মেসির নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার আপিল খারিজ করে দিল কনমিবল
২০১৯ কোপা আমেরিকার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে চিলির বিপক্ষে বিতর্কিতভাবে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পর দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল ফেডারেশন কনমিবলকে রীতিমত ধুয়ে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি। কনমিবলকে 'দুর্নীতিগ্রস্ত' বলায় মেসিকে তিন মাস নিষিদ্ধ এবং ৪৫ হাজার ইউরো জরিমানা করেছিল তারা। কনমিবলের রায়ের সাতদিনের মধ্যেই আপিলও করেছিল আর্জেন্টাইন এফএ। কিন্তু কনমিবল জানিয়েছে; আর্জেন্টিনার আপিল খারিজ করে দিয়েছে তারা। নভেম্বরের ৩ তারিখ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার কোনও ম্যাচেই অংশগ্রহণ করতে পারবেন না মেসি।
চিলির বিপক্ষে মেসিকে লাল কার্ড দেখালেও ২-১ গোলে জিতে তৃতীয় স্থান নিশ্চিত করেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু ম্যাচের পর আর্জেন্টিনা দল তৃতীয় হওয়ার মেডেল গ্রহণ করলেও তাদের মাঝে ছিলেন না মেসি। ম্যাচশেষে মিক্সডজোনে কনমিবলকে রীতিমত ধুয়ে দিয়েছিলেন তিনি। মেসির রাগটা শুধু লাল কার্ড নয়; ছিল ব্রাজিলের বিপক্ষে সেমিফাইনাল নিয়েও। সেমিতে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বেশকিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছিলেন মেসি। কোপার সবকিছু যেন ব্রাজিলকে শিরোপা জেতানোর জন্যই প্রস্তুত; এমন অভিযোগও এনেছিলেন তিনি।
চিলির বিপক্ষে ম্যাচের পর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক, "আমি যা বলেছিলাম, তাই হয়েছে। আমি মঞ্চে যাইনি কারণ অসম্মান আর দুর্নীতির অংশ আমি হতে চাই না। আমাদের আরও প্রাপ্য ছিল, কিন্তু তারা আমাদের ফাইনালে যেতে দেয়নি। দুর্নীতি আর রেফারিদের বাজে সিদ্ধান্ত লোকজনকে খেলা উপভোগ করতে দেয়নি। ফুটবলের মজাটা কিছুটা হলেও নষ্ট হয়েছে তাতে। আপনাকে সত্যিটা বলতেই হবে। আমাকে কেন লাল কার্ড দেখানো হয়েছে? আমার মনে হয় আগের ম্যাচে আমার কথার জন্যই আমাকে লাল কার্ড দেখানো হলো আজকে।"
মেসির মন্তব্যের পর অবশ্য প্রত্যুত্তরও দিয়েছিল কনমিবল। টুইটারে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছিল, "ফুটবলে আপনি কখনো জিতবেন, কখনো হারবেন। ম্যাচের যেকোনো ফলাফল সম্মানের সাথে গ্রহণ করাটাই ফেয়ার প্লের মূল কথা। রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়েও একই মন্তব্য আমাদের। তাঁরাও তো মানুষ, তাঁরা সবসময় সঠিক হতে পারেন না। এই টুর্নামেন্টে ১২টি দেশ অংশ নিয়েছে, সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তাই এরকম অভিযোগ অগ্রহণযোগ্য। এসব অভিযোগ কোপা আমেরিকার ব্যাপারে ভুল তথ্য উপস্থাপন করছে, টুর্নামেন্টের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।"
মেসির ওসব মন্তব্য কোপার প্রতি অসম্মানজনক, বলছে কনমিবল, ‘যেখানে ২০১৬ সাল থেকে কনমিবলের হাজারো কর্মকর্তা ও ফুটবলার সবাই মিলে লাতিন আমেরিকার ফুটবলের উন্নতির জন্য কাজ করছে, সেখানে কোপা নিয়ে এমন মন্তব্য অসম্মানজনক।" বিবৃতির প্রায় মাসখানেক পর মেসির শাস্তির ঘোষণা দেয় কনমিবল। অবশ্য মেসির জরিমানার অর্থ তার নিজের পকেট থেকে যাচ্ছে না, কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার প্রাপ্র্য অংশ থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে সেই ৪৫ হাজার ইউরো।
অবশ্য আপিল খারিজ করলেও মেসিকে ছাড়া খুব একটা ভুগতে হবে না 'আলবিসেলেস্তে'দের। নিষেধাজ্ঞার শুরু (৩ আগস্ট) থেকে শেষ পর্যন্ত (৩ নভেম্বর) কোনও প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ নেই তাদের, আছে দুটি প্রীতি ম্যাচ। ৯ অক্টোবর জার্মানি এবং ১৩ অক্টোবর ইকুয়েডরের বিপক্ষে অধিনায়ককে পাচ্ছে না আর্জেন্টিনা।