• অন্যান্য খবর
  • " />

     

    চলে গেলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা

    চলে গেলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা    

    অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়। চলে গেলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ৬০ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত  হয়ে মারা গেছেন ফুটবল ঈশ্বর।

    কদিন আগেই ৬০তম জন্মদিন পার করেছিলেন, অসুস্থতায় ভুগছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সেখান থেকে ফিরেও এসেছিলেন। কিন্তু সে ফেরাটা খুব বেশি দিনের জন্য হলো না। ফুটবলভক্তদের কাঁদিয়ে চলে গেছেন ফুটবল কিংবদন্তী।


    ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক। ফুটবলে তার উথান আরও আগে। আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন বুয়েনস আইরেসের বস্তিতে জন্ম নেওয়া ম্যারাডোনা। অল্প বয়সেই পায়ের জাদুতে মুগ্ধ করে এরপর বোকা জুনিয়র্সে যোগ দেন তিনি। সেখান থেকে বার্সেলোনা রেকর্ড ট্রানসফার ফি-তে দলে ভেড়ায় ম্যারাোডনাকে। যদিও বার্সার সময়টা তার খুব বেশি ভালো যায়নি। ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে দুইবার দলবদলের বিশ্বরেকর্ড গড়ে ম্যারাডোনাকে এরপর দলে ভেড়ায় নাপোলি। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বেশি একটানা নেপলসের ক্লাবেই খেলেছেন ম্যারাডোনা। স্কুডেট্টো, ইউয়েফা কাপ জিতিয়ে নাপোলির ইশ্বরের আসনে বসেছিলেন তিনি। তার সম্মানে নাপোলির দশ নম্বর জার্সি এখনও তুলে রেখেছে নাপোলি।

    ম্যারাডোনার ক্লাব ক্যারিয়ারে চেয়ে অবশ্য আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার আরও বর্ণিল। ১৯৭৮ এ ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে তরুণ ম্যারাডোনাকে দলে না নিয়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন তখনকার আর্জেন্টিনা কোচ সিজার লুইস মেনোত্তি। চারবছর পর স্পেন বিশ্বকাপে দলে জায়গা হলেও নিজেকে সেবার পুরোপুরি চেনাতে পারেননি ম্যারাডোনা। সবকিছু জমিয়ে রেখেছিলেন ছিয়াশির বিশ্বকাপের জন্য। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে বিখ্যাত জোড়া গোলসহ পুরো টুর্নামেন্টে ৫ গোল করে আর্জেন্টিনাকে সেবার বিশ্বকাপ জেতান অধিনায়ক ম্যারাডোনা। ১৯৯০ বিশ্বকাপে ইতালিতে দলকে ফাইনালে তুলেও শেষ মুহুর্তের গোলে জার্মানির কাছে হেরে টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জেতা হয়নি তার। মূলত ওই বিশ্বকাপের পর থেকেই পথ হারান ম্যারাডোনা।

    ১৯৯১ সালে ডোপ টেস্টে উতরাতে না পেরে প্রথমবারের মতো ১৫ মাসের নিষেধাজ্ঞা পেতে হয় ম্যারাডোনাকে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে অবশ্য দলের অধিনায়কই ছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু আরও একবার ডোপ টেস্টে ব্যর্থ হয়ে টুর্নামেন্টের মাঝপথে দেশে ফিরতে হয় তাকে। ১৯৯৭ সালে ৩৭তম জন্মদিনে বোকা জুনিয়র্সের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলে ফুটবলকে পরে বিদায় বলেন ম্যারাডোনা।

    ফুটবল ছাড়ার পর কোচ হিসেবেও আর্জেন্টিনার দায়িত্ব পালন করেছিলেন ম্যারাডোনা। ২০১০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার কোচ ছিলেন তিনি। সবশেষ আর্জেন্টিনার ক্লাব জিমনাসিয়ার হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন ৬০ বছর বয়সী।

    বিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনাকে সঙ্গী করেছিলেন ম্যারাডোনা ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই। তিনি যেখানেই যেতেন সেখানেই খবর বনে যেতেন। ফুটবলের প্রথম সুপারস্টার হিসেবেও খ্যাতি ছিল তার। কোকেন কেলেঙ্কারির পর থেকে আর কখনই মাদকাসক্ত অবস্থা থেকে পুরোপুরি রেহাই মেলেনি ম্যারাডোনার। ২০০৪ সালে মৃত্যুর খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। এবার তিনি একেবারেই চলে গেলেন।