• বিশ্বকাপ বাছাই
  • " />

     

    প্রথমার্ধের মন ভরানো ফুটবলে পেরু দুর্গ জয় আর্জেন্টিনার

    প্রথমার্ধের মন ভরানো ফুটবলে পেরু দুর্গ জয় আর্জেন্টিনার    

    ২০০৪ সালের পর থেকে পেরু দুর্গ জয় করা হয়নি আর্জেন্টিনার। সর্বশেষ তিনটি ম্যাচে গিয়ে সেখানে ড্র করতে হয়েছিল। তবে আজ প্রথমার্ধের ৩০ মিনিটের মধ্যেই আর্জেন্টিনা এমন খেলা খেলল, পেরুর দুর্গটা জয় করে তাতে ওড়ানো হয়ে গেল বিজয়পতাকাও। মন ভরিয়ে দেওয়ার মতো এক প্রথমার্ধেই আর্জেন্টিনা এগিয়ে গেছে ২-০ গোলে, দ্বিতীয়ার্ধে তেমন কিছু করতে না পারলেও এই ব্যবধানেই জিতে গেছে ম্যাচ। নিকো গঞ্জালেজের পর লাউতারো মার্তিনেজই আজ ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন লিমায়।

    একাদশটা যেমন হওয়ার কথা ছিল তেমনই হয়েছে আজ। ওকাম্পস ছিলেন না, আজ চোটের জন্য প্যালাসিওস ছিটকে গিয়েছিলেন আগেই। তবে সুযোগ পেয়ে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন স্পারসের লে সলসো ও স্টুটগার্টের নিকো গঞ্জালেজ। ১৭ মিনিটের প্রথম গোলটা এসেছে দুজনের সৌজন্যেই। গঞ্জালেজের পর তালিয়াফিকো ও লে সলসোর দারুণ বিল্ড আপের পর পেরু রক্ষণের বা প্রান্তে ঢুকে পড়েছিলেন লে সলসো। তার বুটের আউটসাইড দিয়ে করা ক্রসটা দারুণ এক ফার্স্ট টাচের পর বাঁ পায়ের নিচু  শটে জালে জড়িয়ে দেন গঞ্জালেজ। খানিক পরেই লিওনেল মেসির পাস থেকে দ্বিতীয় গোলটা লে সলসো পেয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তের ট্যাকলে গোল পাওয়া হয়নি লে সলসোর। দ্বিতীয় গোলের জন্য অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি আর্জেন্টিনাকে।

    ২৮ মিনিটে আরেকটি ডিফেন্সচেরা পাসে পেরুর দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের মধ্য দিয়ে ইন্টার স্ট্রাইকার মার্টিনেজকে খুঁজে নেন পারাদেস। জাত স্ট্রাইকারের মতো গোলরক্ষককে কাটিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে দেন। আর্জেন্টিনার জন্য আরও গোল মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। মেসির শট একটুর জন্য পোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়, ডি পল জায়গামতো না থাকায় গোল করতে পারেননি। প্রথমার্ধে বলার মতো একটা শটই পেয়েছে পেরু, কিন্তু ৪২ মিনিটের ভলিও চলে গেছে পোস্টের বেশ ওপর দিয়ে।

    দ্বিতীয়ার্ধে ডি পলের জায়গায় ওকাম্পোস নামেন, প্রায় সাথে সাথেই গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু পেরু গোলরক্ষক গালেসের জন্য সেটা হয়নি। এরপর বদলি হিসেবে নেমে বাঁ পায়ের শটে গোল প্রায় পেয়ে গিয়েছিলেন ডি মারিয়াও। কিন্তু এবারও গালেসে গোল লাইন থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এরপর আর্জেন্টিনা খুব একটা গুছিয়ে খেলতে পারেনি, ম্যাচের শেষ দিকে পেরু চেষ্টা করেছিল খেলায় ফেরার। কিন্তু বলার মতো সেরকম সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। মেসি অবশ্য একটা গোলের সবরকম চেষ্টাই করেছিলেন। দুজনকে ঢুকে বক্সের ভেতর বাঁ পায়ের শটটা অবিশ্বাস্যভাবে মিস করেছেন, পেনাল্টির আপিলও করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত টানা তিন আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোলহীন রইলেন। ব্যক্তিগতভাবে রাতটা মনে রাখার মতো কিছু না হলেও নিচে নেমে বিল্ড আপে কিছুটা অবদান রেখেছেন, সেটাতে সন্তুষ্ট হতেও পারেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি।

    তবে স্কালোনির আসল সন্তুষ্টির জায়গা অন্যখানে। গত বছর কোপায় হারার পর টানা ১১টি ম্যাচে হারেনি আর্জেন্টিনা। এবারও বাছাইপর্বে প্যারাগুয়ের সঙ্গে ড্র ছাড়া জিতেছে বাকি তিন ম্যাচেই, শীর্ষে থাকা ব্রাজিলের চেয়ে পিছিয়ে আছে দুই পয়েন্টে। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, না হারলেও ঠিক মন ভরানোর মতো খেলা খেলতে পারছিল না সব ম্যাচে। সেই আক্ষেপ আজ প্রথমার্ধে অন্তত দূর করেছে দল। সুযোগ পেয়ে লে সলসো-গঞ্জালেজরা দারুণ খেলেছেন, সেটাও অনেক বেশি সন্তুষ্টির জায়গা হবে স্কালোনির জন্য। আর ২০০০ সালের পর টানা তিনটি অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতল আর্জেন্টিনা, সর্বশেষ ২০০০ সালে জিতেছিল চারটি ম্যাচে। স্কালোনি তাই বছর শেষটা খুশিমনেই করতে পারছেন।