষণ থেকে পাস বাড়িয়েছিলেন সাকাকে। সাকা বাড়িয়েছিলেন অবামেয়াংকে। তিনি সোজা গিয়ে ডি গিয়ার মাথার ওপর দিয়ে তুলে গোল করার পর শুনতে পান রেফারি দিয়েছেন অফসাইডের বাঁশি। উদযাপনটা তাই করেছিলেন তখন ভিক্টর লিন্ডেলফ।

    ইউনাইটেড ডিফেন্ডারের উদযাপন স্থায়ী হয়নি। ভিএআরের সাহায্যে অফসাইড বাতিল করে গোল বহাল রাখেন রেফারি। অবামেয়াং তখন চুপ ছিলেন, এরপর শুরু করলেন উদযাপন। ক্রিকেটে এই দৃশ্য নিয়মিত দেখেছেন আপনি, ফুটবলে তো এসব নতুনই। এই নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে সাত ম্যাচে অবামেয়াংয়ের গোল দাঁড়াল ৭টি। তাতে ডেনিস বার্গক্যাম্পের পাশে নাম বসে গেছে গ্যাবন স্ট্রাইকারের। ১৯৯৭-৯৮ ডাভ কিংবদন্তীও একইরকম রেকর্ড গড়েছিলেন। এতো বছর পর সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটালেন অবামেয়াং। 

    সমতায় ফেরার পরের মিনিটে আর্সেনাল ম্যাচটা ছিনিয়েও নিতে পারত। সাকার শট এবার ব্লক করে দলকে বাঁচান লিন্ডেলফ। এরপর বাকি সময় অবশ্য ইউনাইটেডও ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। ৬৫ মিনিটে পগবার বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট অল্পের জন্য চলে যায় বারপোস্টের পাশ দিয়ে। মিনিট পাঁচেক পর সেই ম্যাক টমিনে মিস করেছেন সহজ এক সুযোগ। গোলের ৫ গজ দূর থেকে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি হেড। শেষদিকে র‍্যাশফোর্ডের ফ্রি-কিক ঠেকিয়ে লেনোও আর পয়েন্ট হাতছাড়া হতে দেননি আর্সেনালের।

    ১৩ বছর ধরে ওল্ড ট্রাফোর্ডে জয় না পাওয়া আর্সেনালের অপেক্ষা তাই আরও বাড়ছে। কিন্তু ইউনাইটেড সমর্থকেরা বাড়ি ফিরেছেন মন খারাপ করা এক রেকর্ড সঙ্গী করে। ১৯৮৯-৯০ সালের পর সাত ম্যাচের হিসেবে সবচেয়ে বাজে শুরু করেছে ইউনাইটেড। এমনও ঘনঘর বরিষায় ইউনাইটেড সমর্থকেরা আর কারেই বা বলবেন দুঃখের কথা!