৬ ইংলিশ ফুটবলার যারা হতে পারতেন ক্রিকেটারও
ক্রিকেট, ফুটবল দুটি খেলার জন্মই ইংল্যান্ডে। দেশটির বেশিরভাগ লোকেরই তাই দুটি খেলার প্রতিই অকৃত্রিম ভালবাসা কাজ করে। তবুও ক্যারিয়ার হিসেবে তো আর দুটিকে একসাথে বেছে নেওয়া যায় না। তাই ক্রিকেট প্রেমে মত্ত হলেও পরবর্তীতে ফুটবলকে ধ্যান-জ্ঞান বানানো ছয় ইংলিশ ফুটবলারের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে এই লেখায়।
জিওফ হার্স্ট
ইংল্যান্ডের একমাত্র ফুটবল বিশ্বকাপ উঠেছিল তার হাতে। পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে জিওফ হার্স্টের হ্যাটট্রিকে ভর করেই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে সেদিন বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরেছিল ‘থ্রি লায়ন্স’রা। বিশ্বকাপ ফাইনালে তার আগে-পরে আর কেউই হ্যাটট্রিকের দেখা পাননি। অবশ্য এসবের কিছুই হত না, যদি ক্রিকেট ছেড়ে ফুটবলে আসার সিদ্ধান্ত না নিতেন।
পুরোদস্তর ফুটবলার বনে যাওয়ার আগে বেশ খানিকটা সময় ক্রিকেট খেলেছেন হার্স্ট। ক্রিকেটে তার হাতযশও একেবারে কম ছিল না। কাউন্টি ক্লাব এসেক্সের হয়ে প্রথম শ্রেণীর একটি ম্যাচও খেলেছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট ছেড়ে ফুটবলকেই ধ্যান-জ্ঞান করেছিলেন এই কিংবদন্তি।
গ্যারি নেভিল
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ক্লাস অফ ‘৯২-র অন্যতম নাম গ্যারি নেভিল। তবে চাইলে ক্রিকেটকেও নিজের ক্যারিয়ার বানাতে পারতেন তিনি। ১৯৯২ সালে গ্রিনমাউন্ট ক্রিকেট ক্লাবের দুজন রুকি ব্যাটসম্যানকে নিয়ে বেশ হৈচৈ হচ্ছিল। সেই দুই ক্রিকেটারের একজন ছিলেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ম্যাথু হেইডেন আর অন্যজন ছিলেন নেভিল। তবে তিনিও শেষতক ক্রিকেটের সঙ্গ ছেড়ে ফুটবলে থিতু হয়েছেন। যদিও পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে সাবকে ম্যান ইউনাইটেড রাইটব্যাক নেভিল বলেছিলেন, ক্রিকেট তাকে একজন দক্ষ ক্রীড়াবিদ হতে সাহায্য করেছে।
জো হার্ট
ইংল্যান্ড জাতীয় দল এবং সাবেক ম্যানচেস্টার সিটি গোলরক্ষক জো হার্টও একসময় বেশ প্রতিভাবান ক্রিকেটার ছিলেন। কাউন্টি ক্লাব ওরচেস্টারশায়ারের হয়ে একসময় খেলেছিলেন তিনি, তার ক্রিকেট প্রতিভার কারণে তখন বেশ নামডাকও ছিল তার। তবে তিনিও ‘ভদ্রলোকের খেলা’ ক্রিকেটকে ছেড়ে ‘সুন্দর খেলা’ ফুটবলকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।
জেমস মিলনার
লিভারপুলের ইংলিশ মিডফিল্ডার জেমস মিলনার ফুটবল মাঠের প্রতিটি ইঞ্চি দাপিয়ে বেড়ান। ইউর্গেন ক্লপের অধীনে অলরেডদের মধ্যমাঠের নিয়মিত নাম তিনি। অথচ ছোটবেলায় ক্রিকেটার হওয়ার জন্য ইয়র্কশায়ার অ্যাকাডেমিতে নাম লিখিয়েছিলেন মিলনার, জুনিয়র পর্যায়ে ক্লাবের হয়ে বেশ কিছুদিন খেলেছেনও তিনি।
পরবর্তীতে ফুটবলে নিজের স্থান খুঁজে নিলেও ক্রিকেট এখনও প্রাণে ধারণ করেন মিলনার। তাইতো অবসরের পর আবারও হর্সফোর্ড ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলার ইচ্ছের কথাও জানিয়েছেন।
গ্যারি লিনেকার
ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি স্ট্রাইকার গ্যারি লিনেকারের সামনেও ক্রিকেট নাম গড়ার সুযোগ ছিল। শৈশবে লেস্টারশায়ার ক্রিকেট ক্লাবের স্কুল দলের অধিনায়কত্বও করেছিলেন তিনি। তবে নিজের ক্রিকেটের পাঁট স্কুলেই চুকিয়েছিলেন লিনেকার, এরপর শুধুই ফুটবল।
ফিল নেভিল
গ্যারি নেভিলের মতো তার ভাই সাবেক ইংলিশ ফুটবলার ফিল নেভিলেরও প্রথম প্রেম ছিল ক্রিকেট। এমনকি ক্যারিয়ার হিসেবে ক্রিকেট এবং ফুটবলের মাঝে একটিকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
জুনিয়র পর্যায়ে ল্যাঙ্কাশায়ার ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন বর্তমানে ইংল্যান্ড নারী ফুটবল দলের কোচ নেভিল। অত্যন্ত প্রতিভাবান ক্রিকেটার নেভিল ল্যাঙ্কাশায়ারের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী ক্রিকেটার হিসেবে মাত্র ১৫ বছর বয়সে দ্বিতীয় একাদশের হয়ে খেলেছিলেন।