দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ডকে সরে যেতে বলেছে সরকার
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ড ও এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বলেছে সে দেশের সরকার। দেশটির সব ধরনের খেলাধুলার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘সাউথ আফ্রিকান স্পোর্টস কনফেডারেশন অ্যান্ড অলিম্পিক (এসএএসসিওসি)’ কমিটি এ নির্দেশ দিয়েছে; তাদের মতে ‘২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে বোর্ডে চলা অব্যবস্থাপনা ও বিশৃংখলার’ অভিযোগে। এ সংবাদ নিশ্চিত করেছে ক্রিকবাজ, ক্রিকইনফো।
এ নির্দেশ আইসিসির কোড অফ কন্ডাক্টে ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপের আওতার মধ্যে পড়ে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। তবে তেমন হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রিকেট থেকে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিষিদ্ধ করতে পারে আইসিসি। এর আগে জিম্বাবুয়েকে একই কারণে নিষিদ্ধ করেছিল আইসিসি, যদিও জিম্বাবুয়ে পরে ফিরে পেয়েছিল সদস্যপদ।
কার্যত এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশটির ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছে সেই অলিম্পিক কমিট। রিপোর্ট অনুযায়ী, মঙ্গলবার মিটিংয়ে সর্বসম্মতক্রমে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসএএসসিওসি, যাদের মতে “ক্রিকেট বোর্ড দেশের ক্রিকেটকে বিতর্কিত করেছে”। এখন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে, যারা এক মাসের মাঝে রিপোর্ট দেবে। তবে আপাতত ক্রিকেট বোর্ড চালানোর জন্য সরকার ছাড়া কেউ থাকবে না।
“সিএসএ (ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার) বোর্ড ও সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা যারা বোর্ডে দায়িত্বরতদের (কোম্পানির সেক্রেটারি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী, সিএফও, সিওও) সিএসএর দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বলা হচ্ছে”, বোর্ডকে দেওয়া চিঠিতে লেখা হয়েছে এমন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল সিএসএ-র প্রধান নির্বাহী থাবাং মোরোকে। সম্প্রতি ‘মারাত্মক অসদাচরণ’-এর দায়ে তাকে পাকাপাকি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে যে ‘ফরেনসিক রিপোর্ট’-এর ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটি প্রকাশ্যে আনেনি ক্রিকেট বোর্ড।
নিজেদের নেওয়া সিদ্ধান্তের পেছনে এই রিপোর্ট না দেখতে দেওয়ার কথাও বলেছে অলিম্পিক কমিটি, “এসএএসসিওসি এসব ব্যাপার দুটি মিটিংয়ে বলার চেষ্টা করেছে সিএসএ বোর্ডকে। এর মাঝে একটি তদন্তাধীন, আর আরেকটি মূলত ব্যর্থ হয়েছে কারণ সিএসএ ফানডুডজি ফরেনসিক রিপোর্ট প্রতিজ্ঞা সত্ত্বেও দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায়।”
“সিএসএ আমাদের চিঠি পেয়েছে, যাতে বোর্ডের সিদ্ধান্ত বলা আছে যে, বর্ণিত রিপোর্টটি শুধুমাত্র সীমিত পরিসরে প্রেসিডেন্ট ও এসএএসসিওসির বোর্ড সদস্যদের দেখানো হবে, যেটি এই রিপোর্টের প্রকৃতি ও পরিসর বিবেচনায় আনলে পুরোপুরি অযৌক্তিক।”
“এটা নিশ্চিতভাবেই ঘোর অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে আপনাদের নিজেদের সদস্য, প্রোটিয়াদের বর্তমান ও সাবেক জাতীয় দলের সদস্য, স্টেকহোল্ডার, স্পন্সর এবং ক্রিকেটপ্রিয় জনগণের মাঝে। কোনো সন্দেহ নেই, এর মাধ্যমে ক্রিকেট এর আস্থা হারিয়েছে-- জনগণের, স্টেকহোল্ডারদের, স্পন্সরদের এবং সাউথ আফ্রিকান ক্রিকেটারস অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব করা ক্রিকেটারদের। সব মিলিয়ে ক্রিকেট কলঙ্কিত হয়েছে”, চিঠিতে বলা হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারির মাঝে এখন লকডাউন চলছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। তবে প্রতিযোগিতামূলক খেলায় বাধা না থাকলেও ঘরোয়া বা আন্তর্জাতিক, সামনে কোনও সূচিই এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। সরকারের এ সিদ্ধান্ত সে দেশের ক্রিকেটকে ঠেলে দিল আরও অনিশ্চয়তার মাঝে।