যে কারণে আকরামের বিচারে টেন্ডুলকার পঞ্চম সেরা
আশি-নব্বইয়ের দশকে ব্যাটসম্যানদের জন্য ত্রাস ছিলেন ওয়াসিম আকরাম। তার গতি, সুইং আর বৈচিত্র্য সামলাতে গিয়ে রীতিমত নাকাল হতেন ব্যাটসম্যানরা তখন। তবে এমন ব্যাটসম্যানও ছিলেন সে যুগে, যারা ‘সুলতান অফ সুইং-কেও খুব একটা তোয়াক্কা করতেন না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আকরাম নিজে যেই ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে খেলেছেন, যাদের বিপক্ষে বোলিং করতে গিয়ে তাকেও বিপাকে পড়তে হয়েছে, তেমন ৫ জনকে ক্রম অনুযায়ী বেঁছে নিয়েছেন তিনি। সেই তালিকায় শচীন টেন্ডুলকারকে ৫ নম্বরে রেখেছেন এই কিংবদন্তি পেসার।
গত বুধবার ওয়াসিম আকরাম তার পাকিস্তানি সতীর্থ বাসিত আলির ইউটিউব শো-তে এসেছিলেন। সেখানেই আকরাম নিজের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষের নাম উল্লেখ করেন। তালিকার শীর্ষে সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তি স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসকে রেখেছেন তিনি, “ভিভ রিচার্ডসের মতো অতুলনীয় টেকনিক, কারিশমা এবং খেলার ওপর প্রভাব আর কারও ছিল না। আমি আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে নিয়ে ২০০০-এর পরেও বিশ্বের সব বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে খেলেছি, তবে ভিভ রিচার্ডসের ব্যাপারটাই আলাদা।”
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে সাবে কিউই অধিনায়ক মার্টিন ক্রো-কে রেখেছেন আকরাম, “ক্রো-র দারুণ টেকনিকের কারণে আমি তাকে দ্বিতীয় স্থানে রাখব। আমরা যখন খেলতাম তখন রিভার্স সুইং কীভাবে খেলতে হয় সেটাই জানা ছিল না বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানের, অথচ সে আমাদের সাবলীলভাবে খেলত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আমাদের একটি টেস্ট সিরিজ ছিল, যেখানে ওয়াকার ইউনিস ৩ ম্যাচে ৩০ উইকেট নিয়েছিল। আমি ১ ম্যাচ এবং আরেক ম্যাচের অর্ধেক খেলে ১৬ উইকেট নিয়েছিলাম, এরপর চোটের কারণে সেই সিরিজে খেলতে পারিনি আর। ঐ সিরিজে ক্রো-ই একা লড়াই করছিল, দুটি সেঞ্চুরি করেছিল সে।”
এরপরের স্থানে আরেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার নাম উল্লেখ করেছেন তিনি, “তিন নম্বরে আমি ‘দ্য প্রিন্স’ ব্রায়ান লারাকে রাখব। সে দারুণ ব্যাটসম্যান ছিল। তার খেলার ধরন ভিন্ন ছিল, তাই তাকে বোলিং করাটাও কঠিন ছিল। সে উইকেটের সামনে এক জায়গায় স্থির হত না, তার ব্যাট বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে নেমে আসত, এর ফলে তাকে বল করা বেশ কঠিন ছিল।”
চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে ইনজামাম-উল-হক ও শচীনকে রেখেছেন আকরাম। তাদের দুজনের বিপক্ষেই খুব বেশি বোলিং করার সুযোগ হয়নি বলেই তাদের তালিকার চার এবং পাঁচে রেখেছেন তিনি, “ আমি টেন্ডুলকারকে এই তালিকা থেকে আলাদা করেই রাখতে চাই। কারণ আমি এবং ওয়াকার তার বিপক্ষে অন্তত ১০ বছর টেস্ট খেলিনি। সে ১৯৮৯ সালে ১৬ বছর বয়সে পাকিস্তানে এসেছিল আর তারপর তার বিপক্ষে খেলেছি ১৯৯৯ সালে। শারজায় ওয়ানডেতে তার বিপক্ষে বোলিং করেছি, তবে টেস্ট ক্রিকেট ভিন্ন বিষয়। নিঃসন্দেহে সে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান, তবে যেহেতু আমি বোলার হিসেবে আমার সেরা সময়ে তার বিপক্ষে বোলিং করতে পারিনি, তাই তার ব্যাটিং বিচার করাটা আমার জন্য কঠিন।”