কিক অফের আগে : লাইপজিগের বিপক্ষে পিএসজির বাঁচা-মরার ম্যাচ
চ্যাম্পিয়নস লিগের চতুর্থ গেমউইকে পিএসজির জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন পরীক্ষা। পা হড়কালেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে রানার্স আপদের। অন্য অবস্থায় অবশ্য গ্রুপ এইচে। বার্সেলোনা, জুভেন্টাস আরামসেই দ্বিতীয় পর্বের পথ দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু দুই দলের অবস্থা ভিন্ন, তাই সমীকরণও আলাদা।
বাদ পড়ার শঙ্কায় পিএসজি
চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজি রানার্স আপ হয়েছে মাত্র তিন মাস আগে। নতুন মৌসুমে পিএসজিতে পরিবর্তন আসেনি তেমন। কিন্তু তিন মাসে বদলে গেছে অনেককিছু। পিএসজি এখন গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কায়। ম্যান ইউনাইটেড ও লাইপজিগের কাছে হার, ইস্তাম্বুল বাসেকসাহিরের বিপক্ষে একমাত্র জয়- পিএসজি তিন ম্যাচ শেষে পেয়েছে মাত্র ৩ পয়েন্ট। ইউনাইটেড বাসেকসাহিরের বিপক্ষে জিতে গেলে আর লাইপজিগকে পিএসজি হারাতে না পারলে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেওয়াটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে পিএসজিার।
এই মৌসুমে এখনও ছন্দই খুঁজে পায়নি পিএসজি। লিগের শেষ ম্যাচে মোনাকোর বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে হেরেছে তারা। থমাস তুখলও তাই আছেন দারুণ চাপে। দলকে চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে নিয়ে যেতে না পারলে নিশ্চিতভাবেই হয়ত চাকরিও হারাবেন তিনি। চ্যাম্পিয়নস লিগের সমীকরণটা পিএসজি কঠিন বানিয়ে ফেলেছিল লাইপজিগের কাছে আগের লেগে হেরে। সে ম্যাচের পর তুখল অবশ্য বলেছিলেন, ফিরতি লেগ জিততে পারলে আবার সবকিছু শান্ত হয়ে যাবে। 'অশান্ত পরিস্থিতি' ঠান্ডা করতে তুখল চেয়ে আছেন নেইমারের দিকে। চোটে পড়ার পর লাইওজিগের সঙ্গে প্রথম লেগও মিস করেছিলেন নেইমার। এরপর লিগের শেষ ম্যাচে বদলি হিসেবে নেমেছিলেন তিনি। এবার নেইমারকে শুরু থেকেই একাদশে রাখবেন বলে জানিয়েছেন তুখল।
লিয়ান্দ্রো পারেদেস ও মার্কিনিয়োস মোনাকোর বিপক্ষে খেলেননি। এবার তারাও ফিরবেন। তবে ইদ্রিসা গায়া ও প্রেসনেল কিমপেম্বে আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় তারা আর এবার খেলতে পারবেন না।
বিশ্রামে মেসি, ডি ইয়ং
এই বিশ্রামটা লিওনেল মেসির দরকারই ছিল। এই মৌসুমে টানা ম্যাচ খেলে যাচ্ছিলেন ৩৩ বছর বয়সী মেসি। একটি ম্যাচে কেবল বদলি হিসেবে নামার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এছাড়া বার্সার বাকি ১০ ম্যাচেই পুরোটা সময় খেলেছেন মেসি। চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম তিন ম্যাচ জিতে বার্সেলোনা দ্বিতীয় রাউন্ডে এক পা দিয়ে রেখেছে। তাই রোনাল্ড কোমানের কাছে মনে হয়েছে অধিনায়ক মেসিকে বিশ্রামে পাঠানোর এটাই মোক্ষম সুযোগ।
লা লিগায় কোমানের দল এখন পর্যন্ত হতাশ করেছে। পয়েন্ট টেবিলের ১২ তে অবস্থান তাদের। শেষ ম্যাচেও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে হতাশার এক হার জুটেছে বার্সার। সে ম্যাচের পর জেরার্ড পিকে ও সার্জি রবার্তোকেও হারিয়ে ফেলেছে বার্সেলোনা। সার্জিও বুসকেটসও ইউক্রেনের ম্যাচটি মিস করবেন। সিনিয়র খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতিতে একগাদা নতুন মুখ দলে সুযোগ পেয়েছেন। অস্কার মিনকুয়েনজা, কোনার্ড দি লা ফুয়েন্তে, ম্যাথিয়াস ফার্নান্দেজ সুযোগ পেয়েছেন দলে। ক্লেমেন্ত ল্যাংলেটের সঙ্গে মিনকুয়েনজা বা লা ফুয়েন্তের দুইজনের একজনকে দেখা যাবে হয়ত কিয়েভের বিপক্ষে। স্যামুয়েল উমতিতি ও রোনাল্ড আরাউহোদের কেউ নেই স্কোয়াডে।
মেসির অনুপস্থিতিতে আন্টোয়ান গ্রিযমানের দরজা খুলে যাবে, তবে চাপও বাড়বে। এবার নিজের পছন্দের জায়গায় খেলার সুযোগ পাবেন তিনি। এই সুযোগ গ্রিযমান কতোখানি কাজে লাগাতে পারছেন তার ওপর অনেককিছুই নির্ভর করছে। আগের ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে নামা ফিলিপ কৌতিনহোও শুরু থেকেই থাকবেন কিয়েভের বিপক্ষে।
৩ ম্যাচের একটি বার্সেলোনার কাছে হারলেও জুভেন্টাসও সুবিধাজনক জায়গাতেই আছে। বাকি দুই ম্যাচ জিতে পরের রাউন্ডে যাওইয়ার পথে আছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোরা। তুরিনে এবার ফেরেঙ্কভারোসের মুখোমুখি হবে তারা। চ্যাম্পিয়নস এবার এখনও গোলের খাতা খোলেননি রোনালদো। খেলেছেন যদিও মাত্র একটি ম্যাচ। সিরি আতে শেষ ম্যাচে ক্যালিয়ারির বিপক্ষেও জোড়া গোল করেছেন তিনি। এবার ফেরেঙ্কভারোসের বিপক্ষে তিনি গোলের খাতা না খুললে সেটাই হবে অবাক করা। যদিও চ্যাম্পিয়নস লিগে এখন পর্যন্ত জুভেন্টাসকে সবচেয়ে বেশি স্বস্তি দিয়েছেন আলভারো মোরাতা। ৩ ম্যাচে ৪ গোল করে আপাতত যুগ্মভাবে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি।