এখনও প্রিমিয়ার লিগ অনেকটা এগিয়ে, স্বীকার করলেন লা লিগা সভাপতি
ইংলিশ লিগ নাকি লা লিগা, কোনটি সেরা এই তর্কের মীমাংসা সহজ নয়। তবে লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাস মেনে নিলেন, অন্তত আর্থিক দিক দিয়ে এখনও প্রিমিয়ার লিগের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে। এই পার্থক্যটা দূর ক্রাই যে তার মূল লক্ষ্য, সেটাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি।
একটা সময় লা লিগার চেয়ে প্রচার ও প্রসারে যোজন এগিয়ে ছিল প্রিমিয়ার লিগ। মেসি-রোনালদো আর সঙ্গে জমজমাট এল ক্লাসিকোতে সেই ব্যবধান অনেকটাই কমেছে। তবে আর্থিক দিক দিয়ে যে প্রিমিয়ার লিগ অনেওটাই এগিয়ে। তেবাসের ইচ্ছা সেই ব্যবধানটা ঘুঁচিয়ে ফেলবেন দ্রুত, ‘আমরা মঙ্গোলিয়া থেকে গ্রিনল্যান্ড পর্যন্ত লা লিগাকে ছড়িয়ে দিয়েছি। এর মানে এই না সেখান থেকে আমাদের খুব লাভ হচ্ছে। কিন্তু এটার মানে বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে এখন লা লিগা দেখা যাচ্ছে।’
তবে এখনো প্রিমিয়ার লিগের সাথে ব্যবধান আছে বেশ, সেটা মেনে নিলেন তেবাস, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগকে ছাড়িয়ে যাওয়া। এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের অফিস আছে, শত শত লোক আমাদের সাথে কাজ করছে। সবচেয়ে ঘনবসতিপুর্ণ দেশে আরও প্রচারের জন্য আমাদের স্থানীয় সমর্থক দরকার।’
২০১৩ সালে লা লিগা সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন তেবাস। তিনি বলছেন, আর্থিক দিক দিয়ে অনেকটাই শক্তিশালী করতে পেরেছেন স্পেনের ঘরোয়া লিগকে, ‘সাত বছরে লা লিগার সম্পদ আমরা অনেকটাই বাড়িয়েছি। ২০১৩ সালে দায়িত্ব নেওয়ার সময় স্পেনের ঘরোয়া লিগের স্বত্বমূল্য ছিল ২৩৬ মিলিয়ন ইউরো, এখন সেটা ৮০০ মিলিয়ন ইউরো। আন্তর্জাতিক স্বত্ব ৫৫০ মিলিয়ন ইউরো থেকে হয়েছে ১.২ বিলিয়ন ইউরো।’
ইংল্যান্ডের তুলনায় স্পেনের জনসংখ্যায় পিছিয়ে থাকাও লা লিগার কম প্রসারের কারণ হিসেবে মনে করছেন, ‘আমাদের জনসংখ্যা চার কোটির মতো, যেখানে ইংল্যান্ডে এটা সাত কোটি। এখানেও আমরা পিছিয়ে গেছি কিছুটা। এশিয়ার মতো জনসংখ্যাবহুল দেশে এখনো আমাদের কাজ করার অনেক সুযোগ আছে।’ উত্তর আমেরিকাতেও লা লিগা প্রচারের জন্য রিলেভেন্ট স্পোর্টসের সঙ্গে ১৫ বছরের বিজ্ঞাপন চুক্তিতে সই করেছে।
লা লিগার এই প্রচারের এখন সবচেয়ে বড় ঘুটি সম্ভবত মেসি। তেবাস যেমন সরাসরিই বলেছিলেন, মেসি চলে গেলে লা লিগার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। সেজন্য মেসি-বার্সার চাপান উতোরের সময় লা লিগা নিজেরাই বিবৃতি দিয়েছিল বার্সার পক্ষে। তেবাস আশা করছেন, মেসি আরও অনেক দিন লা লিগায় থাকবেন, ‘আমি আশা করব মেসি আরও অনেক দিন থাকবে। পেশাদার দৃষ্টিকোণ থেকে সে এখান থেকে বাইরেও অনেক বেশি টাকা কামাই করতে পারবে, আর ও ব্যক্তিগতভাবে কী মনে করছে সেটা আমি জানি না। তবে বার্সেলোনায় সে কেমন বোধ করছে সেটাই আসল কথা।’
রোনালদো আর নেইমারের চলে যাওয়া নিয়ে খুব একটা আফসোস নেই তেবাসের, ‘রোনালদো দুই বছর আগে চলে গেছে, তবে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটার কোনো প্রভাব টের পাইনি আমরা। আমরা জানি, কিছু সেরা প্রতিভা এখান থেকে চলে আসবে, নতুন প্রতিভা আসবে। নেইমার আর ক্রিশ্চিয়ানোর ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে।’