পিসিবির সিদ্ধান্ত নিয়ে ইমরানের কাছে অসন্তোষ জানানোর পর মিসবাহ-আজহারকে তলব
বোর্ডের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকের পর টেস্ট অধিনায়ক আজহার আলি ও হেড কোচ ও নির্বাচক মিসবাহ-উল-হককে ডেকে পাঠিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড, পিসিবি। চেয়ারম্যান এহসান মানি মনে করছেন, সে বৈঠকে পিসিবির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে উপেক্ষা করেছেন আজহার-মিসবাহ। পরের সপ্তাহে পিসিবির সামনে হাজির হবেন তারা।
দেশের ক্রিকেটের ঘরোয়া কাঠামোর পরিবর্তন নিয়ে আজহার-মিসবাহর সঙ্গে মোহাম্মদ হাফিজ, মানির সঙ্গে পিসিবির প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খানকে ডেকেছিলেন ইমরান। সেখানেই পরের দুজনকে উপেক্ষা করে ক্রিকেটারদের সঙ্গে সরাসরি এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ইমরান, যেটি পছন্দ হয়নি পিসিবির। অবশ্য হাফিজ পিসিবির সঙ্গে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নেই বলে তাকে ডাকেনি পিসিবি। এ তিনজন নতুন পদ্ধতি নিয়ে ইমরানের কাছে নিজেদের অসন্তোষ জানিয়েছিলেন।
মিসবাহ-আজহারদের বিপক্ষে আনুষ্ঠানিক কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে ক্রিকইনফো। তবে ভবিষ্যতে যাতে এমন না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলা হতে পারে তাদের।
আগের মৌসুম থেকেই পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামো বদলানো হয়েছে, সেটিও করা হয়েছে ইমরানের নির্দেশেই। প্রায় ৫০ বছর ধরে চলা ডিপার্টমেন্টাল ক্রিকেট থেকে সরে এসেছে পিসিবি, করা হয়েছে ৬টি আঞ্চলিক দল। ফলে কমে এসেছে ঘরোয়া ক্রিকেটারদের সংখ্যা।
পাকিস্তানের বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠান আগে চালাতো ক্রিকেট দল, তাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটাররা সেসব ডিপার্টমেন্টে চাকরিও পেতেন। তবে নতুন নিয়মে দল নেই বলে যাদের সঙ্গে স্থায়ী চুক্তি নেই, তাদেরকে চাকরি থেকে বাদ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলি। যারা আছেন, তাদেরকেও ডেস্কের পেছনে কাজ করতে হবে, ফলে ক্রিকেট ক্যারিয়ার কার্যত শেষ হয়ে যাবে সেখানে।
ইমরানের মতে, আগের কাঠামোর কারণে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয় না। আর এতোদিন পাকিস্তান ক্রিকেটে যা কিছু অর্জন করেছে, তা সেই কাঠামো থাকার পরও, কিন্তু সেই কাঠামোর কারণে নয়।
তবে প্রায় ৪০০ ক্রিকেটারের রুটি-রুজি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এ নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকেই। মিসবাহ-আজহারকে ডেকে তাদেরকে ‘বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন কষ্ট হলেও’, এমন বলেছিলেন ইমরান। নতুন পদ্ধতিতে এখন ১৯২ জন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের সঙ্গে চুক্তি আছে পিসিবির।
ক্রিকইনফোকে ইমরানের সঙ্গে বৈঠকে থাকা একজন বলেছেন মিসবাহ-আজহারদের ওপর পিসিবির নাখোশ হওয়ার কারণ, “ক্রিকেটাররা জানে যে কাঠামো বদলেছে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই। পিসিবি সেটা বাস্তবায়ন করছে, তবে এর কর্মচারীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে এটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে তার সিদ্ধান্ত এবং তাদের উর্ধ্বতনদের চ্যালেঞ্জ করাটা ভাল একটা সিদ্ধান্ত!”
অবশ্য ইমরানের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থনও করছেন কেউ কেউ। সাবেক অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদি বলছেন, “প্রতিটি পদ্ধতিই কার্যকর হতে দুই-তিন বছর সময় লাগে। বছরখানেকের মাঝেই ফল আসা শুরু করবে। যদি প্রধানমন্ত্রী মনে করেন যে এই পদ্ধতিতে বিশ্বমানের ক্রিকেটার তৈরি হবে, তাহলে অন্তত এক-দেড় বছর আমাদের অপেক্ষা করা উচিৎ। সবকিছুর জন্যই সময় লাগে, এবং এটিরও সময় লাগবে। সঙ্গে আমাদের সমর্থনও লাগবে।”