• প্রীতি ম্যাচ
  • " />

     

    কিক অফের আগে : জেমি ডে-কে ছাড়া নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের একদিন

    কিক অফের আগে : জেমি ডে-কে ছাড়া নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের একদিন    

    কবে, কখন
    বাংলাদেশ-নেপাল
    মুজিববর্ষ আন্তর্জাতিক ফুটবল সিরিজ
    দ্বিতীয় ম্যাচ
    ১৭ নভেম্বর, বিকাল ৫.০০
    বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম


    বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেরার মধুর স্মৃতি ম্লান হতে বেশি সময় লাগেনি। কোচ জেমি ডে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ম্যাচের একদিন পরই। গ্যালারি ভরা দর্শক, উল্লাস আর মাঠে বাংলাদেশের উদযাপন সবকিছুই তাই দ্বিতীয় ম্যাচের আগের রঙ হারিয়েছে কিছুটা। মহামারি ভোলার উপলক্ষ্য নতুন করে মনে করিয়ে দিয়েছে ভয়াবহতা।

    করোনাভাইরাসের আঁচ আগেই টের পেয়েছিল নেপাল। বাংলাদেশ টের পেল জেমি ডেকে হারিয়ে। তার অনুপস্থিতিতে ডাগ আউটে থাকছেন তার সহকারি স্টুয়ার্ড ওয়াটকিস।  জেমি ডেও তার ওপরই ভরসা রাখছেন। বাংলাদেশে দুইজন একসঙ্গে এসেছিলেন ২০১৮ সালে। এই জুটি তখন থেকেই একসঙ্গে কাজ করছেন। জেমি ডে না থাকলেও তাই আদতে বড় পরিবর্তন আসছে না। 

    হোটেলরুম থেকে বেরুনোর অবস্থা নেই জেমির। তিনি ম্যাচ দেখবেন টিভিতে। চাইলে নিজের বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত সেখান থেকেই ফোনে জানিয়ে দিতে পারবেন বাংলাদেশ কোচ। ওয়াটকিসও আশা করছেন, ড্রেসিংরুমে মোবাইল ফোনে জেমি ডের সঙ্গে কথা বলে  সিদ্ধান্ত ঝালাই করে নিতে পারবেন তিনি। এর আগে নিয়মিত জেমির পরামর্শ মতো অনুশীলন চালিয়ে গেছেন ওয়াটকিস। যদিও ওয়াটকিস নিজেই অভিজ্ঞ কোচ। হাল সিটি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে থাকার সময় সেই দলের সহকারি কোচ ছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের চ্যাম্পিয়নশিপেও কোচ হিসেবে কাজ করেছেন ওয়াটকিস। জেমি ডে তাই বলছেন, মোবাইল ফোনের প্রয়োজন হয়ত হবে না তার।

    "আমার সহকারি কোচ অনেক অভিজ্ঞ। তার ওপর আমার আস্থা আছে। যদিও মোবাইলে চাইলে আমি কথা বলতে পারব। কিন্তু যেহেতু এটা প্রীতি ম্যাচ, তার আর এর প্রয়োজন হবে না বোধ হয় না।" - আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় হোয়াটসঅ্যাপে প্যাভিলিয়নকে জানিয়েছেন জেমি ডে।  

    খুব বেশি দুশ্চিন্তা অবশ্য না করলেও চলছে বাংলাদেশ কোচের। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি নেপাল। বিশেষ করে প্রথমার্ধটা দারুণ ছিল বাংলাদেশের জন্য। দ্বিতীয়ার্ধে নেপাল কিছুটা গুছিয়ে খেলা শুরু করলেও মাহবুবুর রহমান সুফিলের গোল শেষ পর্যন্ত কাজটা সহজ করে দিয়েছিল বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচের পর নেপালের কাছ থেকে আরও শক্তিশালী লড়াই আশা করছেন ওয়াটকিস। তবে নিজেদের পরিকল্পনায় তাতে পরিবর্তন আসছে না বাংলাদেশের। জেমি ডের মতোই তারও লক্ষ্য কাতারের বিপক্ষে বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি। সে লক্ষ্যে নেপালের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের জন্য “দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ”। দলে বড়সড় পরিবর্তন আসবে না বলেও জানিয়েছেন ওয়াটকিস।

    অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া অবশ্য ম্যাচটাকে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিচ্ছেন। না জিততে পারলে সবাই “পক পক পক পক…” করবে, তাই জিতেই পজিটিভ ধারণা নিয়ে কাতার রওয়ানা হতে চান তিনি। জামালের কাছে অপশন নেই আর কোনো, “জিতলে সবাই পজিটিভ হবে, আর হারলে পক পক পক পক করবে। জেতা ছাড়া আর কোনো অপশন নেই আমাদের কাছে।”

    “আগের ম্যাচে প্রথমার্ধে আমরা ভালো খেলেছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দল কেমন খেলেছে। প্রথমার্ধ দারুণ ছিল, দ্বিতীয়ার্ধে কষ্ট করতে হয়েছে। আগামীকাল আমাদের লক্ষ্য দুই অর্ধেই ভালো খেলা।”

    জেমি ডাগ আউটে থাকবেন না। তবে তাতে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মনোযোগেও ব্যঘাত ঘটবে না বলে বিশ্বাস জামালের। যদিও তার জন্যই এই ম্যাচে জেতার তাড়না আরও বেশি অনুভব করছেন জামাল, “আমাদের সবসময় জেমির সঙ্গে যোগাযোগ চলছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। এছাড়া স্টুয়ার্ট (ওয়াটকিস) সবকিছুই জানেন। জেমি ছাড়া তেমন কোনও সমস্যা হবে না বলে মনে করছি। তবে অবশ্যই আমরা জেমির জন্য হলেও ম্যাচ জিততে চাই। তার পরিবার রয়েছে। চারটি সন্তান। তারা বেশ উদ্বিগ্ন। আশা করছি, শিগগিরিই সুস্থ হয়ে ফিরবে তিনি।”

    নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে আপাতত বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জেমির সুস্থ্যতাই। তবে সেসব নিয়ে খুব বেশি ভাবার সুযোগও নেই বাংলাদেশের। নেপালের সঙ্গে ম্যাচ খেলে দুইদিন বাদে কাতারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যাওয়ার কথা জামালদের। জেমি ডে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন পরে।

    এর ভেতর নেপাল একটি সুখবর পেয়েছে। ডিফেন্ডার রণজিৎ ধিমাল প্রথম ম্যাচের আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি সুস্থ্য হয়ে আবার দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। সে প্রেরণা কাজে লাগাতে চান এবার নেপাল কোচ বাল গোপাল মহারাজ।

    দলের খবর
    শহীদুল আলম সোহেল চোটের কারণে দল থেকে বাদ পড়েছেন। কাতারের বিপক্ষে ম্যাচেও খেলা হবে না তার। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ,এবার গোলবারের নিচে থাকতে পারেন আশরাফুল ইসলাম রানা। দলের মূল গোলরক্ষক রানা আগের ম্যাচে বিশ্রামে ছিলেন। এবার সুযোগ মিলতে পারে তার। যদিও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৩ জনের স্কোয়াড ঘোষণা করেনি।

    ওয়াটসিন দলে বড় কোনো পরিবর্তন চান না। সে হিসেবে মিডফিল্ড আর আক্রমণভাগ একইরকম থাকতে পারে। জামালের সঙ্গে হোল্ডিং মিডফিল্ডারের ভূমিকায় মানিক হোসেন মোল্লার খেলা প্রায় নিশ্চিত। তবে সুমন রেজার পরিবর্তনে আক্রমণভাগে স্ট্রাইকারের ভূমিকায় শুরু থেকেই থাকতে পারেন এবার মাহবুবুর রহমান সুফিল।

    বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ
    আশরাফুল রানা, রায়হান হাসান, রিয়াদুল হাসান, তপু বর্মণ, রহমত মিয়া, জামাল ভূঁইয়া, মানিক হোসেন, সাদ উদ্দিন, নাবিব নেওয়াজম মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মাহবুবুর রহমান

    হেড টু হেড
    শেষ ম্যাচে প্রায় পাঁচ বছর পর নেপালের বিপক্ষে  জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সবশেষ ৫ দেখায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় জয় সেটি।

    প্রেডিকশন
    বাংলাদেশ ২-১ নেপাল