• ফুটবল, অন্যান্য
  • " />

     

    করোনাভাইরাস : ৫ লাখ ১০ হাজারে বিক্রি হলো মোনেম মুন্নার দুই জার্সি

    করোনাভাইরাস : ৫ লাখ ১০ হাজারে বিক্রি হলো মোনেম মুন্নার দুই জার্সি    

    মোনেম মুন্নার স্ত্রীর সম্বলে ছিল ৮টি জার্সি ও এক জোড়া বুট। করোনাভাইরাসের কারণে অসহায় হয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়াতে একটি জার্সি নিলামে ওঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সেটির সঙ্গে নিলামে বিক্রি হয়ে গেল আরও একটি জার্সি। আর প্রয়াত মুন্নার স্ত্রী সুরভী মোনেম বারবার বললেন একটি কথাই, "মুন্না বেঁচে থাকলে আরও করত... যদি এতেও মানুষের উপকার হয়।" 

    নিলামে উঠেছিল মোনেম মুন্নার প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ জেতা '২ নম্বর' জার্সিটি। সেটির সঙ্গে বিক্রি হয়েছে আবাহনীর হয়ে খেলার সময় মোনেম মুন্নার আরও একটি জার্সিও। অকশন ফর ফোর অ্যাকশন নামে একটি ফেসবুক পেইজ থেকে শনিবার রাতে মোট ৫ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে মুন্নার জার্সি দুইটি।

    মুন্নার জার্সি ছাড়াও ফিফার সাবেক রেফারি তৈয়ব হাসানের ম্যাচ পরিচালনা করা একটি কিটও বিক্রি হয়েছে নিলামে। ৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় সেটি কিনে নিয়েছেন সাতক্ষীরা চেম্বার অফ কমার্সের নাসিম ফারুক খান। রেফারি তৈয়ব এই কিট গায়ে ২০১৩ সালে সাফের ফাইনাল পরিচলানা করেছিলেন। নিলাম থেকে প্রাপ্ত সবগুলো জার্সির অর্থই খরচ হবে বৈশ্বিক মহামারীর কবলে পড়া দুস্থ মানুষের সেবায়।

    ফেসবুকে লাইভ নিলামের বেশিরভাগটাই অবশ্য ছিল মোনেম মুন্নাকে ঘিরে। তার স্ত্রী সুরভী মোনেম আগেই জানিয়েছিলেন, এই পরিস্থিতিতে দেশের জন্য কিছু করতে চান তিনি। আড্ডা চলার সময়ই বাংলাদেশে এইচবিসি ব্যাংকের সিইও মাহবুবুর রহমান যুক্ত হন অনুষ্ঠানে। তার অনুরোধে মুন্নার আবাহনীর ২ নম্বর জার্সিটিও বিক্রি করতে সম্মতি জানান সুরভী। পরে ২ লাখ ১০ হাজার টাকায় আবাহনীর জার্সিটি কিনে নেন জনাব মাহবুব।

    ১৯৮৯ সালে প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ লাল দল। সেই দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন মুন্না। ওই টুর্নামেন্টে মুন্নার গায়ে চড়ানো জার্সিটি ৩ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছে কার্নিভাল ইন্টারনেট নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

    জার্সি নিলাম অনুষ্ঠানে এছাড়াও যুক্ত হয়েছিলেন সাবেক ফুটবলার শেখ আসলাম, কায়সার হামিদ ও সত্যজিত দাশ রুপু। প্রায় সোয়া এক ঘন্টার লাইভে মুন্নার খেলোয়াড়ি জীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের বহু ঘটনা উঠে এসেছে তাদের গল্পে। 

    মোনেম মুন্না পেশাদার ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ১৯৮২ সালে। এরপর প্রথম বিভাগে দুই বছর মুক্তিযোদ্ধায় কাটিয়ে এক বছর ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলেন তিনি। '৮৭ তে আবাহনীতে যোগ দিয়ে এরপর ক্যারিয়ারের শেষ টানেন সেখানেই। ছিলেন জাতীয় দল ও আবাহনীর অধিনায়কও। ১৯৯৫ সালে মিয়ানমারে রয়্যাল চ্যালেঞ্জ কাপে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম আন্তজার্তিক শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। সে দলের অধিনায়ক ছিলেন মুন্না। ২০০৫ সালে কিডনি জটিলতায় মৃত্যু বরণ করেন বাংলাদেশ ফুটবলের কিংবদন্তী এই ডিফেন্ডার।