মুস্তাফিজকে ভোলেন নি কোহলি
অভিষেক ওয়ানডেতেই পাঁচ উইকেট, পরেরটিতে ছয়! উনিশ বছরের এক তরুণে নাকাল বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি ক্রিকেট দলের ব্যাটিং লাইন আপ! বাংলাদেশের কাছে প্রথমবারের মতো সিরিজ হারের স্বাদটা ভারতকে পেতে হয়েছিল মূলত মুস্তাফিজুর রহমানের কারণেই। বছর ঘুরে যখন আবার মুখোমুখি দু’ দল, ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক বিরাট কোহলির লম্বা বয়ানেই স্পষ্ট যে বাংলাদেশের নতুন আবিষ্কারে পর্যুদস্ত হওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা ভোলেন নি তিনি, ভোলে নি তাঁর দল।
চোটের কারণে কাল থেকে শুরু হওয়া এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে অনিশ্চিত ভারতীয় দলের নিয়মিত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির অংশগ্রহণ। টুর্নামেন্টপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তাই দলের প্রতিনিধি হয়ে এলেন বিরাট কোহলি।
দু’ দলের মধ্যকার সর্বশেষ দ্বিপাক্ষিয় সিরিজে স্পষ্টতই ব্যবধান গড়ে দেয়া মুস্তাফিজের প্রসঙ্গটা এসেছিল অবধারিতভাবেই। আর তাতে কোনরূপ কূটনৈতিক জবাবের আশ্রয় না নিয়ে সরাসরিই বাংলাদেশী তরুণ পেসারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান, “গত এক বছর ধরে মুস্তাফিজ সত্যিই খুব ভালো করছে। ১৯ বছরের একজন তরুণকে এভাবে বোলিং করতে দেখাটা রোমাঞ্চকরই ছিল।’
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে কোহলি নিজে একবারও মুস্তাফিজের শিকার হন নি। কিন্তু তাঁর দলের বাকি সদস্যরা কিভাবে নাকাল হয়েছেন তরুণ পেসারের কাছে সেটা ভোলেন নি ভারতের বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক, “আমাদের জন্য সে এক ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতাই ছিল বলতে হবে। ১৪০ কিমির আশেপাশে গতির সঙ্গে স্লোয়ার বল করছিল। নতুন বলেও সে খুব ভালো স্লোয়ার ও কাটার করছিল।”
কোহলি মনে করছেন এবারের এশিয়া কাপেও বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে উঠবেন মুস্তাফিজ, “বাংলাদেশের মতো কন্ডিশনে একজন বোলার অভিষেকেই ৪-৫ উইকেট পাচ্ছে, পুরোটা সময়জুড়ে ব্যাটসম্যানদের বিপাকে ফেলছে। এর মানে হল তাঁর মধ্যে আসলেই আলাদা কিছু আছে। এজন্য ওকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। সত্যিই অসাধারণ করছে ছেলেটা। এই টুর্নামেন্টেও সে বিরাট ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে দাঁড়াবে।”
তবে হুমকি নয়, একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে মুস্তাফিজের মতো বোলারদের আগমনকে বৃহত্তর দৃষ্টিকোণে ক্রিকেটের জন্যই লাভজনক বলছেন কোহলি, “ও খেলাটার ঝাঁঝ বাড়িয়ে দিয়েছে। দ. আফ্রিকার রাবাদাও তেমনি একজন বোলার। এ ধরণের বোলার পাওয়াটা আসলে ক্রিকেটের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ যারা কিনা ব্যাটসম্যানদেরকে বিপদে ফেলতে পারে যেকোনসময়। এর ফলে খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ে। একজন ব্যাটসম্যানের জন্যও এটা খুব রোমাঞ্চকর ব্যাপার। কারণ আপনাকে তখন নতুন কিছু নিয়ে আসা ওই একজন বোলারের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নিতে হয়।”
ক্রিকেটীয় প্রসঙ্গের বাইরে কোহলিকে ঢাকার ট্র্যাফিক জ্যাম নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কোহলি জানান, জ্যামের চেয়েও তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ‘ডিউ ফ্যাক্টর’, “ট্র্যাফিকের চেয়ে আমরা ক্রিকেটীয় কন্ডিশন নিয়েই বেশী চিন্তিত। উইকেট অনেক সময় খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়, শিশিরের কারণে একটা ম্যাচ পুরোপুরি একপেশে হয়ে যেতে পারে।...জ্যামের কথা যদি বলেন, ওই সময়টা না হয় বাসে ঘুমিয়েই কাটাবো!”