• অন্যান্য খবর
  • " />

     

    প্রায় তিন বছর পর 'ঘুম' ভাঙল সেই আয়াক্স ফুটবলারের

    প্রায় তিন বছর পর 'ঘুম' ভাঙল সেই আয়াক্স ফুটবলারের    

    ১০-১২ ঘন্টা বা একদিনও নয়। পাক্কা প্রায় এক বছর। আব্দেলহাক নুরির ঘুমটা যে কোনোদিন ভাঙবে, সেটা ভাবতে পারেননি বোধ হয় কেউ। সেই ২০১৭ সালের জুলাইতে যে প্রায় মরণঘুম হয়েছিল, এরপর এক বছর ছিলেন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের কোমায়। ২০১৮ সালে কোমা থেকে ফিরলেও স্বাভাবিক জীবনে কবে ফিরতে পারবেন, সেটা ছিল বড় প্রশ্ন। নিয়তির অদ্ভুত খেলা, পুরো বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াইয়ে লড়ছে, সেই সময়েই নুরি ফিরলেন হাসপাতাল থেকে বাসায়। ফুটবল হয়তো আর খেলা হবে না, তবে সাবেক আয়াক্স এই মিডফিল্ডার যে সুস্থ হবেন, সেটাই বা কে ভেবেছিল?

    ২০১৭ সালের জুলাইয়ে আয়াক্সের হয়ে খেলছিলেন নুরি। কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া অ্যাটাকে খেলার মাঠেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন। সেই ঘটনার ফলে তার ব্রেইনের মারাত্মক স্থায়ী ক্ষতি হয় এবং কোমায় চলে গিয়েছিলেন তিনি।

    এক ডাচ টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তার বাড়ি ফেরার সুসংবাদ দিয়েছেন নুরির ভাই আব্দেররাহিম। ২০১৮ সালে মেডিক্যালি কোমা থেকে ফিরেছিলেন ‘অ্যাপি’, আর এবার দীর্ঘ হাসপাতাল পর্ব ঘুচিয়ে নিজগৃহে ফিরলেন। বর্তমানে তার পরিবার একটি বিশেষভাবে তৈরি বাড়িতে থাকে, যেখানে নুরি তার হুইলচেয়ারে বসে ঘোরাফেরা করতে পারেন। তবে নুরির ভাই এও জানিয়েছেন যে, হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরলেও দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য এখনও পরিবারের উপর ‘নির্ভরশীল’ সে। তবে নুরি এখন সব চিনতে পারছেন, পরিচিত সবার চেহারা মনে রাখতে পারছেন। এটুকুই বা কম কীসে? 

    ২০১৭ সালে কোমায় চলে যাওয়ার পর নুরিকে আশার বাণী শোনাতে পারেননি চিকিৎসকরা। সে আদৌ কখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় ছিল বেশ। তবে তরুণ এই ডাচ মিডফিল্ডার সব নিরাশা পেছনে ঠেলে সুস্থ হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। 

    এক সময় আয়াক্সের নতুন প্রজন্মের অন্যতম সেরা সুপারস্টার ভাবা হত নুরিকে। ২০১৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ ইউরোর ‘টিম অফ দ্য টুর্নামেন্টে’ও জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। অস্ট্রিয়ান আল্পসে জার্মান ক্লাব ওয়েডার ব্রেমেনের সঙ্গে প্রাক-মৌসুমের ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলেন নুরি, ম্যাচের আগেই পাকস্থলীর ব্যথা এবং তার ভালো ঘুম হয়নি বলে জানিয়েছিলেন। তবুও খেলেছিলেন তিনি। ম্যাচের হাফটাইমে হাকিম জিয়েখের বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন। সে ম্যাচের ৭২ মিনিটে ধীরে ধীরে কমে আসে তার দৌড়ের গতি, মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নুরি। রেফারির বুঝতে খুব বেশি দেরি হয়নি যে, খুব খারাপ কিছু একটা ঘটে গেছে। খেলা বন্ধ করে দ্রুত মেডিক্যাল টিমকে মাঠে আসার ইঙ্গিত করেন তিনি।

    নুরির ফুটবল ক্যারিয়ারও থমকে যায় সেখানেই। তবে অবশেষে আশার আলো দেখা যাচ্ছে, জীবনের খেলায় তো ধীরে ধীরে জয়ের দিকে এগুচ্ছেন নুরি, তার পরিবার এবং অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষীদের জন্য এটাই সব।