কিক অফের আগে : মিলানের রেড জোনে রিয়ালের অন্যরকম ফেরা
কবে, কখন
ইন্টার মিলান-রিয়াল মাদ্রিদ
২৬ নভেম্বর, রাত ২.০০
সান সিরো
মিলান এখন রেড জোন। ইতালির উত্তরাঞ্চলে আবারও করোনাভাইরাস ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। এবার তাই আগে থেকেই সতর্ক মিলান। সন্ধ্যা নাগাদ কার্যত লকডাউন চলছে শহরে। রিয়াল মাদ্রিদের মিলান ফেরাটা তাই হয়েছে সাদামাটা। সান সিরোতে ২০১৬ সালে নিজেদের এগারোতম চ্যাম্পিয়নস লিগটি জিতেছিল রিয়াল। জিনেদিন জিদানের দল আবার সেই মিলানে ফিরল, সান সিরোতেই ম্যাচ তাদের। কিন্তু এবার হোটেল, অনুশীলনের মাঠ কোথাও কোনো সমর্থকেরও অনুমতি মেলেনি। রিয়াল মিলানে ফিরেছে নীরবেই।
নতুন এই পরিস্থিতি অবশ্য নিয়ম হয়ে গেছে ইউরোপিয়ান ফুটবলে। তার সঙ্গে মানিয়েও নিয়েছেন খেলোয়াড়রা। তবে এর প্রভাব পিছু ছাড়ছে না। ইন্টার মিলানের ৫ খেলোয়াড় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে আছেন, রিয়াল মাদ্রিদের লুকা ইয়োভিচও তাই। রিয়ালে করোনার প্রকোপ কম, তবে চোট হানা দিয়েছে। অধিনায়ক সার্জিও রামোস নেই ইন্টারের বিপক্ষে ম্যাচেও খেলছেন না, থাকবেন না ফেদেরিকো ভালভার্দেও। রামোসবিহীন রিয়াল চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ৮ ম্যাচের ৭টিতেই হেরেছে। রামোসের না থাকা জিদানকে না ভাবিয়ে পারে না।
তবে এরপরও ইন্টারের বিপক্ষে ম্যাচে রিয়ালের চাপ তুলনামূলক কম। সেটা মাদ্রিদে আগের লেগে ৩-২ গোলের দারুণ জয়ের কারণে। ওই জয় রিয়ালকে পথে ফিরিয়েছে। যদিও ৩ ম্যাচ শেষে রিয়ালের পয়েন্ট মাত্র ৪, এখনও ও বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখ, শাখতার দোনেতস্কের পেছনে পয়েন্ট টেবিলের তিনে তারা। তবে ইন্টারের বিপক্ষে আরেকটি জয় হয়ত দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথ অনেকটাই সহজ করে দেবে রিয়ালের। আর ইন্টারের জন্য এটা বাঁচা-মরার ম্যাচ। ৩ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ২, অবস্থান তলানিতে। এই ম্যাচ হেরে গেলে টানা তৃতীয়বারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে নেরাজ্জুরিদের।
মাদ্রিদের প্রথম লেগে আন্তোনিও কন্তে দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা রোমেলু লুকাকুকে পাননি। এবার তিনি ফিরছেন। তোরিনোর বিপক্ষে ৪-২ গোলে জেতা সিরি আর শেষ ম্যাচে লুকাকু জোড়া গোল করেছেন। একটি করে গোল করেছেন লাউতারো মার্টিনেজ ও অ্যালেক্সিস সানচেজ। ওই ম্যাচে অবশ্য ইন্টার শুরুতে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে নাটকীয় ফেরায় ম্যাচ উদ্ধার করেছে। মাদ্রিদেও চিত্রনাট্য অনেকটা সে পথেই এগুচ্ছিল। ২-০ তে পিছিয়ে পড়ে পরে ২-২ এ সমতয়া ফিরে ইন্টার চোখ রাঙাচ্ছিল রিয়ালকে। পরে অবশ্য রদ্রিগো বদলি হিসেবে নেমে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। তাতে স্বস্তির জয় পেয়েছিল রিয়াল।
ইন্টারের বিপক্ষে প্রেরণাদায়ী জয়টা অবশ্য কাজে লাগাতে পারেনি রিয়ালও। লা লিগায় এরপর দুই ম্যাচে এক হার আর এক ড্র নিয়ে হতাশায় ডুবেছেন জিদান। চাপ তুলনামূলক কম হলেও ইন্টারের কাছে রিয়াল হেরে গেলে নিশ্চিতভাবেই পাহাড়ের স্তুপের নিচে পড়তে হবে তাকে। সমূহ বিপদ ঘাড়ের ওপর চড়াতে চাইবেন না তিনি। দুইদল তাই জয়ের জন্যই মাঠে নামবে। আরেকটি গোলউৎসবের আশা তাই আপনি করতেই পারেন!
দলের খবর
রামোসের সঙ্গে করিম বেনজেমাও এই ম্যাচে নেই চোটের কারণে। তবে কাসেমিরো ফিরেছেন করোনাভাইরাস থেকে, তার ফেরা নতুন উদ্দীপনা যোগানবে রিয়ালকে। লুকাকুর বিপক্ষে মিলিতাও আর ভারানেকে বড় পরীক্ষাই দিতে হবে। কাসেমিরো ফেরায় চাপ কিছুটা কমবে নিশ্চিতভাবেই।
মারিয়ানো ডিয়াজ আগের ম্যাচে গোল করেছেন বটে। তবে জিদান একাদশ পালটাতে সিদ্ধহস্ত। আগের ম্যাচে কে কী করেছেন, তার ওপর নির্ভর করে একাদশ বাছাই করেন না তিনি। রদ্রিগো আর ভিনিসিয়াস তাই এবার থাকতে পারেন শুরু থেকেই। মার্কো আসেনসিওকে অনেকদিন ধরেই একাদশে মোটামুটি নিয়মিত সুযোগ করেও দিয়েও খুব বেশি লাভ হয়নি জিদানের। সেক্ষেত্রে এডেন হ্যাজার্ডের সঙ্গে আক্রমণভাগে দেখা যেতে পারে নতুন জুটি।
ইন্টারের মিডফিল্ড ইঞ্জিন মার্সেলো ব্রোজোভিচ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তাই তিনি খেলবেন না এই ম্যাচে। তার জায়গা খেলতে পারেন গ্যালিয়ার্দিনি।
সম্ভাব্য একাদশ
ইন্টার মিলান
হান্দানোভিচ, স্ক্রিনিয়া, বাস্তোনি, ডে ভ্রাই, হাকিমি, বারেল্লা, ভিদাল, গ্যালিয়ার্দিনি, মার্টিনেজ, লুকাকু
রিয়াল মাদ্রিদ
কোর্তোয়া, কারভাহাল, ভারান, মিলিতাও, মেন্ডি, কাসেমিরো, ক্রুস, মদ্রিচ, হ্যাজার্ড, ভিনিয়াস, রদ্রিগো
প্রেডিকশন
ইন্টার মিলান ৩-১ রিয়াল মাদ্রিদ