লকডাউনের সময় বাড়তে পারে ফিক্সারদের দৌরাত্ম্য?
গত ১৫ মার্চ পিএসএল স্থগিত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সব ধরনের পেশাদার ক্রিকেট থেমে গিয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য। মাঠের খেলা বন্ধ থাকায় স্বাভাবিকভাবে এই সময়ে ম্যাচ ফিক্সারদের দৌরাত্ম্য কমে যাওয়ার কথা। তবে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি খেলা বন্ধ থাকার এই সময়ে ম্যাচ ফিক্সারদের থেকে সতর্ক থাকার জন্য বিশেষভাবে ক্রিকেটারদের নির্দেশনা দিয়েছে।
আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল এক্ষেত্রে সতর্কতার জায়গা দেখছেন, “করোনার কারণে সাময়িকভাবে সব ধরনের আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া ক্রিকেট হয়ত বন্ধ আছে। তবে দুর্নীতিপরায়ণরা কিন্তু সক্রিয় আছে। এর ফলে আমরা সকল সদস্য দেশের বোর্ড, খেলোয়াড়, খেলোয়াড়দের সংগঠন এবং এজেন্টদের সঙ্গে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। যেহেতু অবসর সময় কাটাতে এখন খেলোয়াড়রা সামাজিক মাধ্যম অনেক বেশি ব্যবহার করছেন, ফ্যানদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তাই ম্যাচ ফিক্সাররা এই সুযোগটা নিয়ে যাতে পরবর্তী সময়ে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য কোনও কাজ না করতে পারে, আমরা সেদিকে নজর রাখছি।”
সামাজিক মাধ্যমে ফ্যানদের সাথে অবাধ যোগাযোগের সুযোগে ম্যাচ ফিক্সাররা যাতে খেলোয়াড়দের পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারে, সেজন্য তারা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন মার্শাল। এছাড়াও খেলা বন্ধ থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেটারদের আয়ও কমে গেছে, এতে করে অর্থনৈতিকভাবে খুব একটা সচ্ছল নন এমন ক্রিকেটাররা সহজে এ ধরনের প্রলোভনের স্বীকার হতে পারেন বলেও সতর্ক করেছেন আইসিসির প্রধান দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা।
মার্শালের সঙ্গে একমত হয়ে সংকটকালীন এই সময়ে আরও বেশি সতর্ক থাকার ওপর জোর দিয়েছেন ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) ইন্টেগ্রিটি বিভাগের প্রধান জেমস পায়েমন্ট, “এ ধরনের সংকটের সময়কে সবসময়ই কেউ না কেউ সুযোগ হিসেবে দেখে। ক্রিকেট যেকোনো ধরনের অপকর্ম ঠেকাতে আমাদের আরও সচেষ্ট হতে হবে, আর আমার বিশ্বাস ক্রিকেটাররাও সঠিক সিদ্ধান্তই নেবেন।”
আপাতত কোনও খেলা না থাকায় আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের ওপর কাজের চাপ কিছুটা কম থাকার কথা। তবে এই সময়েও একইসাথে প্রায় ৫০ টি কেস নিয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন মার্শাল। আর আগামী কয়েক সপ্তাহের কয়েকটি কেসের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি, এর মাঝে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৩ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিধির প্রায় ১৩ টি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগেরও নিষ্পত্তি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বর্তমানে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিধি লঙ্ঘনের দায়ে সাজা ভোগ করা ক্রিকেটারদের মাঝে সবচেয়ে হাই-প্রোফাইল হচ্ছেন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। অনৈতিক প্রস্তাবের তথ্য গোপন করে বর্তমানে ২ বছরের নিষেধাজ্ঞায় রয়েছেন তিনি, যদিও অভিযোগ মেনে নেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা ১ বছর কমে এসেছে তার। আগামী ২৯ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফিরবেন তিনি।