• ক্রিকেট, অন্যান্য
  • " />

     

    ভাল শুরুর পর থামলেন তামিম, তবে আফ্রিদি-হাফিজে থামলো না তাদের লাহোর

    ভাল শুরুর পর থামলেন তামিম, তবে আফ্রিদি-হাফিজে থামলো না তাদের লাহোর    

    পিএসএল ২০২০ প্লে-অফ, প্রথম এলিমিনেটর
    পেশোয়ার জালমি ১৭০/৯, ২০ ওভার (মালিক ৩৯, ভিলিওন ৩৭, শাহিন আফ্রিদি ২/১৯, দিলবর ৩/৩৩)
    লাহোর কালান্দারস ১৭১/৫, ১৯ ওভার (হাফিজ ৭৪*, প্যাটেল ২০, তামিম ১৮, সাকিব ৩/৪১)
    লাহোর ৫ উইকেটে জয়ী 


    এর আগে তামিম ইকবাল তিন মৌসুম খেলেছিলেন পাকিস্তান সুপার লিগে, প্রতিবারই পেশোয়ার জালমির হয়ে। প্লে-অফে খেলেছিলেন একবার, ২০১৮ সালে। প্রথম এলিমিনেটরে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটরসের বিপক্ষে জিতেছিল তার দল, তবে এরপর সে আসরে খেলেননি তিনি। দ্বিতীয় এলিমিনেটরে গিয়ে করাচির কাছে হেরে বাদ পড়েছিল পেশোয়ার। তামিম আবারও খেলতে গেলেন পিএসএলে, এবার লাহোরের পক্ষে খেলতে, প্রথম এলিমিনেটরে প্রতিপক্ষ তার পুরোনো দল পেশোয়ারই। সেখানে ১৭১ রানতাড়ায় বাংলাদেশ ওপেনার করলেন ১০ বলে ১৮, ফিল্ডিংয়ে একটা দারুণ ক্যাচের সম্ভাবনা জাগালেও পারেননি শেষ পর্যন্ত। তবে তামিমের পিএসএলের এবারের ভ্রমণ এখানেই থামছে না, শাহিন শাহ আফ্রিদির সঙ্গে দিলবর হুসেইনের দারুণ বোলিংয়ের পর মোহাম্মদ হাফিজের ৪৬ বলে ৭৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভর করে ১ ওভার বাকি থাকতেই পেশোয়ারের ১৭০ রান পেরিয়ে গেছে লাহোর, দ্বিতীয় এলিমিনেটরে তাদের প্রতিপক্ষ এদিন প্রথম ম্যাচে সুপার ওভারে হারা মুলতান সুলতানস। 


    দারুণ ইনিংস খেলে লাহোরকে পার করিয়েছেন হাফিজ/লাহোর কালান্দারস


    রানতাড়ায় ওপেনিংয়ে প্রথম ২ ওভারে ১৮ রান তুলেছিলেন ফাখার-তামিম। রাহাত আলির বলে দারুণ টাইমিং ও প্লেসমেন্টে দুটি চার মেরেছিলেন তামিম, ছন্দে ছিলেন বলেই মনে হচ্ছিল। এরপর সাকিব মাহমুদের পেসে পরাস্ত হলেন ফাখার, তবে তামিম চড়াও হলেন সাকিবের ওপর। শর্ট বলে হাঁটু তুলে পুল করলেন, স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে ছয়। তামিমের ‘আইকনিক’ শট, আরেকবার ‘ডানহাতি গর্ডন গ্রিনিজ’ ধরনের কথা উঠলো কমেন্ট্রিতে। তবে এক বল পরই আবারও প্রথমবারের মতো পিএসএল খেলতে আসা ইংলিশ পেসারকে পুল করতে গিয়ে বিশাল টপ-এজড হলেন তামিম, ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো উইকেটকিপার হিসেবে ক্যাচ নিলেন ইমাম-উল-হক। ১০ রানে ১৮ রান করে পিএসএলের এবারের আসরে নিজের প্রথম ম্যাচে থামতে হলো তামিমকে। 

    পাওয়ারপ্লেতে অধিনায়ক সোহেল আখতারকেও হারিয়ে ফেলেছিল লাহোর। সবকিছু গিয়ে ঠেকেছিল বেন ডাঙ্ক ও মোহাম্মদ হাফিজের ওপর। দুজনের জুটি ঠিকপথেই রাখলো তাদের, ১২তম ওভারে মোহাম্মদ ইমরান এসে ডাঙ্ককে ফিরিয়ে পেশোয়ারকে ব্রেকথ্রু দেওয়ার আগে। শিশিরের প্রভাব ছিল স্পষ্ট, এ উইকেটে ব্যাটিং-ও পরের দিকে সহজ হয়ে এসেছিল বেশ। তবে হঠাৎ ধসের শঙ্কা ছিল সবসময়ই। 

    একদিকে স্থির থেকে, এমনকি টয়লেট ব্রেক নিয়ে এসে হাফিজ সে শঙ্কা দূর করলেন। সামিট প্যাটেলের সঙ্গে ৪২ রানের জুটির পর ডেভিড ভিসাকে নিয়ে শেষ করে এলেন ম্যাচ। শেষ ১৮ বলে প্রয়োজন ছিল ৩৬ রান, এতক্ষণ পর্যন্ত পিএসএল অভিষেকটা দারুণ কাটানো সাকিবের করা ১৮তম ওভারে হাফিজ তুললেন ১৬। পরের ওভারে চার মারলেন একটা, শেষ দুই বলে ওয়াহাব রিয়াজকে দুই ছয়ে কাজ শেষ করেছেন ভিসা। 


    ১০ বলে ১৮ রান করে থেমেছেন তামিম, তবে থামেনি তার দল লাহোর/লাহোর কালান্দারস


    এমনিতে প্রথম ম্যাচ সুপার ওভারে গড়ানোয় এ ম্যাচ পিছিয়ে গিয়েছিল ৩০ মিনিট, তবে শিশিরের প্রভাবে টসে জিতে অনুমিতভাবেই ফিল্ডিং নিয়েছিল লাহোর। শাহিন আফ্রিদি তাদের শুরুটাও এনে দিয়েছিলেন দারুণ, দ্বিতীয় বলেই হায়দার আলিকে বোল্ড করে। পাওয়ারপ্লেতে পেশোয়ার হারিয়েছে আরও একটি উইকেট, দিলবরের বলে ক্যাচ তুলেছেন শোহাইব মাকসুদ। ৬ ওভারে ৩৮ রান করতে তারা মেরেছে মাত্র একটি চার, সঙ্গে তিনটি ছয়। পুরো ইনিংসেই চারের চেয়ে এদিন বেশি ছয় মেরেছে পেশোয়ার। 

    শোয়েব মালিক ও ফাফ ডু প্লেসি পেশোয়ারকে নিয়ে ধীরগতিতেই এগুচ্ছিলেন, যখনই মনে হচ্ছিল মোমেন্টাম সেদিকে যাচ্ছে, দিলবরের বলে এজড হয়ে ফিরতে হয়েছে আগের বলেই ছয় মারা ডু প্লেসিকে। পরের ওভারে একটা ছয়ের পর ফিরেছেন ইমরান আলিও, ভিসার বলে। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা শোয়েব মালিককেও সময়মতো ফেরাতে পেরেছে লাহোর, ২৪ বলে ৩৯ রান করা তার উইকেটটি তারা পেয়েছে রিভিউ নিয়ে, দিলবরের বলে। 

    ফিরতি স্পেলে এসে কার্লোস ব্রাথওয়েটকে স্লোয়ারে ধোঁকা দিতে পেরেছিলেন আফ্রিদি, এক ওভার বাকি থাকতে তার বোলিং স্পেল ছিল ৩-০-১২-২। ১৯তম ওভারেও তিনি দিলেন মাত্র ৭ রান। তবে এর আগে-পরের ওভারে পেশোয়ারকে অনেকখানি এগিয়ে নিলেন হারডিস ভিলওয়েন। হারিস রউফের করা ওই ২ ওভারে ৩১ রানে ভর করে একসময় ‘বিলো-পার’ স্কোরের কাছে থাকা পেশোয়ারকে নিয়ে গেলেন লড়াই করার মতো দারুণ স্কোরে। তবে এদিন যে লাহোরকে আটকাতে পারবে না তারা সেই স্কোরেও।