ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে শক্ত হওয়ার পরামর্শ দিলেন মমিনুল ও পুজারা
গত মার্চ থেকে করোনার কারণে ঘরবন্দি পুরো পৃথিবীর মানুষ। একটু একটু করে কয়েকটি দেশে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়াতে ঘর থেকে বের হতে পারছে কিছু মানুষ। অনেক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে ফুটবল মাঠে ফেরানো গেছে। আগামী ৮ জুলাই ক্রিকেটও ফিরছে ইংল্যান্ড-সিরিজ দিয়ে। তবে দক্ষিণ এশিয়াতে করোনা পরিস্থিতি এখনও বেশ জটিল অবস্থায় রয়েছে। তাই বাংলাদেশসহ ভারত, পাকিস্তানের মতো দেশগুলোতে দ্রুতই ক্রিকেট মাঠে ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আর এমন অবস্থায় ঘরের চার দেওয়ালের মাঝে দীর্ঘ সময় অবস্থান করাটা এই দেশগুলোর পেশাদার ক্রিকেটারদের জন্য নানা কারণে কঠিন হয়ে উঠছে। বিশেষভাবে মানসিক দিক দিয়ে এই প্রতিকূল সময়ে নিজেদের চাঙ্গা রাখাটা একটি চ্যালেঞ্জই বটে। বাংলাদেশ অধিনায়ক মমিনুল হকও মনে করেন, খেলোয়াড়দের এই সময়ে নিজেদের মানসিকভাবে শক্ত হওয়াটা জরুরী।
ক্রিকইনফোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এই বিষয়টিতে জোর দেন মমিনুল, “পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে সবসময় ব্যাট-বলের সঙ্গে থাকাটা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তাই বর্তমান সময়ে যখন আমরা খেলতে পারছি না, দুই-তিন মাস ধরে কার্যত গৃহবন্দি, তখন আমাদের মানসিকভাবে শক্ত হওয়া ছাড়া উপায় নেই। আমাদের এই সময়ে ফিটনেসের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে, সপ্তাহে অন্তত ৫-৬ দিন ওয়ার্কআউট করতে হবে। আর সর্বোপরি কীভাবে নিজেদের মানসিক দিক দিয়ে শক্তিশালী করা যায় সেটি ভাবতে হবে।”
এক্ষেত্রে মানসিকভাবে নিজেকে ঠিক রাখতে মমিনুল নিজে কী করছেন এই লকডাউনে সেটিও জানিয়েছেন সবাইকে, “আর এখন আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে আছি, তবে আগামী বছর সব আবার ঠিক হয়ে গেলে এমনও হতে পারে যে আমরা ব্যস্ত সূচির কারণে দম ফেলার ফুরসৎ পাব না। তাই এখনকার অলস সময়টা নিজেদের ভালোর জন্য ব্যবহার করতে পাড়ি আমরা। এই সময়ে সফল ব্যক্তিত্বদের জীবনের ওপর লেখা বই পড়া যায়, মোটিভেশনাল ভিডিও দেখা যায় এবং পবিত্র কুরআন পাঠ করা যায়। সময় সঠিকভাবে ব্যয় করতে হবে।”
ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটার চেতেশ্বর পুজারার জন্য তো এই অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতি আরও দীর্ঘ। যেহেতু বর্তমানে শুধু টেস্ট ফরম্যাটেই খেলছেন পুজারা সেজন্য প্রায় ১০ মাসের বিশাল বিরতিতে রয়েছেন তিনি। শেষ ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিলেন, ভারতের পরবর্তী টেস্ট সিরিজ হওয়ার কথা আগামী ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। করোনার কারণে সবকিছু থেমে না গেলে এখন ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লচেস্টারশায়ারের হয়ে খেলতেন তিনি। তবে মহামারীর কারণে আপাতত ভারতের গুজরাটে নিজের বাসাতেই রয়েছেন, কয়েকদিন হল রাজকোটে নিজের ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে গিয়ে অনুশীলন করছেন।
ক্রিকইনফোর সঙ্গে আলাপে তিনিও দীর্ঘ বিরতিতে ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে শক্ত থাকার ওপর জোর দিয়েছেন, “মানসিকভাবে শক্তিশালী হলেই কেবল বড় বিরতির নেতিবাচক প্রভাব থেকে বাঁচা যাবে। টেস্ট ম্যাচ এমনিতেও বেশি হয় না, তাই বিরতিতে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হয়। আর আগে যখন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে বড় একটি সময় পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতাম, তখন খুব একটা সমস্যা হত না। মানসিক চ্যালেঞ্জ আমার জন্য খুব বড় কোনও বিষয়।”
“আমি মনে করি, একেক ক্রিকেটার দীর্ঘ বিরতির বিষয়টিকে একেকভাবে মোকাবিলা করছে। অনেকেই এই বিরতিতে হতাশ হয়ে পড়তে পারে, তবে আমি এটিকে শুধুই একটি ব্রেক হিসেবে দেখি। আমি চোটের কারণে দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে থেকেছি, তারপরও কামব্যাক করতে বেশি কষ্ট হয়নি। আর চোট থেকে ফেরাটা আসলে বর্তমান অবস্থা থেকে ফেরার চেয়ে নিঃসন্দেহে বেশি কঠিন।”