রোনালদো-দিবালা পথে ফেরালেন জুভেন্টাসকে
ফুলটাইম
বোলোনিয়া ০-২ জুভেন্টাস
কোপা ইতালিয়ায় হতাশ করলেও, সিরি আ-তে ফিরতেই চেহারা পালটালো জুভেন্টাসের। প্রথম ৩৬ মিনিটের ভেতর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো আর পাউলো দিবালার গোলে স্বস্তি পেয়েছিল বিয়াঙ্কোনেরিরা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে আর গোল করতে না পারলেও জয়টাই হয়ত মুখ্য হত। তবে দানিলো লাল কার্ড দেখে কিছুটা আক্ষেপ যোগ করেছেন জুভেন্টাসের। তবে সিরি আ-তে টানা ৪ ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে লিড ৪ পয়েন্টে নিয়ে গেছে জুভেন্টাস (৬৬)। দুইয়ে থাকা লাৎসিওর হাতে অবশ্য এক ম্যাচ বেশি রয়েছে।
বোলনিয়ার বিপক্ষে জুভেন্টাসের মতো হতাশা ভুলেছেন রোনালদোও। ম্যাচের একেবারে শুরুতেই বক্সের ভেতর থেকে গোলে শট করে বোলোনিয়ার লুকাস স্করপস্কিকে দারুণ এক সেভ করতে বাধ্য করেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। এরপর ২৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে অনেক অপেক্ষার গোলটি পেয়ে যান তিনি। ম্যাথিয়াস ডি লিটকে মার্ক করতে গিয়ে বক্সের ভেতর ফেলে দিয়েছিলেন বোলোনিয়ার দুই ডিফেন্ডার। সেখান থেকেই পেনাল্টি পায় জুভেন্টাস। স্পটকিক থেকে সোজাসুজি বল মেরেই গোল পেয়ে যান রোনালদো।
অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতিতে রোনালদোকে গোল পেতে অপেক্ষা করতে হলো ১২১ দিন। কোপা ইতালিয়ার আগের দুই ম্যাচে পুরো ১৮০ মিনিট খেললেও গোল পাওয়া হয়নি তার। স্পোর্টিং লিসবনের হয়ে শুরু করার পর পর ক্যারিয়ারে এর আগে সর্বোচ্চ ১২০ দিন গোলবঞ্চিত ছিলেন রোনালদো।
প্রথমার্ধেই অবশ্য রোনালদোর কাছ থেকে আলো কেড়ে নিয়েছিলেন দিবালা। নিজে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন আর্জেন্টাইন। আগের দুই ম্যাচে রোনালদোর মতো ছিলেন ছায়া হয়ে। সেই দিবালা ৩৬ মিনিটে হাসলেন ট্রেডমার্ক গোলে। ফ্রেডেরিকো বের্নাদেস্কি দারুণ এক পাস দিয়েছিলেন দিবালাকে। বক্সের ঠিক বাইরে বল পেয়ে এক ডিফেন্ডারকে ছিটকে দিয়ে, বাম পায়ের নিখুঁত শটে টপ কর্নারে বল জড়ান দিবালা, জুভেন্টাসও পেয়ে যায় দুই গোলের লিড।
এই লিডটা বাড়ানোর সুযোগ দ্বিতীয়ার্ধে অন্তত আরও দুইবার পেয়েছিলেন রোনালদো। এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে আড়াআড়ি বল জড়াতে গিয়ে একবার লক্ষ্য মিস করে গেছেন। আরেকবার ৮০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে রোনালদোর বাম পায়ের নিচু শট অল্পের জন্য চলে গেছে বাইরে দিয়ে। শেষদিকে আরেকবার বল জালে জড়ালেও অফসাইডের জড়িয়ে আর গোল পাওয়া পায়নি রোনালদোর।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে জুভেন্টাসের লিড বাড়ানোর সবচেয়ে কাছাকাছি গিয়েছিলেন বের্নাদেস্কি। তিনিও বক্সের বাইরে থেকেই শট নিয়েছিলেন। তার বাম পায়ের জোরালো শট বোলোনিয়ার বারপোস্ট কাঁপিয়ে গেলে আর এগিয়ে যাওয়া হয়নি জুভেন্টাসের। বোলোনিয়া পুরোটা সময় চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল ম্যাচে ফেরার। তবে জুভেন্টাস দেখিয়েছে তাদের ক্ল্যাসিক রূপ। খুব একটা মাথা না ঘামিয়ে বাকি সময়ে রক্ষণের স্বাভাবিক কাজগুলো ঠিকঠাক করে জয় নিশ্চিত করেছে মাউরিসিও সারির দল।
জুভেন্টাস সঙ্গী হয়েছে আরও একটি ক্লিনশিটও। নড়বড়ে শুরুর পর ভোজায়িক সেজনির জন্য সেটা তৃপ্তিদায়ক। তবে ম্যাচের শেষটা সারির জন্য ভালো হয়নি। শুক্রবার লেচ্চের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে তাকে নতুন করে ভাবতে হবে লেফটব্যাক পজিশন নিয়ে। অ্যালেক্স সান্দ্রো চোটের কারণে এই ম্যাচে ছিলেন না। তার জায়গায় নামা মাতেও ডি শিলিও ৬৬ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। তা জায়গায় নামা নামা দানিলো ৮ মিনিটের ব্যবধানে দুই হলুদ কার্ড দেখে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেছেন যোগ করা সময়ে। আপাতত তাই জুভেন্টাসে কোনো জাত লেফটব্যাকই হাতে নেই সারির। শিরোপার লড়াই যখন ইতালিতে রোমাঞ্চ ছড়াচ্ছে তার আগে ৪ পয়েন্টের লিড নিয়েও তাই পুরোপুরি স্বস্তি পাচ্ছে না জুভেন্টাস।