• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    এবার ১৫ মিনিটে লন্ডভন্ড করে গেলেন লেভানডফস্কি

    এবার ১৫ মিনিটে লন্ডভন্ড করে গেলেন লেভানডফস্কি    

    সবাইকে ছাড়িয়ে লেভানডফস্কি
    রবার্ট লেভানডফস্কি যেবার প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগে চার গোল করেছিলেন, তার পর দিন বাংলাদেশী এক পত্রিকায় তাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল লন্ডভন্ডস্কি নামে। খেলার পাতার বিখ্যাত সব শিরোনামে ঢুকে গেছে সেটা। ছয় বছর পর আবার একই কাজ করেছেন লেভানডস্কি। গুণে গুণে চার গোল দিয়েছেন প্রতিপক্ষকে। এবারের ম্যাচের গুরুত্ব অবশ্য প্রথমবারের মতো অতোখানি নয়, তবে একগাদা রেকর্ড এবার নিজের করে নিয়েছেন তিনি। 

    রেড স্টার বেলগ্রেডের জালে লেভানডফস্কি বল জড়িয়েছেন মোট পাঁচবার। এর ভেতর প্রথমবার ভিএআর সেটা বাতিল করেছিল। তাই গোল একটি কমেছে রবার্ট লেভানডফস্কির। আপাতত যে হারে তিনি গোল করে যাচ্ছেন তাতে এক, দুই গোল বাতিল হলে তার তেমন ক্ষতি হওয়ার কথা নয়!

    লিওন গোরেতস্কা প্রথমার্ধের গোলে এগিয়ে ছিল বায়ার্ন। ৫২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে নিজের প্রথম গোল করেন লেভানডফস্কি, ম্যাচের ঘন্টাখানেক সময়ে করেন দ্বিতীয় গোল। ৬৪ মিনিটে হ্যাটট্রিকের চার মিনিট পর শেষ গোলটি করেন ৩১ বছর বয়সী। শেষ গোলটি করেছেন করেন্টিন টোলিসো, ৬-০ তেই জিতেছে বায়ার্ন।

     


    চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে দুইবার ম্যাচে চার গোলের করার কীর্তি গড়েছেন লেভানডফস্কি। আরেক জন লিওনেল মেসি। লেভানডফস্কির এবারের রেকর্ডটি অবশ্য আরও আলাদা, ১৪ মিনিটে ৩১ সেকেন্ডের ব্যবধানে চারটি গোল করেছেন তিনি। এতো দ্রুত চার গোল করার রেকর্ড লেভানডফস্কির পাশে নেই অন্য কেউ।

    ২০১৩ সালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে প্রথমবার এক ম্যাচে চার গোল করেছিলেন লেভানডফস্কি। সেটা করেছিলেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে। ৬ বছর পর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটালেন এবার। তাতে তার চ্যাম্পিয়নস লিগ গোল দাঁড়িয়েছে ৪৬টি, তিনি হয়ে গেছেন বায়ার্ন মিউনিখের ইতিহাসে চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ডর্টমুন্ডের এই রেকর্ডটিও এখনও তার দখলে।

    এই নিয়ে ৫ ম্যাচে লেভানডফস্কি এবার ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় গোল করলেন ১০টি। বুন্দেসলিগায় এরই মধ্যে ১৬ গোল করা হয়ে গেছে তার। পোকালেও গোল করেছেন একটি। সব মিলিয়ে তার গোলের সংখ্যা ২৭! আর ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে সবমিলিয়ে ২১ ম্যাচে গোলের সংখ্যা ৩১। এ বছরের হিসাবে সেটা ৫১ ম্যাচে ৫১ গোল! অথচ এখনও ডিসেম্বরও শুরু হয়নি। লেভানডফস্কির অতিমানবীয় এই গোল করার ক্ষমতা তো মেসি-রোনালদোদেরও ইর্ষায় ফেলে দেবে! ৩১ বছর বয়সী লেভানডফস্কিরও তো থামা-থামির নাম নেই।

    টটেনহামের প্রত্যাবর্তন, মরিনহোর সংক্ষিপ্ত ও পরে দীর্ঘ উদযাপন
    টটেনহাম হটস্পার স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো প্রবেশের সময় খুব বেশি আলো কাড়তে চাননি হোসে মরিনহো। এর পর শুরু হলো ম্যাচ। শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতো হলো মরিনহোর। নিজের ক্যারিয়ারে একমাত্র পোর্তোর দায়িত্বে থাকার সময় প্রথমার্ধে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল তার দল। টটেনহামেও ফিরে আসলো ২০০২ সালের সেই ভূত। ২০ মিনিটে অলিম্পিয়াকোস দুই গোল করে লিড নিয়ে নিয়েছিল টটেনহামের মাঠে।


    অলিম্পিয়াকোসের একটি ভুলেই প্রথমার্ধ শেষের ঠিক আগে ডেলে আলি এক গোল করে সুর তুলে দিয়েছিলেন অবশ্য টটেনহামের। বিরতির পর ৫ মিনিটের ভেতরই স্কোরলাইন ২-২ বানিয়ে ফেলেন হ্যারি কেইন। মরিনহো তখন ডাগ আউটে বল বয়কে জড়িয়ে ধরেছেন আবেগে। বল বয়ের দেওয়া বল থেকেই কুইক থ্রো-ইন নিয়ে সার্জ অরিয়ের গোল পেতে সাহায্য করেছিলেন কেইনকে। এরপর ম্যাচ শেষের ১৭ মিনিট বাকি থাকতে সেই অরিয়েরই তৃতীয় গোলটি করলে মরিনহো তখন পুরোপুরি উদযাপনে মেতেছেন তার নতুন ঘরে।

    শেষে হ্যারি কেইন করেছেন আরও এক গোল। তাতে চ্যাম্পিয়নস লিগে ২০ গোলের কোটা পূরণ হয়েছে তার। আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরোর দ্রুততম সময়ে ২০ গোলের রেকর্ড ভেঙেছেন কেইন। মাত্র ২৪ ম্যাচেই এই মাইলফল ছুঁয়েছেন টটেনহাম অধিনায়ক।

    আবারও ড্র করলো সিটি
    শাখতার দোনেস্তেকের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করার পর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা নিশ্চিত হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটির। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ড্র করায় সিটির সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে এবার।


    চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচডে ৫ এর ফলাফল


    শাখতার আগের শেষ তিন দেখায় সিটির কাছে ১২ গোল হজম করে গোল দিতে পারেনি একটিও। ইতিহাদে সেই শাখতারের রক্ষণ ভাঙতেই সিটিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৫৫ মিনিট পর্যন্ত। ইলকে গুন্দোয়ানের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। কিন্তু ৬৯ মিনিটেই সেই গোল শোধ করে ফেলেন বদলি মানর সলোমন।

    সার্জিও আগুয়েরো ছিলেন না ইনজুরির কারণে। তার জায়গায় নামা গ্যাব্রিয়েল হেসুস প্রথমার্ধে একবারও গোলে শট নিতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধে একবার দুর্বল হেড করেছিলেন, সেটাও গোলরক্ষক সহজেই লুফে নিয়েছেন। পরে অবশ্য হেসুস সতীর্থদের কিছু সুযোগ তৈরি করে দিলেও সেগুলো কাজে লাগাতে পারেনি সিটি। আরও অন্তত তিন ম্যাচ সিটিকে খেলতে হবে আগুয়েরোকে ছাড়াই। আপাত গার্দিওলার কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ থাকারই কথা।

    এ কেমন উদযাপন!
    অদ্ভুত এক রেকর্ড গড়ে ফেলেছে ক্লাব ব্রুজ। এক গোল উদযাপন করতে গিয়ে লাল কার্ড দেখেছেন দুইজন। গ্যালাতাসারের বিপক্ষে যোগ করা সময়ের গোলে ১-১ গোলে ড্র করেছে তারা। তাতে ইউরোপা লিগে যাওয়ার তৃতীয় স্থানের পথে গ্যালাতাসারের চেয়ে এক পয়েন্ট এগিয়েছে বেলজিয়ান ক্লাবটি। শেষ ম্যাচ তাদের রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে। আর গ্যালাতাসেরর ম্যাচ পিএসজির বিপক্ষে।

    গ্যালাতাসারের বিপক্ষে সমতাসূচক গোলের পর ক্রেপিন দিয়াত্তা জার্সি খুলে ফেলে উন্মত্ত উদযাপনে মেতেছিলেন। কিন্তু ভুলে গিয়েছিলেন আগেই একটি হলুদ কার্ড দেখা ছিল তার। আর সতীর্থ ক্লিন্টন মাতা ওই গোলের উদযাপন করতে গিয়ে লাথি মেরেছিলেন কর্নার ফ্ল্যাগে। তাতে ভেঙে গেছে ফ্ল্যাগের স্ট্যান্ড। তিনিও আগেই থেকেই হলুদ কার্ড দেখেছিলেন। গোলের উদযাপনের রেশ কাটতে না কাটতেই তাই দুইজনকে আরও একবার করে হলুদ কার্ড দেখিয়ে রেফারি মাঠ ছাড়া করেছেন। তাতে যোগ করা সময়ে একই দলের দুইজন খেলোয়াড়ের লাল কার্ড দেখার নতুন রেকর্ডটাও হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের।