কিক অফের আগে : অ্যানফিল্ডে জাদুর অপেক্ষায় লিভারপুল
কবে, কখন
লিভারপুল-অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ
চ্যাম্পিয়নস লিগ দ্বিতীয় পর্ব, দ্বিতীয় লেগ
১২ মার্চ, রাত ২.০০
অ্যানফিল্ড
প্রথম লেগের ফল (অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ১-০ লিভারপুল)
অ্যানফিল্ড জাদু জানে। এখানে বার্সেলোনার মতো দলের বিপক্ষে প্রথম লেগে ৩-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পরও লিভারপুল জিততে জানে। এ তো সাম্প্রতিক উদাহরণ। অ্যানফিল্ডের ঐতিহ্য আর ইতিহাস বহুদিনের। অ্যানফিল্ডে চ্যাম্পিয়নস লিগের রাত নামে রোমাঞ্চ নিয়ে, ফ্লাডলাইটের আলোর নিচে পুরো লিভারপুল হাঁটে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে এক গোলে পিছিয়ে ম্যাচ শুরু করাটা তাই বড় দুশ্চিন্তার কিছু নয় লিভারপুলের জন্য।
ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে হারের পর ইউর্গেন ক্লপ তখনই অ্যাটলেটিকোকে অ্যানফিল্ডের আমন্ত্রণ দিয়ে রেখেছিলেন। ইতিহাস তো আছেই, সঙ্গে গত দুই মৌসুমে লিভারপুলের অপ্রতিরোধ্য ফর্ম আর ধারাবাহিকতাও সঙ্গী হচ্ছে দ্বিতীয় লেগে। সবমিলিয়ে ইউরোপের যে প্রতিপক্ষের মাঠে আপনি খেলতে যেতে চাইবেন না, সেটা অবধারিতভাবে এখন অ্যানফিল্ডই। আক্ষরিক অর্থেও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের ঘরের মাঠ।
বিশেষ করে আপনি যদি ডিয়েগো সিমিওনে হন তাহলে কাজটা এবার আপনার জন্য আরও কঠিন। গত এক দশকে অ্যাটলেটিকো চেহারা স্বরূপে বদলে দিয়েছেন সিমিওনে। এই মৌসুমে সিমিওনের সেই দলটার শেষ রথী-মহরথীরা ক্লাব ছেড়ে গেছেন। নতুনদের নিয়ে নতুন পথচলা শুরু হয়েছে সিমিওনের। যে পথটা মসৃণ নয় মোটেই। লিভারপুলের যেখানে লিগ জয় নিশ্চিত হয়ে আছে সেখানে লা লিগায় হিমশিখ খাচ্ছে অ্যাটলেটিকো। ২৭ ম্যাচে মাত্র ১১ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ৬ এ অবস্থান তাদের। অ্যাটলেটিকোর আরও বড় দুশ্চিন্তার কারণ তাদের অ্যাওয়ে ফর্ম। এ বছর এখনও পর্যন্ত প্রতিপক্ষের মাঠে একবারও জয় পায়নি তারা। সবশেষ ১৩ অ্যাওয়ে ম্যাচে জয় মাত্র ১টি।
অবশ্য এই ম্যাচগুলোর বেশিরভাগই হয়েছে ড্র। অ্যানফিল্ডে সেটা পেলেই কপাল খুলে যাবে সিমিওনের। আর প্রথম লেগের অনুপ্রেরণা তো আছেই। লিভারপুলকে একবারও গোলে শট করতে না দিয়ে প্রথম লেগ জিতেছিল অ্যাটলেটিকো। গত দশ বছরে রক্ষণাত্মক দিক দিয়ে সবচেয়ে ধারাবাহিক দলও তারা। ঐতিহ্য তো তাদেরও আছে। আর এই টাই যে উত্তাপ যে ছড়াবে সেটা তো আগে থেকেই জানা ছিল। সেটার মঞ্চ প্রস্তুত কেবল।
দলের খবর
লিভারপুলের জন্য আশার খবর, জর্ডান হেন্ডেরসন ইনজুরি থেকে ফিরেছেন। একাদশেও থাকার কথা তার। ক্লাব অধিনায়ক প্রথম লেগে চোট নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন। এর পরের ৪ ম্যাচে লিভারপুলও তার অভাব বোধ করেছে প্রকটভাবে। অ্যাটলেটিকোর কাছে হারটি ছিল মৌসুমে লিভারপুলের জন্য তৃতীয়, এর পরের সময়টায় আরও ২ বার হারের মুখ দেখেছে তারা। হেন্ডারসনের ফেরার খবর তাই রেডদের জন্য স্বস্তির।
নিয়মিত গোলরক্ষক অ্যালিসন থাকছেন না এই ম্যাচে। লিভারপুলকে তাই গোলবার নিয়ে আলাদা করে ভাবতেই হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিতে অ্যালিসনের থাকা না থাকা।
চোটসমস্যা আছে অ্যাটলেটিকোতেও। থমাস লেমার ও আলভারো মোরাতাকে নিয়ে সংশয় আছে। দুইজনই প্রথম লেগের একাদশে ছিলেন। তবে প্রথম লেগে খেলতে না পারা হোয়াও ফেলিক্স এবার ফিরেছেন সুস্থ্য হয়ে। অ্যাটলেটিকোর রেকর্ড সাইনিংয়ের ওপর প্রত্যাশাটাও থাকবে চড়া।
সম্ভাব্য একাদশ
লিভারপুল
আদ্রিয়ান, আর্নল্ড, মাতিপ, ভ্যান ডাইক, রবার্টসন, হেন্ডেরসন, ফাবিনহো, ওয়ানাইল্ডাম, মানে, সালাহ, ফিরমিনো
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ
অবলাক, ট্রিপিয়ের, সাভিচ, ফেলিপে, লোদি, নিগেজ, পার্তে, কোকে, ভিতোলো, ফেলিক্স, কোরেয়া
হেড টু হেড
দুই দলের ষষ্ঠ দেখা এটি। আগের ৫ ম্যাচে অ্যাটলেটিকো জিতেছে মাত্র একবার। চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্বের প্রথম লেগে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর শেষ ১২ বারের ভেতর ৯ বারই দ্বিতীয় লেগ জিতে পরের রাউন্ডে উঠেছে লিভারপুল। সিমিওনের জন্য অবশ্য চমৎকার এক রেকর্ড সঙ্গী হচ্ছে এই ম্যাচে। তিনি অ্যাটলেটিকোর দায়িত্ব নেওয়ার পর চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্বে যতবার বাদ পড়েছেন, ততোবারই অন্যপাশের দলে ছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এবার অন্তত তিনি নেই। গতবারও ঘরের মাঠে ২-০ গোলে শেষ ষোলর প্রথম লেগ জিতেছে রোনালদোর দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিকে অ্যাটলেটিকোকে বিদায় করে দিয়েছিল জুভেন্টাস।
প্রেডিকশন
লিভারপুল ২-১ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ