৬ গোলের ম্যাচে আবার পয়েন্ট হারালো জুভেন্টাস
ফুলটাইম
সাসুওলো ৩-৩ জুভেন্টাস
হতাশার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে জুভেন্টাস। ১২ মিনিটের ভেতর দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরও সাসুওলোর কাছে ৩ গোল হজম করে হারার দশা হয়েছিল মাউরিসিও সারির দলের। অ্যালেক্স সান্দ্রো পরে ৬৪ মিনিটে গোল করে জুভেন্টাসকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন। শেষদিকে জুভেন্টাসের চেয়ে বরং সাসুওলোই আক্রমণে দাপট দেখিয়েছে বেশি, জুভেন্টাস গোলরক্ষক ভোজায়িক সেজনি অন্তত দুইবার গোলবঞ্চিত করে জুভেন্টাসের বিপদ আর বাড়তে দেননি।
এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ড্র করলো জুভেন্টাস। আর দুই গোলের লিড হারিয়ে ফেলার ঘটনা গত ৮ দিনের ভেতর ঘটলো দ্বিতীয়বারের মতো। তাতে অবশ্য সিরি আর পয়েন্ট টেবিলে বড় কোনো প্রভাব পড়ছে না। দুইয়ে থাকা আটালান্টার সঙ্গে জুভেন্টাসের পয়েন্ট ব্যবধান এখন ৭, লিগে বাকি আর ৫ ম্যাচ।
পয়েন্ট টেবিলের আটে থাকা সাসুওলোর মাঠে শুরুর ২০ মিনিটে এমন কিছুর ইঙ্গিতই পাওয়া যায়নি। ম্যাচের ৫ মিনিটে দানিলোর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল জুভেন্টাস। মিরালেম পিয়ানিচ কর্নার কিক নিয়েছিলেন বক্সের এক কোণায়। দানিলো ছিলেন জায়গামতো। ডান পায়ের জোরালো শটে ব্রাজিলিয়ান চমকে দিয়েছিলেন সাসুওলো গোলরক্ষককে।
১২ মিনিটে দ্বিতীয় গোলেও আছে পিয়ানিচের অবদান। গঞ্জালো হিগুয়াইন সাসুওলোর ডিফেন্স লাইনের পেছনে দৌড় শুরু করেছিলেন, পিয়ানিচ মিডফিল্ড থেকে তাকে খুঁজে নিয়েছেন নিখুঁত এক পাসে। বক্সের ভেতর ঢুকে হিগুয়াইন এরপর দারুণ ফিনিশে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
ওই পর্যন্ত ম্যাচের পুরোটাই ছিল জুভেন্টাসময়। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো গোলরক্ষকের এগিয়ে আসার সুযোগ নিয়ে সাইডলাইনের কাছ থেকে সরাসরি দারুণ এক গোল করতে পারতেন। কিন্তু সাইডনেটে বল মেরে আর ব্যবধান বাড়ানো হয়নি রোনালদোর।
২৫ মিনিটের পর থেকে জুভেন্টাসের রক্ষণে ভীতি ছড়াতে শুরু করে সাসুওলো। ২৯ মিনিটে সাসুওলোর প্রথম গোলের আগে আরও দুইবার সেজনিকে ভালো দুইটি সেভ করতে হয়। তবে তৃতীয় দফায় আর রক্ষা হয়নি তার। ফিলিপ দুরিচিচ গোলের ১০ গজ দূর থেকে টপ কর্নারে বল জড়িয়ে সাসুওলোকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন।
বিরতি শেষে খেলা শুরুর ১০ মিনিটের ভেতরই আরও দুই গোল দিয়ে চমক লাগিয়ে দেয় সাসুওলো। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে পাওয়া ফ্রি-কিক থেকে সরাসরি দুর্দান্ত এক গোল করে স্কোরলাইন ২-২ করেন ফেদেরিকো বেরাদি। বাম পায়ের বাঁকানো শটে সেজনিকে কোনো সুযোগই দেননি তিনি। মিনিট তিনেক পর আরও একবার লন্ডভন্ড জুভেন্টাসের রক্ষণ। ম্যাথিয়াস ডি লিটের সঙ্গে এদিন শুরুতে নেমেছিলেন জর্জিও কিয়েলিনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কিয়েলিনির বদলে মাঠে নামেন দানিয়েলে রুগানি। এই জুটি ম্যাচের বেশিরভাগ সময়ই পার করেছে সাসুওলোর চাপে থেকে।
বেরাদির ডান পাশ থেকে করা ক্রসে, দূরের পোস্টে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন ফ্রাঞ্চেস্কো কাপুতো। এক টোকায় বল জালে ঢুকিয়ে দিয়ে সাসুওলোকে প্রথমবারের মতো লিড এনে দেন তিনি।
সারির এরপর দ্রুত পরিবর্তন আনেন। পিয়ানিচ, হিগুয়াইনকে বসিয়ে আদ্রিয়ান রাবিও ও পাউলো দিবালাকে নামিয়ে দেন তিনি। এই দুই বদলি শেষ পর্যন্ত কাজেই দিয়েছে জুভেন্টাসের। দিবালা আক্রমণে ধার বাড়িয়েছেন। আর রাবিও তো মাঠে নামার পর প্রথম হেডেই গোল করে বসতে পারতেন। জুভেন্টাসের সমতাসূচক গোল এসেছে হেডেই। কর্নারের পর কাছের পোস্টে সান্দ্রোর হেড জালে জড়িয়েছিল।
সিরি আতে শেষ ৬ ম্যাচের প্রত্যেকটিতে গোল করা রোনালদো অবশেষে থেমেছেন সাসুওলোর মাঠে। যদিও সমতায় থাকা ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে তার শট সাসুওলো গোলরক্ষক ঠেকিয়ে না দিলে অন্যরকমও হতে পারত ম্যাচের ভাগ্য। ম্যাচ সমতায় শেষ হওয়ার পেছনে অবশ্য সাসুওলোর চেয়ে জুভেন্টাসের গোলরক্ষকেরই কৃতিত্ব বেশি। আহমেদ ট্রায়োরে আর কাপুতোর দুইটি নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে দিয়েছেন তিনি। পুরো ম্যাচে সেজনি মোট সেভ করেছেন ৭টি, জুভেন্টাস গোলরক্ষক হিসেবে এক ম্যাচে এতোগুলো সেভ সবশেষ করেছিলেন জিয়ানলুজি বুফন, সেটাও ২০১৪ সালে।