ক্রিকেট বল জীবাণুমুক্ত করার কথা ভাবছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া
ম্যাচ চলাকালে ক্রিকেট বল জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করার প্রস্তাব উঠেছে অস্ট্রেলিয়ায়। অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট বলে থুতু, লালা, ঘাম ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল আগে, এরপর চলতি সপ্তাহে এই বিষয়টিকে আইনে রূপান্তরের সুপারিশ করেছে আইসিসির ক্রিকেট কমিটি। এবার করোনা পরবর্তী সময় ক্রিকেট বলের মাধ্যমে ভাইরাস বিস্তারের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে ক্রিকেট বলও ম্যাচ চলাকালে কিছু সময় পরপর জীবাণুমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সায়েন্স এবং মেডিসিন বিভাগের প্রধান অ্যালেক্স কন্টুরিসের মতে, করোনাভাইরাসের ব্যাপারে প্রতিদিনই নতুন তথ্য হাতে আসছে তাদের। আর সেগুলোর ভিত্তিতে ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড় এবং সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত আরও অনেক পদক্ষেপ আসবে। আর সেই পদক্ষেপগুলোর একটি হিসেবে তিনি ক্রিকেট বলকে সর্বক্ষণ জীবাণুমুক্ত রাখার ওপর জোর দিয়েছেন, “বল জীবাণুমুক্ত করার ব্যাপারটি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। জীবাণুমুক্ত করা হলে বলের কার্যকারীতার ওপর কোনও প্রভাব পড়বে কিনা তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত নই, কারণ এই বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনও পরীক্ষা চালানো হয়নি। যেহেতু ক্রিকেট বল চামড়ার তৈরি, তাই এর মাঝে বেশ সুক্ষ্ম ফাটল থাকে, তাই জীবাণুমুক্ত করাটা কতটা কার্যকর হবে তা দেখার বিষয়। আর এটা করার অনুমতি দেওয়া হবে কিনা তাও অনিশ্চিত। অন্য আরও অনেক বিষয়ের মতো এটিও এখনও ভাবনার পর্যায়েই রয়েছে।”
ক্রিকেট আবারও মাঠে নামানোর আগে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট সুরক্ষাজনিত বিষয়গুলো নিয়ে শতভাগ নিশ্চিত হতে চায়। আর সবকিছু ঠিকঠাক করতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে বলেও জানিয়েছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার এই কর্মকর্তা, “অন্যান্য দেশগুলো খুব সম্ভবত আমাদের আগে খেলতে নামবে। সুতরাং আমাদের হাতে আইসিসির সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর মতো যথেষ্ট সময় আছে। ঘাম, লালা এবং বলের মতো বিষয়গুলো শুধু ঝুঁকির একটি দিক, এরকম আরও অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সামাজিক দূরত্ব, ক্রিকেট খেলার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রত্যেকের জন্য পৃথক হওয়ার মতো সব বিষয়গুলো নিয়ে চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। তাই আমরা সময় নিয়ে আইসিসির সঙ্গে মিলে বিষয়গুলো নিয়ে আরও কাজ করব। এরপরই কমিউনিটি এবং এলিট পর্যায়ের ক্রিকেটের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এলিট পর্যায়ের ক্রিকেটে খেলোয়াড়রা ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ব্যবহার করেই খেলেন, তবে এই বিষয়টির বাস্তবায়ন কমিউনিটি ক্রিকেটে চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। এছাড়া বহু বছর ধরে বোলারদের মাঝে আঙ্গুলে থুতু লাগিয়ে তারপর বল ধরার অভ্যাস তৈরি হয়েছে, আর এই অভ্যাসগুলোতে পরিবর্তন আনা সময়সাপেক্ষ বলে মনে করেন কন্টুরিস, “এসব নতুন নিয়ম-কানুনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পর্যাপ্ত অনুশীলন করতে হবে। এরপরও এই নিয়মগুলো মানার ক্ষেত্রে ভুল-ত্রুটি হতে পারে। সবকিছু ঠিকমতো হয়ে যাবে, কোনও ভুল হবে না এমনটা হওয়া কঠিন। তাই আমরা চেষ্টা করব যাতে বেশিরভাগ বিষয়ে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি এবং তা প্রয়োগ করতে পারি, তাহলেই ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে।”