• বিশ্বকাপ বাছাই
  • " />

     

    উরুগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের স্বস্তি অতীত, পেরু নিয়ে আর্জেন্টিনার নতুন পেরেশানি

    উরুগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের স্বস্তি অতীত, পেরু নিয়ে আর্জেন্টিনার নতুন পেরেশানি    

    বিশ্বকাপ বাছাইয়ে তিন ম্যাচের সবগুলোতে জিতে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে সবার ওপরে আছে ব্রাজিল। আর দুই পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে আর্জেন্টিনা আছে দুইয়ে। বছরের শেষ ম্যাচে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ অতোটা কঠিন কেউ নয়। তবে পেরুর বিপক্ষে ম্যাচের আগেই নিজেদের ওপর চাপ বাড়িয়ে রেখেছে আর্জেন্টিনা। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের পয়েন্ট টেবিলের হিসাব-নিকাশ বদলে যেতে এক রাউন্ডই যথেষ্ট। বছরের শেষ রাউন্ড তাই ছড়াচ্ছে অন্যরকম উত্তাপ। 


    ব্রাজিলকে হারানো ভুলতে বসা উরুগুয়ে
    ২০০১ সালে সবশেষ ব্রাজিলকে হারিয়েছিল উরুগুয়ে। এরপর থেকে ব্রাজিলের বিপক্ষে একবারও জিততে পারেনি তারা। মুখোমুখি ৯ ম্যাচের ৭টিই হেরেছে উরুগুয়ে। উরুগুয়ে কাগজে-কলমে ব্রাজিলের জন্য শক্ত প্রতিপক্ষ, তবে এসব অতীত রেকর্ডও ফুটবলে কখনও কখনও অনেকদিন ধরেই রাজত্ব গড়ে বসে।

    এবার অবশ্য সেই ধারায় ছেদ পড়ার একটা সম্ভাবনা জেগেছে। সেটাও ব্রাজিলের চোট অসহায়ত্বের কারণে। নেইমার, ফিলিপ কৌতিনহো, ফাবিনহোরা নেই। উরুগুয়ে এই সুযোগটা কাজেই লাগাতে চাইবে।

     

    ব্রাজিলের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ভেনেজুয়েলা প্রায় সুযোগটি কাজেও লাগিয়ে ফেলেছিল। পরে রবার্তো ফিরমিনোর গোল বাছাইপর্বের তৃতীয় ম্যাচে ব্রাজিলের তৃতীয় জয় নিশ্চিত করেছে। এর আগে বাছাইপর্বে ব্রাজিলকে পরীক্ষায় ফেলেছিল পেরুও। তবে নেইমার ছিলেন সে ম্যাচে, তিনিই ব্রাজিলকে উদ্ধার করেছিলেন। তিতের জন্য আপাতত স্বস্তির খবর হলো, কেউ না কেউ দলের হাল ধরছেন। এবার উরুগুয়ের বিপক্ষে অবশ্য দলগত পারফরম্যান্সই চাইবেন ব্রাজিল কোচ।

    উরুগুয়ের দারুণ আত্মবিশ্বাসী হয়েই ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলতে নামবে। বাছাইপর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে ইকুয়েডরের কাছে অপ্রত্যাশিত ৪-২ গোলে হারের পর চাপে পড়ে গিয়েছিল অস্কার তাবারেজের দল। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে সেই চাপ নিমিষেই জয় করেছে উরুগুয়ে। লুইস সুয়ারেজ ও এডিনসন কাভানি- দুইজনই গোল করেছেন সে ম্যাচে। দারুণ এক জয় দ্বিগুণ এগিয়ে দিয়েছে উরুগুয়েকে। কিন্তু ম্যাচের আগেরদিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে আবার ছিটকে গেছেন সুয়ারেজ। তাই তাকে ছাড়াই খেলতে হবে উরুগুয়েকে। নেইমার, কৌতিনহো না থাকার সুবিধাটা তাই আদায় করতে হলে কষ্টই করতে হবে উরুগুয়েকে।

    ভেনেজুয়েলার পর এই ম্যাচেও প্রিমিয়ার লিগ ফরোয়ার্ডদের ওপরই ভরসা রাখার কথা তিতের। ফিরমিনোর সঙ্গে গ্যাব্রিয়েল হেসুস ও রিচার্লিসনই হয়ত থাকবেন ব্রাজিলের একাদশে। মিডফিল্ডে অ্যালান ও এভারটন রিবেইরোর জায়গা ধরে রাখার কথা। তবে ডগলাস লুইজের থাকা নিয়ে সংশয় আছে।

    আর্জেন্টিনার হুট করে কঠিন হয়ে পড়া পেরু ম্যাচ
    বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম দুই ম্যাচে এক গোলের নূন্যুতম ব্যবধানে জয় পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। এর ভেতর বলিভিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর স্বস্তিও ছিল দলে। কিন্তু প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ১-১ এ ড্র করে আবার পুরোনো চাপটা ডেকে এনেছে আর্জেন্টিনা।

    পেরুর বিপক্ষে ম্যাচটা তাই কঠিন পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্জেন্টিনার জন্য। ৩ ম্যাচে দুই জয়, এক ড্র হিসাবে মন্দ ফল নয়। তবে লিওনেল স্কালোনির দল যেভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে তিন ম্যাচ খেলেছে  সেটা ভাবনার কারণ আর্জেন্টিনার জন্য।

    পেরুর অবস্থা অবশ্য ভালো নয়। গতবার বিশ্বকাপ খেলা দেশটি সবশেষ কোপা আমেরিকার ফাইনালেও খেলেছে। কিন্তু এবার বাছাইপর্বে ৩ ম্যাচ থেকে এখনও জয় পায়নি পেরু। রিকার্ড গারেচার দল অবশ্য হেরেছে নিজেদের চেয়ে এগিয়ে থাকা চিলি ও ব্রাজিলের বিপক্ষে। আর প্যারাগুয়ের সঙ্গে ড্র করে এখন পর্যন্ত একটি পয়েন্ট জুটেছে তাদের। আর্জেন্টাইন কোচ গারেচার এই দলের লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে শরীর নির্ভর ফুটবল খেলা দল হিসেবে খ্যাতি আছে। আর আর্জেন্টিনা বরাবরই শরীর নির্ভর ফুটবলের বিপরীতে ধুঁকেছে। এই ম্যাচে জিততে না পারলে প্রথম দুই ম্যাচের দুই জয় আর্জেন্টিনাকে খুব বেশি স্বস্তি যোগাতে পারবে না।

    প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ মিস করার পর আর্জেন্টিনার হয়ে ফিরেছেন নিকোলাস টালিয়াফিকো। পেরুর বিপক্ষে  তার লেফটব্যাক পজিশনেই খেলার কথা রয়েছে। তাতে আর্জেন্টিনাও হয়ত চারজনের ব্যাকলাইনে ফেরত যাবে। এছাড়া একাদশে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কমই।