বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা ভাবলে 'অনুভূতিশূন্য' হয়ে পড়েন নিউজিল্যান্ড কোচ
রাত পেরুলেই এক বছর পূর্ণ হবে ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের। যে ম্যাচ নাটকীয়তাকে নিয়ে গিয়েছিল অন্য উচ্চতায়, দেখেছিল অভাবনীয় সব ঘটনা। অলৌকিক সে ফাইনালে সুপার ওভারও টাই হওয়ার পর বাউন্ডারি কাউন্টব্যাকে জিতে গিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। এক বছর পরও সে ম্যাচের কথা ভাবলে অনুভূতিশূন্য হয়ে যান নিউজিল্যান্ডের কোচ গ্যারি স্টিড। কখনও মনে হয়, এইতো একটু আগে হয়েছে সে ম্যাচ, কখনোবা মনে হয় বছর ১০ পেরিয়ে গেছে!
সুপার ওভারে ইংল্যান্ড করেছিল ১৫ রান, ম্যাচের মূল অংশে ইংল্যান্ডের বাউন্ডারি বেশি ছিল বলে নিউজিল্যান্ডকে জিততে গেলে ১৬ রানই করতে হতো। জফরা আর্চারের শেষ বলে ২ প্রয়োজন ছিল, মার্টিন গাপটিল ডাবলস নেওয়ার সময় হয়েছিলেন রান-আউট।
এর আগে শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান, যেখানে গাপটিলের থ্রো স্টোকসের ব্যাটে লেগে হয়েছিল ওভার বাউন্ডারি, যে শটে এসেছিল ছয় রান, যেটি ছিল আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত। সে ওভারে আরেকটি ছয় মেরেছিলেন স্টোকস, তবে শেষ বলে ২ রানের জায়গায় নিতে পেরেছিলেন ১ রান।
“এরপর থেকে বিশ্বে অনেক কিছুই হয়েছে। আমরা অনেক কঠিন সময় পার করেছি। ফিরে তাকালে মাঝে মাঝে মনে হয়, ১০ বছর পার হয়ে গেছে। আবার কখনও মনে হয়, মাত্র মিনিটখানেক হয়েছে। শেষ ২-১টা বল বাদ দিলে অবশ্যই এ ম্যাচ আবেগের শীর্ষে ছিল, দারুণ আবেগ”, বলেছেন স্টিড।
“আমি এটা নিয়ে ভাবি, আমার মনে হয় অনেকেরই নানা রকম আবেগ আছে এটাকে ঘিরে। তবে আমার জন্য সবচেয়ে বেশি যেটা কাজ করে, কোনও একটা দিক দিয়ে একটা অনুভূতিশূন্যতা। তবে যেভাবে টুর্নামেন্টটা খেলেছিলাম, তাতে আমরা দারুণ গর্বিত ছিলাম। একজন কিউই হিসেবে, একজন ব্ল্যাকক্যাপস সমর্থক হিসেবে যেভাবে আমরা সেই ম্যাচে খেলেছি, সেটা নিয়ে এর চেয়ে বেশি গর্বিত হওয়া যায় না আসলে।”
আরও পড়ুন- বিশ্বকাপ ফাইনাল : শুধুই একটি ক্রিকেট ম্যাচ?
তবে সে ম্যাচ এখনও তাড়া করে ফেরে তাকে, আর সবার মতই, “মাঝে মাঝে বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, আমার মনে হয় যে কোনও কিউই সমর্থকের কাছেই তাই হয়। তিক্ততা নেই কোনো এটিকে ঘিরে, আমরা জানতাম ম্যাচে কী নিয়ম আছে। তবে দুর্ভাগ্য, আমরা শেষ বাধাটা পেরুতে পারিনি। আমি নিশ্চিত, এটি ক্রিকেটারদের প্রতিদিনই আরও ভাল করতে সহায়তা করবে।”
সে ম্যাচটা এরপরও দেখেছেন, তবে পুরোটা নয়, “আমি জানি কী হয়েছিল। জানি না, দেখবো কিনা। সুপার ওভারের হাইলাইটসের মতো কিছু কিছু তো সামনে আসেই, কিন্তু অনেকবার দেখেও তো আর ফলটা বদলানো যাবে না। এরকম টানটান ম্যাচ দারুণ কিছু তৈরি করে, আর এজন্য আপনি ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডকে ধন্যবাদ দেবেন। তারা যেভাবে ম্যাচটা খেলেছে, সেজন্য।”
করোনাভাইরাস মহামারির পর শীতকালিন অনুশীলনে ফিরেছে নিউজিল্যান্ডের ছেলে ও মেয়েদের দল। কভিড-১৯ এর সঙ্গে লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ড সফল হয়েছে বেশ ভালভাবেই, তবে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সফর ও সিরিজ বাতিল হয়েছে তাদের। অবশ্য সামনে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার সেখানে সফর করার কথা আছে। তবে সেসব নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি এখনও। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ হওয়ার কথা নিউজিল্যান্ডে।
ওয়েলিংটন ও সাউথ আইল্যান্ডের ক্রিকেটাররা ক্রাইস্টচার্চের কাছে লিঙ্কনে তিনটি ক্যাম্প করছে এখন। বাকিরা অনুশীলন করবে মাউন্ট মঙ্গানুইতে।