মালানের রাতে ইংল্যান্ডের রেকর্ড জয়, হোয়াইটওয়াশড দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯১/৩, ২০ ওভার (ভান ডার ডুসেন ৭৪*, ডু প্লেসি ৫২*, বাভুমা ৩২, স্টোকস ২/২৬, জর্ডান ১/৪২)
ইংল্যান্ড ১৯২/১, ১৭.৪ ওভার (মালান ৯৯*, বাটলার ৬৭*, রয় ১৬, নরকিয়া ১/৩৭)
ইংল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ী ও সিরিজ ৩-০তে জয়ী
ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১, ডাভিড মালানের সেঞ্চুরির জন্য ২। লুথো সিপামলার সে বল কাভারে ঠেলে মালান নিলেন সিঙ্গেল! সেঞ্চুরি আর জয়ের এই হিসাবটা গড়মিল করে ফেললেন তিনি, হয়ে গেলেন আইটি-টোয়েন্টিতে ৯৯ রানে অপরাজিত থাকা দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান (রানতাড়ায় প্রথম, এর আগে ২০১২ ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ডেরই লুক রাইট অপরাজিত ছিলেন ৯৯ রানে, আগে ব্যাটিং করে। আর একজন ব্যাটসম্যানেরই ৯৯ রানের স্কোর আছে এ ফরম্যাটে, এবং তিনিও আরেকজন ইংলিশ-- অ্যালেক্স হেলস!)। কেপটাউনে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১৯২ রানতাড়াকে ছেলেখেলা বানিয়ে ফেললেন মালান ও জস বাটলার, ইংল্যান্ড জিতলো ৯ উইকেটে। এর আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে এত রান এর আগে কেউ তাড়া করে জেতেনি উইকেটের হিসেবে এতো বড় ব্যবধানে। মালান-বাটলারের অবিচ্ছিন্ন জুটিও ২য় উইকেটে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ।
নিউল্যান্ডসের উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য তুলনামূলক সহজ হয়ে এসেছিল পরের দিকে। তবে এরপরও ইংল্যান্ডকে অন্তত এ ভেন্যুর রেকর্ড গড়তেই হতো জেতার জন্য, এ সিরিজের প্রথম ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকার ১৭৯ তাড়া করে জিতেছিল ইংল্যান্ড, যেটি ছিল আগের রেকর্ড।
রানতাড়ায় চতুর্থ ওভারে আনরিখ নরকিয়ার ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস-মার্কা ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছিলেন জেসন রয়, যিনি ভুগছেন নিজের ফর্ম নিয়ে। তবে ফর্মের তুঙ্গে থাকা মালান নেমে প্রথম বলেই পুল করে মারলেন চার, সে ওভারের শেষ বলে চার মারলেন আরেকটি। যদি এমন রাতে কী ঘটতে চলেছে সেটির ইঙ্গিত কেউ খুঁজে থাকেন, তাহলে মালানের ওই দুটি শটই তার জন্য যথেষ্ট।
টি-টোয়েন্টিতে এক নম্বর ব্যাটসম্যান মালানের দাপট এমনই ছিল, তিনি এমনকি আড়াল করে দিলেন জস বাটলারকেও, তার ৪৬ বলে ৬৭ রানের ইনিংসকেও। কাগিসো রাবাদাকে ছাড়া খেলতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং লাইন-আপকে এ দুজন মিলে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছেন। পাওয়ারপ্লেতে ৫৬ রান তোলার পর বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি আঁটসাঁট ওভার করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, তবে নিয়মিতই বড় শট খেলে যাওয়া, বাউন্ডারি পাওয়া মালান-বাটলারকে আটকানোর জন্য যথেষ্ট হয়নি সেসব। মালান তার ইনিংসে ১১টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৫টি ছয়, বাটলার ৩ চার ও মালানের সমানসংখ্যক ছয়। ইংল্যান্ড জিতেছে ১৪ বল বাকি থাকতেই।
অথচ শেষদিকের ঝড়ে রাসি ভান ডার ডুসেন ও ফাফ ডু প্লেসি মোমেন্টামটা এনে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। শেষ ৫ ওভারে দুজন মিলে তুলেছিল ৮৪ রান! শুরুতে ১২ বলে ১৭ রান করা কুইন্টন ডি কক ফিরেছিলেন ক্রিস জর্ডানের বলে ক্যাচ দিয়ে, এরপর ৩ রানের ব্যবধানে ফিরেছিলেন টেমবা বাভুমা ও রিজা হেন্ডরিকস, যথাক্রমে ২৬ বলে ৩২ ও ১৪ বলে ১৩ রান করে বেন স্টোকসের শিকার হয়ে।
এরপর খানিকটা সময় নিয়েছেন ডু প্লেসি ও ভান ডার ডুসেন। দুজন নিজেদেরকে লাগামছাড়া করেছেন মূলত ১৫ ওভারের পর থেকেই। ১৭তম ওভারে ২৩ বলে ফিফটি পূর্ণ করেছেন ভান ডার ডুসেন, শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত ছিলেন ৩২ বলে ৭৪ রান করে, মেরেছেন ৫টি করে চার ও ছয়। ডু প্লেসি ৫ চার ও ৩ ছয়ে অপরাজিত ছিলেন ৩৭ বলে ৫২ রানে। এ দুজনের ১২৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তবে মালান, সঙ্গে বাটলারে ম্লান হয়ে গেলেন শেষ পর্যন্ত ভিডি ডুসেন ও ডু প্লেসি।