• ক্রিকেট, অন্যান্য
  • " />

     

    সুপার মুজারাবানিতে পাকিস্তানকে সুপার ওভারে হারাল জিম্বাবুয়ে

    সুপার মুজারাবানিতে পাকিস্তানকে সুপার ওভারে হারাল জিম্বাবুয়ে    

    জিম্বাবুয়ে ৫০ ওভারে ২৭৮/৬ (উইলিয়ামস ১১৮*; হাসনাইন ৫/২৬)

    পাকিস্তান ৫০ ওভারে ২৭৮/৯ (বাবর ১২৫; মুজারাবানি ৫/৪৯)

    ফলঃ ম্যাচ টাই। 

    সুপার ওভারে জয়ী জিম্বাবুয়ে


    ইতিহাস ক্রিকেটে ফিরে আসে অনেকভাবেই। তবে আজ রাওয়ালপিন্ডিতে যেভাবে ফিরে এলো, সেটার মতো উদাহরণ কমই আছে। যে মিসফিল্ডের জন্য ম্যাচটা সুপার ওভারে নিয়ে গেল পাকিস্তান, সেই মিসফিল্ডেই শেষ পর্যন্ত জয় পেল জিম্বাবুয়ে। সেটাও আবার পুরো ম্যাচের সম্ভবত দ্বিতীয় সেরা পারফর্মার দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করা বাবর আজমের সৌজন্যে। আর প্রথম সেরা পারফর্মার? সেটা অবিসংবাদিতভাবেই ব্লেসিং মুজারাবানি। আক্ষরিক অর্থেই জিম্বাবুয়ের জন্য ছিলেন ব্লেসিং। প্রথম ৫০ ওভারে ৫ উইকেট নিয়ে জয় প্রায় পাইয়েই দিয়েছিলেন জিম্বাবুয়েকে। তবে আসল চমকটা রেখে দিয়েছিলেন সুপার ওভারের জন্য।

    গত বছর লর্ডসে বিশ্বকাপ ফাইনালের সেই অবিশ্বাস্য ম্যাচের পর আর সুপার ওভার দেখেনি ওয়ানডে। টি-টোয়েন্টিতে যদিও সেটা নিয়মিত হয়ে গেছে, আইপিএলে তো এক ম্যাচেই হয়েছে দুবার। তবে আজ যে ম্যাচটা সুপার যাবে, সেটাই ছিল অভাবিত। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে জিম্বাবুয়ে একটা সময় মোহাম্মদ হাসনাইনের তোপে ২২ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল। এরপর শন উইলিয়ামস আর ব্রেন্ডন টেলরের জুটিতে উদ্ধার পায় তারা। টেলর ৫৬ রান করে ফিরলেও উলিয়ামস আর তরুণ ওয়েসলি মাদেভেরে এরপর রানের চাকা বন্ধ হতে দেননি। দুজন মিলে নিয়ে গেছেন ১৮১ রান পর্যন্ত, এরপর ৩৩ রান করে আউট হয়েছেন মাদেভেরে। তবে সিকান্দার রাজা আর উইলিয়ামস শেষ দিকে তুলেছেন ছোটোখাট ঝড়। আর তাতেই ৫০ ওভার শেষে ২৭৮ রানে থেমেছে জিম্বাবুয়ে। রাজা করেছেন ৩৬ বলে ৪৫ রান, আর ১৩৫ বলে ১১৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন উইলিয়ামস। পাকিস্তানের হয়ে ২৬ রানে ৫ উইকেট নিলেন মোহাম্মদ হাসনাইন।

    সেই রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানও শুরুতেই খেতে থাকে হোঁচট। প্রথম দুই ওভারের মধ্যে নেই দুই ওপেনার, ২০ রানের মধ্যে নেই হায়দার আলী। এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতেখার আহমেদও গেছেন ফিরে, ৮৮ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে পাকিস্তান। ১৫১ রানের মধ্যে যখন খুশদিল শাহও ফিরে গেলেন, তখনও ছিলেন বাবর আজম। এরপর ওয়াহাব রিয়াজকে নিয়ে শুরু করলেন লড়াই।

    সপ্তম উইকেটে দুজন যোগ করলেন ঠিক ১০০ রান, জয় আবার পাকিস্তানের দিগন্তে। ওয়াহাব আউট হলেন ৫২ রান করে, তারপরও বাবর ছিলেন। সেঞ্চুরি পেলেন, এরপর শেষ ২ ওভারে পাকিস্তানের দরকার হলো ২০ রান। কিন্তু মুজারাবানি এলেন দৃশ্যপটে, পর পর দুই বলে ফিরিয়ে দিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি আর বাবরকে। ১২৫ রান করে ফিরলেন পাকিস্তান অধিনায়ক, ম্যাচ আবার জিম্বাবুয়ের নাগালে।

    শেষ ওভারে প্রথম বলেই চার মারলেন মুসা খান, পরের ৫ বলে দরকার হলো ৯ রান। পরের চার বলে এলো ৪ রান। শেষ বলে চার মারলে টাই, আর ছয় মারলে ম্যাচ পাকিস্তানের। এংগারাভার অফ স্টাম্পের বাইরের বলটা কাভারে মারলেন মুসা, কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে সেটা চিবাবার হাত গলে চার হয়ে যায়। জিম্বাবুয়ে বিশ্বাস করতে পারছে না কী হলো, ম্যাচ গেল সুপার ওভারে।

    তবে মুজারাবানি দমেননি। সুপার ওভারের প্রথম বলেই স্লোয়ার, উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট ইফতেখার। পরের বলে খুশদিল ক্যাচ দিতে দিতেও বেঁচে গেলেন। এরপর ফখর নিলেন আরেকটি রান, তবে পরের বলে আর বাঁচতে পারলেন না খুশদিল। এবার স্লোয়ার টেনে নিয়ে এলেন স্টাম্পে, পাকিস্তান করতে পারল মাত্র ২ রান। জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের দরকার ৩ রান, তেলর ১ রান নিলেন প্রথম ওভারেই। পরের বলটা দট হলো, এরপরের বলটা রাজা মারলেন মিড অনে। কিন্তু বাবরের হাত গলে সেটা হয়ে গেল চার, জিম্বাবুয়ে পেল অবিশ্বাস্য এক জয়। শেষ ম্যাচটা জিতে ব্যবধান কমাল সিরিজে। আর সেই সঙ্গে ওয়ার্ল্ড কাপ সুপার লিগে পেল প্রথম পয়েন্টও। ও হ্যাঁ, আরও একটা ইতিহাসও হলো। প্রথমবারের মতো কোনো ওয়ানডে ম্যাচ দেখল দুই সেঞ্চুরিয়ানের সঙ্গে দুইজন পাঁচ উইকেটধারীকেও।