দল নিয়ে গর্বিত ডে ভারতের বিপক্ষেও খেলতে চান একই ধাঁচে
ঘরের মাঠে শক্তিশালী কাতারকে প্রায় আটকে দিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে। তবে বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত। এই ম্যাচটাকে তিনি বলছেন তার অধীনে বাংলাদেশের সেরা পারফর্ম্যান্স। যে উন্নতি দল করেছে সেখান থেকে আর নামতে চান না তিনি। বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের পরের ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে। সে ম্যাচেও দলের কাছ থেকে একই ধরনের পারফরম্যান্সের আশা করছেন ডে।
স্কোরলাইন অন্যকথা বললেও বাংলাদেশ কোচের কথায় যুক্তি আছে। কাতারের বিপক্ষে অন্তত ৫টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। এর ভেতর অন্তত তিনবার গোললাইন থেকে ক্লিয়ার হয়েছে বাংলাদেশের গোলের প্রচেষ্টা। দল হিসেবে ব্রিটিশ কোচ যে উন্নতি করেছেন সেই দাবিটা তো তিনি এমন ম্যাচের পর করবেই, “খেলোয়াড়দের নিয়ে আমি গর্বিত। এশিয়ার চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে আমরা লড়াই করেছি। দল হিসেবে আমরা কতোদূর এসেছি সেটাই দেখিয়েছে এই ম্যাচ।”- ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ডে।
“বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা দলের সেরা পারফরম্যান্স। ৯০ মিনিট ধরে যেভাবে আমরা ওদের আটকে রেখেছিলাম, ফলের কথা বাদ এটা সেরা পারফরম্যান্স। একাদশে অনুর্ধ্ব-২৩ ফুটবলার ছিল ৬ জন। আমাদের যে ভালো খেলোয়াড় উঠে আসছে, এখন আমাদের এটা ধরে রাখতে হবে।”
বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব জেমি ডে নিয়েছিলেন ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে। এরপর থেকে ১৪ ম্যাচে তার জয় ৭টি। এই নিয়ে হারলেন ষষ্ঠবারের মতো। কাতারের কাছে হারের ধরনটাই প্রেরণার কারণ ডের দলের। দলের উন্নতির এই গ্রাফটা এখন ধরে রাখতে চান ডে, “ভারতের বিপক্ষে আমি খেলোয়াড়দের বলেছি এই পারফরম্যান্সটা চালু রাখতে হবে। আজকে যেভাবে খেলেছে দল সেখান থেকে নামা যাবে না। ভারতের বিপক্ষেও এমন খেলতে চাই।”
দুপুরের পর থেকে শুরু হওয়ার বৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ছিল কাদা মাখা। বাংলাদেশের দারুণ পারফরম্যান্সের পেছনে এর কোনো হাত নেই ডের মতে। তিনি বলছেন দুই দলই তো একই মাঠে খেলেছে। জয়ের জন্য কাতারকে কৃতিত্বও দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ।
দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের আক্রমণ গুলো ছিল আরও উজ্জ্বল। দারুণ কিছু আক্রমণ সাজিয়ে কাতারকে নিজেদের অর্ধে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিল তার দল, ফল নিয়ে হতাশা থাকলেও দল যেভাবে খেলেছে তাতে বিন্দুমাত্র আফসোস নেই ডের “আমার মনে হয় আমরা ম্যাচের সেরা সুযোগগুলো পেয়েছিলাম। দ্বিতীয়ার্ধে আমরাই সেরা দল ছিলাম।”
“আমি হতাশ তবে যেভাবে খেলেছি আমরা সেটা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।”
অক্টোবরের ১৫ তারিখ ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। কলকাতার যুব ভারতী সেটডিয়ামে হবে ম্যাচটি। ভারতের বিপক্ষে খেলতে আগামীকাল ১১ অক্টোবর ভারতের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করবে ডের দল।
তিন পয়েন্ট পেয়েই খুশি কাতার কোচ
বাংলাদেশে হয়ত এতো কঠিন ম্যাচ আশা করেননি কাতার কোচ ফেলিক্স সানচেজ। ভারতের বিপক্ষে ড্রয়ের পর বাংলাদেশের বিপক্ষেও ধুঁকতে হয়েছে কাতারকে। ম্যাচ শেষে অবশ্য কাতার কোচ বলেছেন তিন পয়েন্ট পেয়েই খুশি তিনি, "বাংলাদেশ বেশ গোছালো দল। তাদের হারাতে যে আমাদের কষ্ট হবে জানাই ছিল। আমরা তিন পয়েন্ট পাওয়ায় খুশি। দলের কেউ যে ইনজুরিতে পড়েনি সেটাও স্বস্তির।"
ইনজুরির কথা কাতার কোচ আলাদা করে বলেছেন মাঠের অবস্থার কারণে। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বেগ পেতে হয়েছে দুই দলের ফুটবলারদেরই, "মাঠে ঘাস বেশ বড়, গর্তও আছে কয়েক জায়গায়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে খেলে আমরা অভ্যস্ত নই। তবে এরপরও যে ছেলেরা ফল বের করে এনেছে এতেই আমি খুশি।"- ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মলনে জানিয়েছেন সানচেজ।