চিরনিদ্রায় ইতালির ৮২ বিশ্বকাপের নায়ক পাওলো রসি
ফুটবলে যেন একের পর এক শোকের আঘাত আসছেই। ডিয়েগো ম্যারাডোনা, পাপা বুবে দিওপ, আলেহান্দ্রো সাবেয়ার পর এবার চলে গেলেন ১৯৮২ বিশ্বকাপের সোনালী ছেলে পাওলো রসি। কাল ৬৪ বছর বয়সে মারা গেছেন তিনি, নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী ও ইতালির রাই স্পোর্টস।
ম্যারাডোনার ৮৬ বিশ্বকাপটা যদি রূপকথা হয়, তাহলে রসির ৮২ বিশ্বকাপ জয় তার চেয়ে খুব কম কিছু নয়। সেই বিশ্বকাপে রসির খেলাটাই ছিল একটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার। দুই বছর আগে পেরুজিয়ার হয়ে খেলতে গিয়ে ম্যাচ ফিক্সিং কেলেংকারিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন রসি। অভিযোগ উঠেছিল, ইচ্ছে করে একটা ম্যাচ হেরে গিয়েছিল রসির দল। তীর এসেছিল রসির দিকে, তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। তবে বার বার দাবি করেছেন, এই ধরনের কিছুর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না রসি। তিন বছর থেকে কমিয়ে দুই বছরে নিয়ে আসা হয় নিষেধাজ্ঞা, বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র দুই মাস আগে খেলার অনুমতি মেলে।
এরপর যা হলো, সেরকম কিছু আসলে গল্পেই হয়। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে মাঠে নেমে ইতালির হয়ে পেলেন জয়সূচক গোল। তবে নিজের সেরাটা রেখে দিয়েছিলেন ব্রাজিলের জন্য। জিকো, সক্রেটিসের ব্রাজিল ছিল সেই বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার। তাদের ৩-২ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দিল ইতালি, রসি পেলেন হ্যাটট্রিক। বিশ্বকাপটা সেবার জিতেছিল ইতালি, ছয় গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার গোল্ডেন বুটের সঙ্গে গোল্ডেন বলও জিতেছিলেন রসি। গারিচনা ও মারিও কেম্পেসের পর মাত্র তৃতীয় ফুটবলার হিসেবে এক বিশ্বকাপে এই দুইটি পুরস্কার জিতেছিলেন রসি। সেই বছর জিতেছিলেন ব্যালন ডি অর। ক্লাবেও সাফল্য আছে তার, জুভেন্টাসের হয়ে দুইবার সিরি আ, একবার কোপা ইতালিয়া ও ৮৪ সালে ইউরোপিয়ান কাপ জয়ের কীর্তি আছে। তবে ফুটবল রসিকে মনে রেখেছে ৮২ বিশ্বকাপের সেই অতিমানবীয় কীর্তির জন্য।
অবসর নেওয়ার পর খেলার সাথেই জড়িয়ে ছিলেন। ইতালির রাই স্পোর্তে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছিলেন। তারাই জানায়, রসি আর নেই।