• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    "ফুটবলারদের বলির পাঠা বানানো হচ্ছে"

    "ফুটবলারদের বলির পাঠা বানানো হচ্ছে"    

    করোনা ভাইরাসে ফুটবল বন্ধ হওয়ার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন লিগে খেলোয়াড়দের বেতন-ভাতা। স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনায় বিষয়টি নিয়ে কিছুটা জলঘোলা হয়েছে, খেলোয়াড় এবং বোর্ডের মাঝে দীর্ঘ দর-কষাকষি শিরোনাম হয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত কাতলান ক্লাবটিতে বেতন কাট-ছাঁটের বিষয়ে একমত হতে পেরেছে সব পক্ষ। তবে এবার একই বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত গোটা ইংলিশ ফুটবল। প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়দের বেতন-ভাতা কমানো নিয়ে লিগ কর্তৃপক্ষ এবং পিএফএ-র মাঝে আলোচনা হলেও কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি এখনও। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রীও প্রিমিয়ার লিগ খেলোয়াড়দের বেতন কম নিতে অনুরোধ করেছেন। আর এমন সময়ে সব মহল থেকে ফুটবলারদের ওপর বেতন ছাড় নিয়ে এই চাপ সৃষ্টির বিষয়টিকে ‘কলঙ্কজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন  ইংলিশ ফরোয়ার্ড ওয়েইন রুনি।

    ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য টাইমস’-এ লেখা কলামে এই বিষয়গুলো তুলে ধরে কেন ফুটবলারদের বলির পাঠা বানানো হচ্ছে সেই প্রশ্ন করেন রুনি, “গত কয়েকদিনের ঘটনাবলীকে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবেই মনে রাখবে সবাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক তিনি করোনা ভাইরাস নিয়ে তার দৈনিক ব্রিফিং দিতে এসেছিলেন, সবাই ভাইরাস নিয়ে তার নিয়মিত আপডেট শোনার অপেক্ষায় ছিল, অথচ তিনি সেখানে প্রিমিয়ার লিগ খেলোয়াড়দের বেতন নিয়ে কথা বললেন। দেশ যখন এতো বড় একটা স্বাস্থ্য দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন তার মাথায় প্রিমিয়ার লিগ খেলোয়াড়দের বেতনের বিষয়টি কিভাবে আসে? তিনি কি ভাইরাসের বিষয়ে সরকারের কর্মকাণ্ড থেকে মানুষের মনোযোগ অন্য দিকে নিতে এই কথা বলেছিলেন?”

    খেলোয়াড়দের বেতন কর্তন নিয়ে বিভিন্ন লিগে আলোচনাগুলো যথাসম্ভব রুদ্ধদ্বার ভাবে করা হয়েছে, যাতে সব তথ্য বৈঠকগুলোর সব তথ্য সাধারণের মাঝে না আসে। এতে করে খেলোয়াড় এবং ক্লাব বা লিগ সম্পর্কে সাধারণের মাঝে কোনও তিক্ততা যাতে তৈরি না হয়, সেটিই ছিল লক্ষ্য। তবে এর ঠিক উল্টো পথে হেঁটেছে প্রিমিয়ার লিগ, ঘটা করে ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছে, খেলোয়াড়দের ৩০ শতাংশ বেতন কম নিতে অনুরোধ করেছে তারা। এই বিষয়টিকেও খেলোয়াড়দের জন্য ‘অপমানজনক’ মনে করছেন রুনি, “প্রিমিয়ার লিগ ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা চায় খেলোয়াড়রা ৩০ শতাংশ বেতম কম নিক। খেলোয়াড়রা যে বিভিন্ন জায়গায় অনুদান দেওয়ার বিষয়ে নিজেদের মাঝে গভীর আলোচনায় রয়েছে, এটা জানার পরেও প্রিমিয়ার লিগ এবং ক্লাবগুলো সেই ঘোষণা দিয়েছে।”

    “এই ব্যাপারটি আমাকে খুবই অবাক করেছে। কারণ এই বিষয়ে অন্য সব জায়গায় গোপনীয়তা বজায় রেখে আলোচনা করা হয়েছে। অথচ প্রিমিয়ার লিগ এটা ফলাও করে ঘোষণা দিয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, এটা শুধুই খেলোয়াড়দের খাটো করার জন্য করা হয়েছে।

    এভাবে বিষয়টি সবার সামনে ঘোষণা দেওয়ার ফলে এখন খেলোয়াড়দের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে। আমার মনে হয় না এর ফলে কোনও পক্ষেরই কোনও লাভ হচ্ছে। এখন কোনও খেলোয়াড় ৩০ শতাংশ বেতন কম নেওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ না-ই করতে পারে, হয়ত এটা করলে কেউ সত্যিই অর্থনৈতিকভাবে বড় ক্ষতির মুখে পরবে। কিন্তু এই বিষয়টি বললেই এখন খবর হবে, ‘ধনী খেলোয়াড়রা বেতন কম নিতে রাজি নয়’।”

    রুনির মতে বর্তমান অবস্থায় খেলোয়াড়দের বলির পাঠা বানানো হচ্ছে, “আপনি বিষয়টিকে যেভাবেই দেখেন না কেন, এটা বোঝা কঠিন না যে, আমরা সহজ টার্গেট। একটা বিষয় যেটা নিয়ে কেউই বলে না, তা হচ্ছে, বেতনের প্রায় অর্ধেকই কর হিসেবে দিয়ে থাকি আমরা, যা পরবর্তীতে সরকার এবং ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) কাজেই খরচ হয়।”