সাউদাম্পটন – রূপকথার গল্প নাকি দক্ষ পরিকল্পনা?
ফুটবলের খোঁজখবর যারা নিয়মিত রাখেন না, তারা প্রিমিয়ার লীগ টেবিলের দিকে তাকালে একটু চমকে যেতে পারেন। কারণ টেবিলের ২য় স্থানে থাকা দলটির নাম শুনে, সাউদাম্পটন এফসি। ম্যান সিটি, আর্সেনাল, লিভারপুল, ম্যান ইউনাইটেড এর মত লীগের বাঘা বাঘা সব দলগুলোকে টপকে চেলসির পরেই তাদের অবস্থান। এখন পর্যন্ত লীগে ১১ ম্যাচে দারুণ খেলে তারা প্রমাণ করে দিয়েছে তারা শীর্ষস্থানের দলগুলোকে টক্কর দিতেই লড়াই করছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠতে পারে, সাউদাম্পটনের এই উত্থান কেন রূপকথা হবে? এর উত্তর পেতে হলে একটু পেছনে ফিরে তাকাতে হবে।
দুঃস্বপ্নের ইতিবৃত্ত :
১৫ মে,২০০৫ সাল, ২৭ বছর প্রিমিয়ার লীগে থাকার পরে ওইদিনে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে ২-১ গোলে হেরে ২য় বিভাগ– ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশীপে অবনমিত হয়ে যায় সাউদাম্পটন। এতেই তাদের দুর্দশার সমাপ্তি হয়নি। এই অবনমন পুরো ক্লাবকে এক সজোরে ধাক্কা দেয়। এর পরে দলকে ঢেলে সাজানোর জন্য দলের তৎকালীন চেয়ারম্যান রুপার্ট লো পদত্যাগ করেন। তার স্থলাভিষিক্ত চেয়ারম্যানও যখন কয়েকমাস পরে পদ ছাড়তে বাধ্য হন। দলীয় ম্যানেজম্যান্টের এই ব্যর্থতা আর তার সাথে সাথে ঘন ঘন কোচ পরিবর্তনে দলের পারফর্মেন্স আরো খারাপের দিকে যেতে থাকে। ২০০৮-’০৯ মৌসুমে ২য় বিভাগ থেকেও অবনমিত হয়ে ৩য় বিভাগ – লীগ ওয়ানে নেমে যায় সেইন্টসরা।
প্রত্যাবর্তনের সূত্রপাত :
একটি ক্লাবের জন্য পতনের শেষ সীমা “লিকুইডাইজেশন”। যদি ক্লাবের মালিকপক্ষ দেউলিয়া হয়ে যায় আর ক্লাব টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়, তখন ওই ক্লাবটি “লিকুইডাইজেশন” এর কবলে পরে আর মোট পয়েন্ট থেকে ১০ বাদ দিয়ে দেওয়া হয় শাস্তিস্বরূপ। সেই লিকুইডাইজেশনের কবলে প্রায় পড়তে চলেছিল ক্লাবটি। কিন্তু শেষ মুহুর্তে মারকুস লিবহের নামের এক জার্মান ক্লাবটি কিনে নেন। বর্তমান নিউক্যাসেল ইউনাইটেড এর ম্যানেজার অ্যালান পারডিউকে দেওয়া হয় ম্যানেজারের দায়িত্ব। তার অধীনে ৩য় বিভাগে রানার আপ হয়ে ২য় বিভাগে উঠে আসা তারা। কিন্তু এরপরে ক্লাবের সাথে বনিবনা না হওয়ায় ক্লাব ছেড়ে যান তিনি। এর পরে দায়িত্ব দেয়া হয় নাইজেল এডকিন্সকে। তিনি এই সাউদাম্পটন দলটিকে ২য় বিভাগের চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে আবার ফিরিয়ে আনেন প্রিমিয়ার লীগে।