• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    চেলসি-ইউনাইটেডের ময়নাতদন্ত

    চেলসি-ইউনাইটেডের ময়নাতদন্ত    

    অমীমাংসিতভাবেই শেষ হলো দুই ডাচের লড়াই। ম্যাচের ৯০ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থেকেও ড্র- নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে সপ্তাহের সবচেয়ে বড় ম্যাচে স্টামফোর্ড ব্রীজে চেলসি-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যাচটি ড্র হয়েছে ১-১ গোলে।

    ৬১ মিনিটে জেসি লিনগার্ডের গোলে এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এরপর ম্যাচের ৯২ মিনিটে ডিয়েগো কস্তা গোল করে দলকে সমতায় ফেরান। এই ম্যাচের পর ৪১ পয়েন্ট নিয়েই তালিকার পাঁচ নম্বরেই থাকলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আর ৩০ পয়েন্ট নিয়েই ১৩ তে অবস্থান বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চেলসি।

    শুরুতে ইউনাইটেড, শেষে চেলসিঃ

    ম্যাচের শুরু থেকেই চেলসিকে জেঁকে ধরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে চেলসির রক্ষণকে দিশেহারা করে দেন মারশিয়াল, মাতারা। মাত্র ২৩ মিনিটেই ৯টি কর্নারও পায় রেড ডেভিলরা। বিপরীতে চেলসির প্রথম কর্নার পেতে সময় লেগেছিল ২৭ মিনিট। অবশ্য এরপরই ম্যাচে ফেরে চেলসি। দ্বিতীয়ার্ধের আগ পর্যন্তই বেশ ক’টি আক্রমণ সাজায় হিডিংকের চেলসি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, আর শেষটা করলো চেলসি!

    সস্তা কস্তাঃ

    রেফারীর আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাটা যেন কস্তার অভ্যেস হয়েই দাঁড়িয়েছে। রেফারী থেকে লাইন্সম্যান কাউকেই ছাড়লেন না এই ম্যাচেও। আর রেফারীরাও বোধ হয় মানিয়ে নিয়েছেন কস্তার আচরণের সাথে। ম্যাচে চেলসির কেউই হলুদ কার্ড দেখেননি।  

     
    "ব্লাইন্ড" রেফারীঃ

    প্রথমার্ধ শেষ হবার ঠিক আগে চেলসির আক্রমণ থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডি-বক্সের মধ্যে বল পেয়ে যান টেরি। টেরির গোলমুখী কিক ব্লিন্ডের বাহুতে লেগে বারের পাশ দিয়ে চলে যায়। রেফারী কর্নারের বাঁশি বাজান। তবে চেলসি খেলোয়াড়েরা হয়তো পেনাল্টির বাঁশিরই অপেক্ষা করছিলেন। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় হাত প্রশস্ত করার চেয়ে বরং নিজের শরীর বাঁচাতেই অমন ট্যাকেল করেছিলেন ব্লিন্ড। তবে প্রায়ই রেফারীরা পেনাল্টি দিয়ে থাকেন এসবও!  


    গোলশূন্য প্রথমার্ধঃ

    ম্যান ইউনাইটেড-চেলসি ম্যাচের প্রথমার্ধ গোল শূন্য শেষ হওয়াটা একরকম নিয়ম হয়েই দাঁড়িয়েছে। গত সাত ম্যাচের  ৫ টিরই প্রথম ৪৫ মিনিট শেষ হয়েছে কোন গোল ছাড়াই!


    দুরন্ত দুই ফুলব্যাকঃ  
     
    দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবারো শুরু ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড শো! আবারো চেলসির গোল মুখে হানা। রেড ডেভিলদের জ্যাকসন আর ডারমিয়ান দুই ফুলব্যাকের সারা মাঠ চষে বেড়ানো ছিল দেখার মতো। দুই উইং দিয়েই একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় ম্যান ইউনাইটেড। গোলের দেখা পেতেও বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। বাঁ প্রান্ত থেকে জ্যাকসনের ক্রস ডি-বক্সের ভেতরে রিসিভ করেন রুনি। রুনির ছোট পাস নিজের পায়ে নিয়ে, চেলসির আজপেলিকুয়েতাকে বোকা বানিয়ে ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে এগিয়ে নেন লিনগার্ড। বারবার আক্রমণের পর গোলটি রেড ডেভিলদের প্রাপ্যই ছিল।


    দুর্ভেদ্য কর্তোয়া-ডি গিয়াঃ

    ম্যাচের শুরুতে ডি গিয়া বেশ কিছুক্ষণ অলস সময় পার করলেও কর্তোয়া ব্যস্তই রেখেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আক্রমণ ভাগ। বক্সের বাইরে থেকে করা মারশিয়াল শটটি ঠেকিয়ে না দিলে আরো আগেই এগিয়ে যেতে পারতো ম্যান ইউনাইটেড। এছাড়াও পুরো ম্যাচে ছোট বড় অনেক গুলো সেভ করতে হয়েছে এই বেলজিয়ানকে।

    আরেক গোলকিপারের ডি-গিয়া তো সেই কবে থেকে একাই সামলে যাচ্ছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের গোলবার! আজও ব্যতিক্রম হলো না। ইভানোভিচের বাঁ পায়ে করা প্রায় নিশ্চিত গোল হবার মতো একটি শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন অসাধারণ দৃঢ়তায়। এর পর ফ্যাব্রিগাসেরও একটি শটও ঠেকিয়েছেন এই স্প্যানিশ। তবে, শেষ রক্ষা যদিও করতে পারেননি। শেষ মুহুর্তে গোলটা হজম করতে না হলে “অভেদ্য” হয়েই থাকতে পারতেন।     

     


    সেই কস্তাই চেনালেন নিজেকেঃ

    হিডিংকের অধীনে কস্তা যেন নিজেকে আবার নতুন করে চেনাচ্ছেন। এর আগের মৌসুমে কখনও নিষেধাজ্ঞার খড়্গে অথবা ইঞ্জুরিতে পরে খেলা হয়নি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে একবারও। এটিই ছিল রেড ডেভিলদের বিপক্ষে কস্তার প্রথম ম্যাচ। এক গোলে পিছিয়ে থেকে ম্যাটিচের বদলে পেদ্রোকে নামান হিডিংক। চেলসির আক্রমণের ধারটা এরপরই টের পাওয়া গেলো। ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে ৯৩% বল পজেশন চেলসির! এই বল পজেশন কাজে লাগিয়েই ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের ৯২ মিনিটে গোল করে চেলসিকে সমতায় আনেন কস্তা।