• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    চেলসিকে দুঃস্বপ্নের রাত উপহার দিল বায়ার্ন মিউনিখ

    চেলসিকে দুঃস্বপ্নের রাত উপহার দিল বায়ার্ন মিউনিখ    

    ফুলটাইম
    চেলসি ০ - ৩ বায়ার্ন মিউনিখ


    স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের রাতটি ভুলে যেতে চাইবে চেলসির সমর্থকেরা। পুরো ৯০ মিনিট আক্ষরিক অর্থে কোনও কিছুই যে পক্ষে যায়নি তাদের। দুর্দান্ত বায়ার্নের সামনে দাঁড়াতেই পারল না ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের শিষ্যরা। প্রথমার্ধে উইলি কাবায়েরোর বীরত্বে বায়ার্নকে আটকে রাখতে পারলেও দ্বিতীয়ার্ধে ৩ গোল খেয়ে টাই থেকে একরকম ছিটকে গেছে স্বাগতিকরা।

    সার্জ গেনাব্রি সবশেষ লন্ডন সফরে এক ম্যাচে করেছিলেন ৪ গোল। এবার করলেন দুইটি। সঙ্গে রবার্ট লেভানডভস্কির ১ গোল যোগ করে এর্লিং ব্রুট হালান্ডকে ঠেলে আবারও সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনটা নিজের করে নিয়েছেন। (৭ ম্যাচে ১১ গোল)।  এর পর ৮৩ মিনিটে চেলসির দুঃস্বপ্নের রাতে লাল কার্ড দেখে হতাশা আরও বাড়িয়েছেন মার্কোস আলনসো। রাতটি মনে রাখার মতো তাই কোনও কারণ খুঁজে পাওয়ার কথা নয় চেলসি সমর্থকদের।

    লেভানডভস্কিকে নিয়ে ম্যাচের আগে থেকেই ভয় ছিল চেলসির। ‘ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে’ থাকা এই স্ট্রাইকারকে সামলাতেই আজ হিমশিম খেয়েছে তারা। সাধারণত গোল বানিয়ে দেওয়ার চেয়ে করার দিকেই স্বাভাবিকভাবে বেশি মনোযোগ থাকে তার। তবে চেলসিকে পেয়ে একেবারে জাত প্লেমেকার বনে গেলেন তিনি। গেনাব্রির গোল দুইটিও তারই বানিয়ে দেওয়া।


    ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের তরুণ চেলসির বিপক্ষে ফেবারিট হিসেবেই ম্যাচ শুরু করেছিল বায়ার্ন। ম্যাচ জুড়ে খেলেছেও তারা ফেবারিটের মতোই। প্রথম মিনিটেই থমাস মুলার গোলমুখে শট নিয়ে আক্রমণাত্মক শুরুর ইঙ্গিত দেন। আক্রমণের সে ধারা বায়ার্ন পুরো প্রথমার্ধ জুড়েই বজায় রাখে, তবে চেলসির গোলমুখে দেয়াল হয়ে দাড়িয়ে ছিলেন গোলরক্ষক কাবায়েরো। বায়ার্নের গোলমেশিন লেভানডভস্কিকে এই অর্ধে তিনবার ওয়ান-অন-ওয়ান পরিস্থিতি থেকে হতাশ করেন তিনি।

    তবে এই অর্ধের সেরা সুযোগটি পায় বায়ার্ন পেয়েছিল ৩৬ মিনিটে। বক্সের বাম দিক থেকে লেভানডভস্কির দুর্দান্ত ক্রসে গোলের সামনে থেকে ফ্রি হেডার নিয়েছিলেন মুলার, তবে কাবায়েরোর পর এবার ক্রসবার বাধা হয়ে দাড়ায় জার্মানদের সামনে।

    দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর পর অবশ্য আর কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি বায়ার্নের সামনে। গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে বেশি গোল করা দলটির এই অর্ধে গোলের দেখা পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। বিরতির পর স্বাগতিকদের জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে ওঠা লেভানডভস্কি এবং গেনাব্রির ৩ মিনিটের ঝড়ে ওলট-পালট হয়ে যায় চেলসি।
     
    ৫১ মিনিটে বক্সের বাম দিক থেকে ভেতরের দিকে ঢোকেন গেনাব্রি, সিজার আজপিলিকুয়েতা হঠাৎ পিছলে যাওয়ায় বাম দিক থেকে দৌড়ে আসতে থাকা লেভানডভস্কির দিকে বল বাড়ান তিনি। সেখান থেকে লেভানডভস্কির ফিরতি কাটব্যাক ধরে গোলরক্ষককে কোনও সুযোগ না দিয়েই বায়ার্নকে এগিয়ে দেন। এর মিনিট তিনেক পর আবারও লেভানডভস্কি এবং গেনাব্রির মধুর কম্বিনেশন! আবারও গোল! এবারও বক্সের বাম দিক থেকে লেভানডভস্কির দারুণ থ্রু পাসে বক্সের ভেতর অনেকটা খালি জায়গাতে বল পান গেনাব্রি, বাঁ পায়ে নেওয়া ঠাণ্ডা মাথার শটে কাবায়েরোকে কোনও সুযোগ না দিয়েই ব্যবধান বাড়ান তিনি।

    গেনাব্রির গোল দুটি বানিয়ে দেওয়া লেভানডভস্কিই বা গোলবঞ্চিত থাকবেন কেন! ৭৬ মিনিটে মাঠের বাম দিক ধরে আলফনসো ডেভিস দ্রুতগতির দৌড়ে দু-তিনজন চেলসি ডিফেন্ডারকে পিছনে ঠেলে নিখুঁত লো ক্রস করেন লেভানডভস্কির উদ্দেশ্যে। গোলের একেবারে সামনে থেকে সেই বলে পা ছুঁইয়ে বায়ার্নের জয় নিশ্চিত করেন এই পোলিশ গোলমেশিন।

    ম্যাচ জুড়ে বায়ার্নের আক্রমণ ঠেকাতে ব্যস্ত ছিল চেলসি। দ্বিতীয়ার্ধে গোল হজমের পর ট্যামি আব্রাহাম, উইলিয়ান এবং পেদ্রোকে নামিয়ে আক্রমণে ধার বাড়িয়েছিল চেলসি। তবে বায়ার্নের গোলের সামনে গিয়ে বারবার খেই হারিয়ে ফেলেছে ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের দল।

    চলতি মৌসুমে এই নিয়ে ঘরের মাঠে ৮ ম্যাচ হারল চেলসি। ঘরের মাঠে এক মৌসুমে এর চেয়ে বেশি ম্যাচ কখনও হারেনি তারা। হারটাও বড় ব্যবধানের।  ১৯ মার্চ বায়ার্নের মাঠে শেষ ষোলর ফিরতি লেগে মাঠে নামবে চেলসি অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় সেদিন তাই মিরাকলের আশা নিয়েই খেলতে হবে চেলসিকে।