• ক্রিকেট, অন্যান্য
  • " />

     

    ক্ষমা চাইলেন সাকিব

    ক্ষমা চাইলেন সাকিব    

    সাম্প্রতিক দুই ইস্যু নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন সাকিব আল হাসান। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক সমর্থকের ফোন ভাঙা এবং ভারতের কলকাতায় এক অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নিজের অবস্থান পরিস্কার করতে এই ভিডিও আপলোড করেছেন তিনি, বলেছেন এমন। 

    আইসিসির নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। সম্প্রতি ব্যক্তিগত কাজে ভারত গিয়েছিলেন তিনি। সেই সফরের প্রথম ঘটনা নিয়ে তিনি বলেছেন, “আমি আসলে কখনোই বুঝতে পারি না, অন্য একজনের ফোন ভাঙলে আমার কী উপকার হবে! এর উত্তর হয়ত আমার চেয়ে ভালো আপনারা দিতে পারবেন। আর যার ফোন ভাঙা নিয়ে কথা হচ্ছে, ফোনটি আমি ইচ্ছা করে ভাঙিনি। যেহেতু করোনাকালীন সময়, তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে, কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যায়, সেই চেষ্টাটুকুই আমি করছিলাম।

    “যেহেতু সেখানে অনেক মানুষ এবং ভীড় ছিল, সেখানে সবাই চাইছিলো ছবি তুলতে। তবে আমি চেষ্টা করছিলাম, কীভাবে তাদের কাছে না গিয়ে আমি আমার কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারি। তো তার মধ্য থেকে একজন উতসুক জনতা আমার কাছে এসে ছবি তুলতে চায়। তখন আমি তাকে সরিয়ে দিতে গিয়ে, আমার হাতের সঙ্গে লেগে তার হাত থেকে মোবাইলটি পড়ে যায়। যা পরবর্তীতে ভেঙেও গেছে। তার ফোন ভাঙার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত, তবে আমার মনে হয়, তারও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ ছিল। আসলে আমার মনে হয়, যতদিন করোনার প্রভাব থাকে পুরো সময়ে আসলে সবারই একটু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ।”


    দ্বিতীয় ব্যাপারটিকে ‘স্পর্শকাতর’ উল্লেখ করে সাকিব বলেছেন, সংবাদমাধ্যমে যেমন খবর এসেছে যে তিনি পূজা উদ্বোধন করতে গেছেন, তেমনটি নয়, “যে ঘটনাটি অবশ্যই সেনসিটিভ। তবে আমি শুরুতে বলে নিতে চাই, আমি নিজেকে একজন গর্বিত মুসলমান বলে মনে করি। আমি সেটা পালন করার চেষ্টা করি। তবে ভুল ত্রুটি হবে, আর এই ভুল ত্রুটি নিয়েই আমরা জীবনে চলাচল করি। আর আমার কোনো ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে আমি তার জন্য আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। এমনকি আপনাদের মনে কোনো কষ্ট দিয়ে থাকলেও তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।

    “আসলে পূজার বিষয় নিয়ে নিউজ কিংবা মিডিয়ায় খবর এসেছে যে, আমি পূজা উদ্বোধন করতে গেছি। কিন্তু যেটার জন্য আমি আসলে যাইনি, করিওনি। এটার প্রমাণ আপনারা অবশ্যই পাবেন। কারণ, ওইখানে অনেক সাংবাদিক ভাই-বোনেরা উপস্থিত ছিলেন, যাদেরকে হয়তবা আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়াও যদি আপনারা আমন্ত্রণের কার্ডও দেখেন, কার্ডে আসলে লেখা আছে যে, কে আসলে ওইটার উদ্বোধন করেছে। আর উদ্বোধন হয়েছে আসলে আমি যাওয়ার আগেই। আর যে জায়গায় বা মঞ্চে অনুষ্ঠানটি হয়েছে, সেটি কখনোই পূজা মণ্ডপ ছিলো না। এবং পাশে আরেকটি মঞ্চ ছিল, সেখানে করা হয়েছিল। এবং পুরো অনুষ্ঠানটি আসলে সেখানে হয়। প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট ব্যাপী সেই অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। আর সেখানে কোনো ধর্ম, বর্ণ কোনো কিছু নিয়ে কখনো কথা হয়নি।”

    “অনুষ্ঠান শেষে যখন আমি গাড়িতে উঠতে হবে, যেহেতু ওইখানে পাশেই আসলে পূজার আয়োজন ছিল অনেকগুলো রাস্তা আসলে বন্ধ ছিল। তো স্বাভাবিকভাবে পূজা মণ্ডপটি পার করে আমায় যেতে হতো, যেটি আমি গিয়েছি। যাওয়ার সময়, পরেশ দা- যিনি আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তার অনুরোধে আমি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করি। এবং যেহেতু কলকাতায় আমি অনেকদিন খেলেছি, কলকাতার মানুষরা আমাকে অনেক পছন্দ করে, ওইখানকার সাংবাদিকরা অনেক উৎসুকও ছিল, সবার অনুরোধে তখন পরেশ দার সঙ্গে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের সময় একটা ছবি তোলা হয়।

    “ছবি তোলা শেষে যাওয়ার সময়, সাংবাদিকদের সঙ্গে আমার নিরাপত্তায় যারা ছিল, তাদের কিছুটা বাকবিতণ্ডাও হয়, একটু হাতাহাতিও হয়। সেই ঘটনার জন্য আমরা ওইদিক দিয়ে আর যেতে পারি নাই। পরে আবার ব্যাক করে অন্য রাস্তা দিয়ে গিয়েছি।”

    “যেটা হয়েছে, দুই মিনিটের যে সময়টা আমি পূজা মণ্ডপে ছিলাম, সেটি নিয়ে সবাই বলেছে এবং ধারণা করছে যে, আমি পূজার উদ্বোধন করছি। সেটি আমি কখনোই করিনি এবং একজন সচেতন মুসলমান হিসেবে আমি করবো না। তারপরও হয়ত সেখানে যাওয়াটাই আমার ঠিক হয়নি, সেটা যদি আপনারা মনে করে থাকেন তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। আমি মনে করি, আপনারা এটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেটিও চেষ্টা করবো।”

    ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে খুলনার হয়ে খেলবেন সাকিব।