• ক্রিকেট, অন্যান্য
  • " />

     

    অবসরে যাচ্ছেন ইয়ান বেল

    অবসরে যাচ্ছেন ইয়ান বেল    

    পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় বলছেন সাবেক ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান ইয়ান বেল। এ মৌসুম শেষে ওয়ারউইকশায়ারের হয়ে আর খেলবেন না তিনি। রবিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ বব উইলিস ট্রফিতে গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে শেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচের পরের সপ্তাহে ভাইটালিটি ব্লাস্টে নিজের শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবেন বলে শনিবার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। 

    গত জুলাইয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত এজবাস্টনের কাউন্টির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছিলেন বেল। তবে এ মৌসুমটা সুবিধার যাচ্ছে না তার। বেল তার বিবৃতিতে বলেছেন, “আমি যে ক্লাবকে ভালবাসি, তাদের জন্য প্রাপ্য যে পর্যায়ের খেলা, সেরকম না খেলতে পেরে তাদের অসম্মান করার কোনও মানে হয় না।” 

    ২০০৪ সালে ওভালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল বেলের। ১১৮ টেস্ট ম্যাচে করেছেন ৭৭২৭ রান, ৪২.৬৯ গড়ে, ২২টি সেঞ্চুরি ও ৪৬টি ফিফটিতে। টেস্টে তার চেয়ে বেশি রান আছে আর ৮ জন ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানের। 

    ক্যারিয়ারে ৫টি অ্যাশেজ জিতেছেন বেল, এর মাঝে ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের সিরিজসেরা হয়েছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের অন্যতম হাইলাইটস হিসেবে সে সিরিজের ৩ সেঞ্চুরির কথাকেই বলেন তিনি।অ্যান্ড্রিউ স্ট্রাউসের অধিনায়কত্বে এক নম্বরে ওঠা ইংল্যান্ড দলেরও সদস্য ছিলেন বেল, জিতেছিলেন ভারতের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজ। নিজের বার্তায় এসব সিরিজের কথা আলাদাভাবে বলেছেন ‘টেকনিক্যালি সাউন্ড’ শব্দজোড়ার অন্যতম বাহক এই ব্যাটসম্যান। 

    ওয়ানডেতে অইন মরগান ও জো রুটের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ রান বেলের। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ বিপর্যয়ের পর আর এ ফরম্যাটে খেলা হয়নি তারও। 

    সে বছর আরব আমিরাত সফরে ইংল্যান্ডের হয়ে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। ৬ ইনিংসে ১ ফিফটি যথেষ্ট হয়নি তার, এরপর আর টেস্টে সুযোগ পাননি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করেছেন ঠিকই, ২০১৮ সালে টেস্ট দলে তার প্রত্যাবর্তন নিয়ে কথা উঠলেও ফেরা হয়নি তার। 

    “যে খেলাটা ভালবাসি, তার প্রতি আমার ক্ষুধা আর আগ্রহটা সবসময়ের মতোই আছে, তবে যে পর্যায়ে খেলতে চাই, তার চাহিদা আমার শরীর মেটাতে পারছে না”, নিজের বিদায়ের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন বেল। 

    সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৩১১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ২০৩০০ রান করেছেন তিনি, আছে ৫৭টি সেঞ্চুরি।
     

    “আমি যে ক্লাবকে ভালবাসি, তাদের জন্য প্রাপ্য যে পর্যায়ের খেলা, সেরকম না খেলতে পেরে তাদের অসম্মান করার কোনও মানে হয় না।”


    বেল লিখেছেন, প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পাওয়ার কথা ক্যারিয়ারজুড়ে, “ইংল্যান্ড এবং ওয়ারউইকশায়ার-- উভয়ের হয়ে খেলার ছেলেবেলার স্বপ্ন পূরণ হওয়াটা সত্যি সম্মানের একটা ব্যাপার। ছোট থাকতে এই দুইয়ের হয়ে একবার খেলতে পারলেই খুশি থাকতাম, তবে ২২ বছর ধরে এই কাজ করে আসাটা আমার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কিছু।

    নিজের বিবৃতির শুরুতেই বেল বলেছেন অবসর নিয়ে চিরন্তন সত্যটা, “সবাই যখন বলে যে নিজের সময় আসলে ঠিকই বুঝা যায়, ব্যাপারটা আসলেই সত্যি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমার সময় চলে এসেছে।

    “গভীর দুঃখ, কিন্তু বিশাল গর্ব নিয়ে আমি আমার পেশাদার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি।”

    বেলের অবসর দিয়ে ওয়ারউইকশায়ারের সঙ্গে শেষ হলো ইংল্যান্ডেরও একটা অধ্যায়। ২০০৫ সালের ঐতিহাসিক অ্যাশেজে খেলা ইংলিশ ক্রিকেটারদের মাঝে শেষজন হিসেবে পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় বলছেন বেল। সে অ্যাশেজে খেলা অস্ট্রেলিয়ানরাও সবাই অবসরে গেছেন। 

    এর আগেই নিজের কোচিং ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে বেলের, গত অ-১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড লায়নসের ব্যাটিং কোচেরও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। খেলা ছাড়ার পর কোচিংয়ের সঙ্গেই সম্পৃক্ত থাকতে চান তিনি।