কিক অফের আগে : অপ্রতিরোধ্য লিভারপুল, সিমিওনের ভরসা ওয়ান্ডা
কবে, কখন
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ-লিভারপুল
চ্যাম্পিয়ুস লিগ, দ্বিতীয় রাউন্ড, প্রথম লেগ
ওয়ান্ডা মেট্রপলিটানো
১৯ ফেব্রুয়ারি, রাত ২.০০
আট মাস আগে এই মাঠে টটেনহাম হটস্পারকে হারিয়ে ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল লিভারপুল। এর পর থেকেই যেন আরও অদম্য তারা। বড়সড় নাটক না হলে, ৩০ বছরের লিগ শিরোপাখরাও ঘুচছে লিভারপুলের। আপাতত লিভারপুলকে ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল বললেও দ্বিমত করার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা ধরে রাখতে পারলে ইউর্গেন ক্লপের দল এবার অমরত্বের পথে যাত্রা শুরু করবে।
ওয়ান্ডা মেট্রপোলিটানোতে নতুন করে অনুপ্রেরণা খুঁজতে যেতে হচ্ছে না তাই লিভারপুলকে। সুখস্মৃতিটাই আরেকবার চোখের সামনে ভাসবে হয়ত অলরেডদের, এই যা!
অবশ্য এই ওয়ান্ডায় পুরো মাঠভরা দর্শক এবার লিভারপুলের প্রতিপক্ষ। ডাগআউটে ক্লপের প্রতিপক্ষ আরেক আরেকজন আর্জেন্টাইনই, তবে তিনি ডিয়েগো সিমিওনে। ওয়ান্ডার ভরা গ্যালারি সঙ্গী করে যিনি তাতিয়ে তুলতে পারেন পুরো দলকে। ‘এল চলো’ তখন হয়ে যান ওয়ান্ডার ঈশ্বর। আর ওই অ্যাটলেটিকো তখন হয়ে যায় ফুটবলের বিস্ময়।
দ্বিতীয় রাউন্ডে লিভারপুলের জন্য সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ হতে পারত আসলে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদই। তবে অ্যাটলেটিকোর মুখোমুখি দাঁড়ানোর জন্য এর চেয়ে ভালো সময়ও বোধ হয় আর হয় না। ২০১১ সালে পেছনে হাঁটতে থাকা অ্যাটলেটিকোর হাল ধরে সিমিওনে ইতিহাসই বদলে দিয়েছেন। নিজেও ঢুকে গেছেন ইতিহাসে। কিন্তু যে দল নিয়ে গৌরবগাথা লিখেছিলেন তিনি, সে দলের অনেকেই চলতি মৌসুমের আগে ক্লাব ছেড়ে গেছেন। নতুন নিয়ে পথচলা শুরু হয়েছে সিমিওনের। যে পথটা মোটেই মসৃণ নয়।
এই মৌসুমে লিগে এখন পর্যন্ত মাত্র ১০টি জয় পেয়েছে অ্যাটলেটিকো। লিভারপুলের বিপক্ষে খেলার আগে শেষ ৭ ম্যাচ জয় মাত্র ১টি। আর ২০২০ এ সব প্রতিযোগিতায় সিমিওনে জয় পেয়েছেন দুইবার। সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না তার।
উলটোচিত্র লিভারপুলে। সাফল্য মাটিতে লুটাচ্ছে ক্লপের পায়ে। লিগে শীর্ষস্থানে এখন ২৫ পয়েন্টের লুড তাদের। এই মৌসুমে মাত্র একবার হেরেছে লিভারপুল। তাও চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম ম্যাচে, নাপোলির বিপক্ষে। সব প্রতিযোগিতায় শেষ ৪ ম্যাচে লিভারপুল গোলও হজম করেনি কোনো। এই লিভারপুলকে হারাতে হলে অ্যাটলেটিকোকে তাই মৌসুমে নিজেদের সেরা খেলাটাই দিতে হবে।
আর সিমিওনেও নিশ্চয়ই জেনে গেছেন যা করার তাকে এখানেই করে ফেলতে হবে। আসল কাজ অ্যানফিল্ডের জন্য ফেলে রাখতে চায় কে? ওয়ান্ডায় একটা ভরসাও আছে সিমিওনের। চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ১৩ অ্যাওয়ে ম্যাচে মাত্র ৭টিতে জিতেছে লিভারপুল। আর ঘরের মাঠে ১২বার ইংলিশ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলে অ্যাটলেটিকো হেরেছে মাত্র একবার। ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগাতে না পারলে অ্যানফিল্ডে অ্যাটলেটিকোর সম্ভাবনাটাই কমই।
হেড টু হেড
দুই ক্লাব চ্যাম্পিয়নস লিগে সবশেষ খেলেছে ২০০৮-০৯ মৌসুমে। গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচই ড্র হয়েছিল ১-১ গোলে। সবমিলিয়ে ৪ দেখায় বাকি দুই ম্যাচে একটি করে জয় দুইদলের।
দলের খবর
ক্লপ নিজের সেরা দলটাই পাচ্ছেন। একমাত্র জের্দান শাকিরিকে নিয়ে কিছুটা শঙ্কা আছে। অবশ্য ক্লপ তার দরকারটাই অনুভব করতে চাইবেন না। সিমিওনে এই ম্যাচের জন্য দলে পাচ্ছেন না কিয়েরান ট্রিপিয়েরকে। চোটের কারণে ছিটকে গেছেন ইংলিশ রাইটব্যাক। ক্লাবের রেকর্ড সাইনিং হোয়াও ফেলিক্সের খেলা নিয়েও আছে সংশয়। তবে ডিয়েগো কস্তা ইনজুরি থেকে ফিরেছেন। অবশ্য চ্যাম্পিয়নস লিগে এই মৌসুমে এখনও গোলের খাতা খোলা হয়নি স্প্যানিশ স্ট্রাইকারের। শীতকালীন দলবদলের মৌসুমে দলে ভেড়ানো ইয়ানিক কারাস্কোকেও এই ম্যাচে পাচ্ছেন সিমিনে।
সম্ভাব্য একাদশ
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ
অবলাক, আরিয়াস, সাভিচ, হিমেনেজ, লোডই, ভিতোলো, কোকে, থমাস, সল, মোরাটা, কোরেয়া
লিভারপুল
অ্যালিসন, আর্নল্ড, গোমেজ, ভ্যান ডাইক, রবার্টসন, হেন্ডেরসন, ফাবিনহো, ওয়াইনাল্ডালাম, সালাহ, ফিরমিনো, মানে
প্রেডিকশন
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ২-১ লিভারপুল