সিটি ছাড়ছেন তোরে?
শংকাটা তাঁর মুখপাত্র প্রকাশ করেছিলেন গত মাসেই, পেপ গার্দিওলা শেষ পর্যন্ত ম্যানচেস্টার সিটিকেই নতুন ঠিকানা হিসেবে বেছে নিলে ইতিহাদ স্টেডিয়াম থেকে পাততাড়ি গোটানোর কথাই ভাববেন দলটির সময়ের অন্যতম বড় তারকা ইয়াইয়া তোরে। আর গতকাল সিটি-পেপ গাঁটছড়ার বিষয়টা পাকাপাকি হয়ে যাবার পর সেই শংকায় আরও জোর সম্ভাবনাই যোগ করলেন ওই মুখপাত্র।
বার্সেলোনায় দুটো মৌসুম একসাথে ছিলেন দু’জন। কিন্তু সেখান গুরু গার্দিওলার সাথে শিষ্য তোরের সম্পর্কটা যে মোটেই সুখকর ছিল না তা বলাই বাহুল্য। ২০০৮ সালে ন্যু ক্যাম্পে গার্দিওলা যুগ শুরুর পর যে ক’জন শুরুতেই একাদশে নিয়মিত জায়গা হারান, তোরে তাঁদের অন্যতম। ব্লাউগ্রানাদের হয়ে ২০০৯-১০ মৌসুমে তো পুরো নব্বই মিনিট খেলার সুযোগ পান সাকুল্যে নয়টি ম্যাচ। সে বছরের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে এই মিডফিল্ডারকে সেন্টার ব্যাকেও খেলতে ‘বাধ্য করা’ হয়।
ঘটনা পরম্পরায় অবধারিতভাবেই কাতালুনিয়া ছেড়ে দেবার মনঃস্থ করেন আইভরি কোস্টের এই মিডফিল্ডার। ২০১০ সালে যোগ দেন ম্যানচেস্টার সিটিতে। ৪৪ বছর পর ক্লাবটির প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়েও রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সাফল্যের সাথে সেখানে সাড়ে পাঁচ বছর কাটানোর পর ৩২ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে যাবার আগেই ফের ক্লাব ছাড়ার চিন্তা করতে হচ্ছে ওই গার্দিওলার কারণেই!
চলতি মৌসুম শেষে অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনা ছেড়ে যাবার ঘোষণাটা গার্দিওলা দিয়ে ফেলেছিলেন গত বছরের শেষ নাগাদ। এরপর থেকেই সময়ের অন্যতম সফল এই কোচকে নিজেদের ডাগ আউটে পেতে প্রকাশ্য তোড়জোড় শুরু করে ম্যানচেস্টারের দুই ক্লাব আর চেলসি। লম্বা সময় ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পুরস্কারটা পেয়েছে সিটিই, গতকাল আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জানা গেছে যে আসছে মৌসুমে ইতিহাদ স্টেডিয়ামেই নতুন অধ্যায় শুরু করতে চাচ্ছেন ৪৫ বছর বয়সী এই স্প্যানিশম্যান।
এমন প্রেক্ষিতে সিটিতে তোরের আর থাকার সম্ভাবনা কমই বলে মনে করছেন তাঁর এজেন্ট দিমিত্রি সেলুক, “আমার মনে হয় সে চলে যাবে। কিন্তু যাবার আগে আমি চাই সে দলটির হয়ে লিগসহ বাকি শিরোপাগুলোই জিতে নিক।”
তাহলে তো গার্দিওলার কারণেই তোরের এমন চিন্তাভাবনা? এমন প্রশ্নে কূটনৈতিক জবাবই দিচ্ছেন তাঁর এজেন্ট, “এটা আসলে পেপ তাঁকে পছন্দ করে কি করে না সেটার উপর নির্ভর করছে না। জীবন তো আর থেমে থাকার জন্য নয়, একসময় না একসময় কোথাও না কোথাও যেতেই হবে।”
সিটির হয়ে এ পর্যন্ত ২৫১টি ম্যাচে মাঠে নেমে তোরে গোল করেছেন ৭০টি। সিটিজেনদের হয়ে জিতেছেন দুটি প্রিমিয়ার লিগ, একটি করে এফএ কাপ ও লিগ কাপ।