টেন্ডুলকার, ওয়াকার? না, অন্য দুই 'ওয়ান টেস্ট ওয়ান্ডার'?
চিরাগ পাতিল ওয়েটলিফটিংয়ের একটা ভিডিও ক্লিপস শেয়ার করেছেন ইনস্টাগ্রামে। ‘অন্তত দিওয়ালির দিন তো ছাড় দেবেন’, ক্যাপশনটা এমন। কথাটা তার শ্বশুরকে উদ্দেশ্য করে বলা, চিরাগের পেছনে থেকে যিনি ‘জিম ইন্সট্রাক্টরের’ কাজ করছেন।
চিরাগ একজন অভিনেতা। তার আরেকটা পরিচয়, তিনি ভারতের সাবেক ক্রিকেটার, কেনিয়ার সাবেক কোচ সন্দিপ পাতিলের ছেলে। সামনের ডিসেম্বরে মুক্তি পাওয়ার কথা থাকা ৮৩ সিনেমায় ভারতের ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী বাবার ভূমিকায় অভিনয় করবেন তিনি। চিরাগের শ্বশুরের নাম সলিল আনকোলা। সলিলের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলটাও ভেরিফায়েড, বায়োতে লেখা আছে-- সাবেক ভারতীয় ফাস্ট বোলার, অভিনেতা।
৮৩ সিনেমায় কপিলের চরিত্রে অভিনয় করবেন রনবির সিং। ‘৮৩ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানব্রিজ ওয়ালে কপিলের ১৭৫ রানের ইনিংসে খেলা ‘নাটরাজ শট’ খেলছেন রনবির, এমন একটা ছবি বেশ সাড়া ফেলেছিল অনলাইনে।
শাহিদ সাঈদের টুইটার অ্যাকাউন্টের শেষ টুইটটা কপিল দেবকে নিয়ে। কদিন আগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ভারতের ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। সাঈদের এই টুইটার অ্যাকাউন্ট ২০২০ সালের মে মাসে খোলা।
কপিলের আগে তার দুটি পোস্ট ডিন জোনসকে নিয়ে। তার আগেরটা ওয়াকার ইউনিসকে নিয়ে, তার মায়ের মৃত্যুতে ওয়াকারকে সমবেদনা জানিয়েছিলেন তিনি।
তার রিটুইটের অপশনে গেলে একটা লেখার লিংক পাওয়া যায়। সিদ্ধার্থ ভৈদ্যনাথানের একটা লেখা। ভৈদ্যনাথান একসময় ক্রিকইনফোতে কাজ করতেন, এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন, ফ্রিল্যান্স লেখক বলা যায়। ভৈদ্যনাথানের লেখা ‘গ্রোয়িং আপ উইথ শচিন’ অবলম্বনে প্যাভিলিয়নে একটা লেখা আছে-- ‘শচীনের সঙ্গে বেড়ে ওঠা’। এবারকার লেখার হেডিংটা এমন-- ‘রিমেমবার দিস গাই ফ্রম ১৯৮৯ করাচি টেস্ট, শচীন?’
সাঈদের টুইটার আইডিতে কোনো কাভার ফটো নেই। প্রোফাইল ফটোতে সবুজ প্যাডজোড়া বগলদাবা করে হাতে একটা বল নিয়ে পাকিস্তানের ওয়ানডে জার্সি পরে থাকা তার তরুণ বয়সের ছবি। বায়োতে লেখা-- পাকিস্তানের সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার।
_____________
১৯৮৯ পঞ্জিকাবর্ষে ২৫ জনের টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিডনিতে অভিষেক হয়েছিল ট্রেভর হনস ও মার্ক টেইলরের। ৭ টেস্টেই ক্যারিয়ার শেষ হয়েছিল লেগস্পিনার হনসের, টেইলর খেলেছিলেন ১০৪টি। প্রথমজন এখন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকদের চেয়ারম্যান, পরেরজন তাদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। হনস-টেইলরের পর সে বছর অভিষেক হয়েছিল ইয়ান বিশপ, মাইকেল আথারটন, ক্রিস কেয়ার্নস, হাসান তিলকারত্নে-- ক্রিকেটের বেশ কয়েকটি বড় নামের।
তবে নভেম্বরের ১৫ তারিখ করাচিতে অভিষেক হওয়া দুটি নাম সে বছরটিকে আলাদা করে রেখেছে। হয়তো আপনি এরই মাঝে সেদিনের অনেক গল্প শুনেছেন, সেদিনের আগে-পরের গল্প শুনেছেন। শচীন টেন্ডুলকার ও ওয়াকার ইউনিসের মতো নাম একদিনে অভিষেক করলে তো সে দিন বা বছর আলাদা মর্যাদা পাবেই।
৪ উইকেটে ২৫৯ রান নিয়ে দিন শেষ করেছিল টসে হেরে ব্যাটিং করা পাকিস্তান। প্রথমদিন তাই ওয়াকার বোলিং করেননি, ব্যাটিং করেননি শচীন। তবে বোলিং করেছিলেন আনকোলা, কপিল দেব ও মনোজ প্রভাকরের পর তৃতীয় পেসার হিসেবে। আরেকটি উইকেট গেলে সেদিন ব্যাটিংয়ে নামতে পারতেন সাঈদ, সে হিসেবে বলা যায়, প্যাড পরেই বসে ছিলেন তিনি।
১৯৮৯ সালের ১৫ নভেম্বর শুরু হওয়া করাচি টেস্ট ছিল সলিল আনকোলা ও শাহিদ সাঈদেরও অভিষেক। শচীন ক্যারিয়ারে খেলেছেন ২০০ টেস্ট, ওয়াকার ৮৭টি। আনকোলা ও সাঈদ-- দুজনেরই টেস্ট ক্যারিয়ার এক ম্যাচের।
_____________
ইয়া বড়, আড়াআড়ি, মসৃণ রান-আপ। প্রায় কাঁধ পর্যন্ত নেমে আসা চুল। আনকোলার হাবভাবে তারকার ঝলকানি। মুম্বাই পেসারের রঞ্জি ট্রফিতে আবির্ভাবও ছিল তেমনই। অভিষেকেই গুজরাটের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন পুনেতে, নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। এক ম্যাচ পর বারোদার বিপক্ষে আবারও ৬ উইকেট। সে মৌসুমে ৫ ম্যাচে ২৭ উইকেট নিলেন ২০.১৮ গড়ে, পাঁচ উইকেট ৩ বার।
আনকোলাকে রেখে ভারত পাকিস্তানে যায় কীভাবে! প্রথম শ্রেণি অভিষেকের এক বছরের মাথায় তিনি খেলতে নামলেন টেস্ট।
১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে রঞ্জিজয়ী মুম্বাই দলের শচীন, বিনোদ কাম্বলি, সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের সঙ্গে আনকোলা/সলিল আনকোলা, টুইটার
করাচিতে প্রথম ইনিংসে ১৯ ওভারে ৯৩ রানে ১ উইকেট নিয়েছিলেন, তার চেয়ে বাজে ইকোনমি সে ইনিংসে ছিল শুধু ১ ওভার বোলিং করা শচীনের। ২য় ইনিংসে আনকোলা ১১ ওভারের মাঝে ৬টি মেইডেন নিয়েছিলেন। ১২৭৯ রানের টেস্টে আনকোলা খারাপ বোলিং করেছেন-- তার ফিগার তেমন বলে না কোনোভাবেই।
তবে ফয়সালাবাদে বাদ পড়লেন, খেললেন বিবেক রাজদানকে। লাহোরে তৃতীয় টেস্টে ভারত নামল দুই পেসার নিয়ে। শিয়ালকোটে চতুর্থ টেস্টেও খেললেন রাজদান-- ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন এই দুই টেস্টই।
গুজরানওয়ালাতে সিরিজের দ্বিতীয়-- কার্যত প্রথম, কারণ প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল-- ওয়ানডেতে অভিষেক হলো আনকোলার, সেটি টেন্ডুলকারেরও প্রথম ওয়ানডে। সিরিজের তিনটি ম্যাচেই খেললেন। ১৬ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে দশে নেমেছিলেন আনকোলা, ৩ বলে করেছিলেন ৭ রান। তবে সেদিন ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মুহুর্ত এসেছিল তার-- নিজের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই ইমরান খানকে মেরেছিলেন ছয়। শর্ট বলে হুক করতে চেয়েছিলেন, হয়েছিল টপ-এজ। তাতে কী আসে যায়!
আনকোলার টেস্ট ম্যাচের মতো ছয়ও ওই একটিই।
_____________
সাঈদের ক্যারিয়ারেও ছয় একটিই।
তবে সে ছয়ের চেয়ে সাঈদের বেশি মনে পড়ে রবি শাস্ত্রিকে রিভার্স-সুইপের চেষ্টায় কাঁধে বল লাগা। তিনি এখনও মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখেন, শারজায় অন-ড্রাইভে মারা চারটা, সেখানেই ক্যারিয়ারের একমাত্র ফিফটি করেছিলেন তিনি।
আনকোলার মতো ফাস্ট-ফরোয়ার্ড মোডে জাতীয় দলে সুযোগ পাননি তিনি। বেশ কিছুদিন প্রথম শ্রেণিতে ঝুলে ছিলেন, একসময় সব ছেড়েছুড়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন কেনিয়ায়- সেখানে পেশাদার ক্রিকেট খেলবেন বলে। তবে নাইরোবিতে নেমে বাসায় পৌঁছসংবাদ দেওয়ার সময় জানলেন, পাকিস্তানে ডাক পড়েছে তার। ফিরতে চাননি, পরিবারের চাপে বাধ্য হয়েছিলেন।
শারজায় ১৯৮৯ সালের অক্টোবরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ওয়ানডে অভিষেক তার, দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন ওই ফিফটি। ফিল্ডিংয়ের সময় সে টুর্নামেন্টে একবার চোট পেলেন, আরেকটি চোট পেলেন পাঁচদিন পর নেহরু কাপের ম্যাচে।
তবে ভারত পাকিস্তান যাওয়ার আগেই সেরে উঠলেন তিনি। একটা প্রস্তুতি ম্যাচে নামলেন। ইনিংসের মেয়াদ ৭০ পেরিয়ে যাওয়ার পর হুট করেই বল সুইং করা শুরু করলো, সাঈদ পরপর ৪ ওভারে নিলেন ৪ উইকেট। এমনিতে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হলেও সেই বোলিং করাচিতে টেস্ট অভিষেক করিয়ে দিল তার।
প্রথম ইনিংসে ১৪ বলে করেছিলেন ১২ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। প্রথম ইনিংসে ২ ওভার পর দ্বিতীয় ইনিংসে করেছিলেন ১৩ ওভার।
তবে সাঈদ মনে করতে পারেন, একমাত্র ইনিংসে যে বলে আউট হলেন, অফস্টাম্পের বেশ বাইরে ছিল সেটি। এমনিতে ছেড়ে দিতেন, তবে অধিনায়ক ইমরানের দ্রুত রান তোলার চেষ্টার নির্দেশ অমান্য করতে পারেননি।
_____________
আনকোলা ও সাঈদ-- দুজনকেই পরের সুযোগ পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছিল যথাক্রমে ৪ ও ৩ বছর। ঘরোয়া ক্রিকেট চালিয়ে গেছেন দুজনই এর মাঝে। আনকোলা ফ্রাঙ্ক টাইসনের সঙ্গে কাজ করে বোলিং অ্যাকশনে পরিবর্তন এনেছেন, রান-আপ ছোট করেছেন।
১৯৯২ বিশ্বকাপের দলে প্রথমে থাকলেও পরে বাদ দেওয়া হয়েছিল সাঈদকে। পরের বছর নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সফরে আবারও ডাক পেলেন, খেললেন চারটি ওয়ানডে। এমসিজিতে ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে তার, সেবার আউট হয়ে ফেরার পথেই বুঝেছিলেন, আর সুযোগ নেই। গ্যাবার পর মেলবোর্ন-- পরপর দুটি ম্যাচে তার আউট হওয়ার ধরন নাকি এখনও তাড়া করে ফেরে তাকে।
“এক্সট্রা কাভারে বড় গ্যাপ ছিল, পুলের বদলে ভাবলাম, সেদিকে ঠেলি। তাতে কী হলো? বল মুভ করলো, স্লিপে লারার হাতে ধরা পড়লাম”, ইয়ান বিশপের শর্ট বল খেলার কথা সাঈদ বলেছিলেন ভৈদ্যনাথানকে, যার মতে, তার প্রথম দেওয়া সাক্ষাতকার সেটি।
শাহিদ সাঈদ/পাকিস্তান ক্রিকেট
“এটা এমন বাজে শট ছিল, যে ফেরার পথে আমি হেসেই দিয়েছিলাম। আমি জানতাম, আমার ক্যারিয়ারের শেষ সেখানেই”, মেলবোর্নে টনি ডোডেমাইডের বলে নিজের আউট হওয়া নিয়ে বলেছিলেন তিনি। আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে সেবার লেগস্টাম্প হারিয়েছিলেন তিনি। সেদিন নেমেছিলেন তিন নম্বরে।
সাঈদ বিশ্বকাপ খেলেননি, আনকোলা খেলেছিলেন। ফিরে আসার পর ১৯৯৬ বিশ্বকাপে একটি ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি, দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরেছিল ভারত। পরের বছর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ক্যারিয়ারের শেষটা ভুলে যাওয়ার মতো ছিল তারও। ডারবানে ৭ ওভারে দিয়েছিলেন ৫০ রান, ২০ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি খরুচে ছিলেন সেদিন তিনি।
সাঈদ বাদ পড়ার পর প্রথম শ্রেণি খেলেছেন আরও কয়েক মৌসুম। তবে আনকোলা সেই ওয়ানডের পর প্রথম শ্রেণি খেলেছেন একটি, লিস্ট ‘এ’ আর একটি। তার বাঁ পায়ে ধরা পড়েছিল টিউমার। অস্ত্রোপচার-জটিলতা মিলিয়ে এরপর দুই বছর নাকি দৌড়াতেই পারেননি তিনি। ২৮ বছর বয়সেই পেশাদার ক্যারিয়ারকে বিদায় বলেছিলেন আনকোলা।
_____________
অবিনাশ আর পুলিশের চাকরি করবেন না। যে চাকরি তাকে শুধু আইনের শৃঙ্খলে একজন রোবট বানিয়ে রেখেছে, সেটি করতে চান না তিনি। পৃথ্বিরাজ, অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার তাকে বুঝানোর চেষ্টা করলেন, এরপর কাছে টেনে নিলেন।
২০০০ সালে মুক্তি পাওয়া কুরুকশেত্র (কুরুক্ষেত্র) সিনেমার কাহিনী। পৃথ্বিরাজের চরিত্রে সঞ্জয় দত্ত, অবিনাশের চরিত্রে সলিল আনকোলা। অভিনয়ের প্রস্তাব খেলোয়াড়ী জীবনেই পেয়েছিলেন, টুকটাক করেছিলেনও। তবে এবার জীবিকার তাগিদে করতে হলো। এর আগেই ছোট-পর্দায় নিয়মিত হয়েছেন, সিরিয়ালে কাজ করে।
কুরক্ষেত্রের পর অভিনয় করেছেন আরও কয়েকটি সিনেমায়, যার শেষটি ২০১৯ সালে। তবে তাকে মূল তারকা বানিয়েছে ছোট পর্দাই।
অবশ্য আনকোলার কাহিনীর এখানেই শেষ নয়। মাঝে মদের নেশায় হারিয়ে বসতে ধরেছিলেন নিজেকে। পারিবারিক ঝামেলা পেরিয়ে একসময় প্রায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন। ২০১০ সালে তার জন্য ‘বেনিফিট’ ম্যাচের উদ্যোগ নিয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকার।
শচীন টেন্ডুলকার একাদশ বনাম সৌরভ গাঙ্গুলি একাদশের সে ম্যাচে খেলেছিলেন অনীল কুম্বলে, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষণরা। শুরুতে নাম না থাকলেও খেলতে এসেছিলেন তখনকার ভারত অধিনায়ক এমএস ধোনি, যিনি হয়েছিলেন ম্যাচসেরা।
_____________
সলিল আনকোলা তার বাইসেপস দেখাচ্ছেন, লাজুক একটা হাসি নিয়ে। মুম্বাইভিত্তিক লিগ টি-টোয়েন্টি মুম্বাইয়ের কমেন্ট্রিতে সহকর্মী চারু শর্মার অনুরোধে এমন করতে হলো তাকে। আরেকজন তার বাইসেপস নিয়ে বললেন, সকালে যখন সলিল তাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন, তার অনুরোধ ছিল একটিই-- চাপটা যাতে বেশি না হয়ে যায়।
সে ক্লিপসের শেষে সেই কমেন্টেটরের একটা কথা শোনা যায়-- ‘ইটস গুড টু হ্যাভ ইউ, সলিল’।
আনকোলার মতে, তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় তাকে আবার জীবনে ফিরিয়ে এনেছে। একসময়ের ‘অ্যালহোলিক’ পরিচয়টা নিয়ে প্রকাশ্যেই কথা বলেন তিনি এখন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক খবর অনুযায়ী, সবশেষ এ বছরের সেপ্টেম্বরে মুম্বাইয়ের ক্রিকেট কোচের পদে আবেদন করেছেন আনকোলা।
_____________
৬ জানুয়ারি ২০২০ পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের একটা পোস্ট ফেসবুকে শেয়ার করেছিল ওয়ানস্টিড ক্রিকেট ক্লাব।
“হ্যাপি বার্থডে টু আওয়ার হিরো শাহিদ সাঈদ!”
তাদের ওয়েবসাইটের মতে, ১৮৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ওয়ানস্টিড ক্রিকেট ক্লাব। ২০১৭ সালে ইসিবির রয়্যাল লন্ডন ন্যাশনাল ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ-- অ্যামেচার ক্লাবগুলির টুর্নামেন্ট। ওয়ানস্টিডের সাঈদের প্রোফাইলে তার পরিসংখ্যান আছে-- ২০১৩ মৌসুম পর্যন্ত সেখানে খেলেছেন তিনি। ২০০৭ সালে নিজের প্রথম মৌসুমে জিতেছিলেন প্রথম একাদশের বর্ষসেরা বোলারের পুরস্কার।
সাঈদ যুক্তরাজ্যেই থাকেন এখন, কাজ করেন রেলওয়ের সামগ্রী তৈরি করে এমন একটা কোম্পানিতে।
ভৈদ্যনাথান যখন তাকে খুঁজে পেয়েছিলেন, তার টুইটার হ্যান্ডল ফলো করতো শুধু ইমরান খানকে। এখন ভৈদ্যনাথানকে ছাড়াও তিনি ফলো করেন মোহাম্মদ ইউসুফ, শোয়েব আখতার, এবং ওয়াকার ইউনুসকে।
_____________
যে টেস্টে শুরু, সে টেস্টেই শেষ-- ভারতে এমন ‘ওয়ান টেস্ট ওয়ান্ডার’ আছেন এখন পর্যন্ত ৪৫ জন। প্রথম এমন ক্রিকেটার ছিলেন লল সিং। ১৯৩২ সালে লর্ডসে ভারতের প্রথম টেস্টে খেলেছিলেন এই দুর্দান্ত ফিল্ডার, এরপর আর সুযোগ পাননি। কথিত আছে, এরপর স্ত্রীকে নিয়ে একটা নাইটক্লাব চালু করেছিলেন মালয়েশিয়ায় জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটার। তবে এরপর এও শোনা গিয়েছিল, কুয়ালালামপুরে গ্রাউন্ডসম্যান হয়েই জীবনের বাকিটা কেটেছে তার।
পাকিস্তানে ৩৮ জন ওয়ান টেস্ট ওয়ান্ডারের প্রথম দুজন খালিদ হাসান ও আসলাম খোখার। খালিদের অভিষেক হয়েছিল ১৬ বছর ৩৫২ দিন বয়সে, ১৯৫৪ সালে ট্রেন্টব্রিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমে তখনকার সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট ক্রিকেটার হয়েছিলেন তিনি। এরপর আরও ১০ জন তার চেয়ে কম বয়সে টেস্ট অভিষেক করেছেন (টেন্ডুলকারসহ), তবে একটা রেকর্ড এখনও ভাঙেনি-- তার চেয়ে কম বয়সে টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ হয়নি আর কারও। আসলাম অবশ্য একটা অফিসিয়াল টেস্ট খেললেও পাকিস্তান টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার আগে খেলেছিলেন আন-অফিসিয়াল টেস্ট।
আনকোলা বা সাঈদের মতো গল্পের অভাব নেই। ১৯৩২, ১৯৫৪ কিংবা ১৯৮৯-কেও গল্পের খাতিরেই শুধু আলাদা করতে হয়।