তবুও যথেষ্ট নয়!
ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ইনিংসগুলোর তালিকায় ওপরের দিকেই থাকবে এসব ইনিংস। তবে এমন ইনিংস খেলেও শেষ পর্যন্ত এ ব্যাটসম্যানদের থাকতে হয়েছে পরাজিতদের দলেই! রোহিত শর্মা যুক্ত হলেন আজ সে তালিকায়...
চার্লস কভেন্ট্রি, ১৯৪*, বিপক্ষ বাংলাদেশ, বুলাওয়ে, ২০০৯
সাঈদ আনোয়ারের ১২ বছরের পুরোনো রেকর্ডটা এদিন স্পর্শ করেছিলেন চার্লস কভেন্ট্রি। ওয়ানডের সর্বোচ্চ ইনিংসের তালিকায় আনোয়ারের ওপরেই অবশ্য চলে গিয়েছিল কভেন্ট্রির নাম, চশমা পরা জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান যে ছিলেন অপরাজিত! ১৯৪ রানের ইনিংসে ১৬টি চার আর ৭টি ছয় মেরেছিলেন কভেন্ট্রি, স্ট্রাইক রেট ছিল ১২৪.৩৫। জিম্বাবুয়ের ৩১২ রানের ইনিংসে অবশ্য ফিফটিও করতে পারেননি আর কেউ।
বাংলাদেশের ইনিংসেও তামিম ইকবাল ছাড়া ফিফটি করতে পারেননি আর কেউ। তামিম করেছিলেন কভেন্ট্রির চেয়ে ৪০ রান কম (১৫৪), আউট হয়েছিলেন, চার মেরেছিলেন কভেন্ট্রির অর্ধেক (৭টি), ছয় মেরেছিলেন ৬টি, কভেন্ট্রির চেয়ে একটি কম। তবুও তামিমের ইনিংসে ভর করেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল জিম্বাবুয়েকে; জুনায়েদ, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহর ক্যামিও সঙ্গে নিয়ে! রেকর্ড করেও তাই পরাজিতদের দলে ছিলেন কভেন্ট্রি, ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও ভাগাভাগি করতে হয়েছিল তামিমের সঙ্গে!
ম্যাথু হেইডেন, ১৮১, বিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, হ্যামিল্টন ২০০৬-০৭
ওয়ানডেতে নিজের সর্বোচ্চ ইনিংসটা খেলেছিলেন একসময় ব্রায়ান লারার ৩৭৫ ছাপিয়ে ৩৮০ করা ম্যাথু হেইডেন, এদিন। ম্যাচসেরাও হয়েছিলেন। তবে বিরস-বদনেই নিতে হয়েছিল তা, নিউজিল্যান্ডের কাছে যে অস্ট্রেলিয়া হেরেছিল ১ উইকেটে! হেইডেনের ১৮১ আর ওয়াটসনের ফিফটি, সঙ্গে হ্যাডিন, হজ, হাসি, হোয়াইট, ভোজেসের ক্যামিও, অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহটাও ছিল বেশ বড়ই, ৩৪৬।
নিউজিল্যান্ড ৪১ রানে ৪ উইকেট হারিয়েও বসেছিল। তবে প্রথমে পিটার ফুলটনের সঙ্গে ৭৫, পরে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের সঙ্গে ক্রেইগ ম্যাকমিলানের ১৬৫ রানের জুটি সঠিক পথে ফিরিয়ে এনেছিল কিউইদের। ম্যাকমিলান ১১৭ করে আউট হলেও ছিলেন ম্যাককালাম। ৮৬ রানে অপরাজিত থেকে যখন মাঠ ছাড়েন, তখনও ইনিংসে ৩ বল বাকী, অস্ট্রেলিয়াকে হারানো হয়েও গেছে! সঙ্গে দেয়া হয়েছে একরাশ হতাশা, ম্যাথু হেইডেনকে!
শচীন টেন্ডুলকার, ১৭৫, বিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, হায়দ্রাবাদ, ২০০৯-১০
শন মার্শ ১১২, শেন ওয়াটসন ৯৩, রিকি পন্টিংয় ৪৫, ক্যামেরন হোয়াইট ৫৭, মাইক হাসি ৩১, অস্ট্রেলিয়া ইনিংসে ব্যাট করেছিলেন এ পাঁচজনই। প্রত্যেকের স্ট্রাইক রেটই ছিল একশো এর বেশি, অস্ট্রেলিয়া করেছিল ঠিক ৩৫০।
শেওয়াগকে নিয়ে শুরুটা ভালোই করেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার, ৮.৫ ওভারেই তুলেছিলেন ৬৬ রান। তবে এরপর শুধু অপর প্রান্তে সতীর্থদের যাওয়া আসা দেখেছেন, সুরেশ রায়না (৫৭) ও রবীন্দ্র জাদেজা (২৩) ছাড়া দুই অঙ্কই ছুঁতে পারেননি আর কেউ! ৭ম ব্যাটসম্যান হিসেবে শচীন যখন আউট হন, ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৭ বলে ১৮ রান। সেই ১৮ রানই অনতিক্রম্য হয়ে গেল, ভারত হারলো ৩ রানে!
ম্যাচসেরা হলেন শচীনই, শুধু নিজের ইনিংস নিয়েই হয়তো তৃপ্তি ছিল সেদিন, সতীর্থরা যে শুধুই হতাশ করেছিলেন তাঁকে!
রোহিত শর্মা, ১৭১, বিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ২০১৬
ভিভ রিচার্ডস ১৯৭৯ সালে এমসিজিতে ১৩০ বলে করেছিলেন অপরাজিত ১৫৩। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এটিই ছিল সর্বোচ্চ ইনিংস, আজকের আগে। রোহিত শর্মা সে রেকর্ড ভাঙ্গলেন, করলেন ১৭১। তবে ৩৬ বছর আগে ভিভের ইনিংসের স্ট্রাইক রেট ১১৭.৬৯ কে ছাড়িয়ে যেতে পারলেন না। পার্থের ইনিংসে রোহিত খেললেন ১৬৩ বল, স্ট্রাইক রেট দাঁড়ালো ১০৪.৯০। সঙ্গে বিরাট কোহলির ৯১, ভারতের সংগ্রহ ওয়াকার ‘ফ্ল্যাট’ উইকেটে ৩০৯। যথেষ্ট হলো না শেষ পর্যন্ত।
জর্জ বেইলি করলেন ১১২, স্টিভেন স্মিথ ১৪৯। অস্ট্রেলিয়া জিতলো চার বল বাকি থাকতে, ৫ উইকেটে। ‘সান্ত্বনাস্বরূপ’ ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও পেলেন না রোহিত, তা গেল স্মিথের দখলেই!