• ক্রিকেট, অন্যান্য
  • " />

     

    'মানসিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে' আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন আমির

    'মানসিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে' আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন আমির    

    আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন পাকিস্তান পেসার মোহাম্মদ আমির। এক বিবৃতিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে, আমির তার সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছেন তাদের কাছে, এবং তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে তারা সম্মান করে। 

    এর আগে পাকিস্তানের এক টেলিভিশন চ্যানেলকে আমির তার অবসরের কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ‘মানসিক যন্ত্রণা’ সইতে না পেরে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তিনি। বর্তমানে তাকে ঘিরে দলের যে পরিবেশ, সেখানে আর খেলতে চান না তিনি। 

    “আমি ক্রিকেট ছাড়ছি, কারণ মানসিকভাবে যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে। মনে হয় না এটি আর নিতে পারব। ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত যথেষ্ট যন্ত্রণা ভোগ করেছি, নিষেধাজ্ঞাও পার করেছি। বারবার শুনতে হয়েছে, পিসিবি আমার ওপর যথেষ্ট বিনিয়োগ করেছে, এটা পীড়া দিয়েছে আমাকে বারবার। আমি বলব, শুধু দুজন মানুষ আমার ওপর বিনিয়োগ করেছেন-- নাজাম শেঠি (পিসিবির সাবেক চেয়ারম্যান) ও শাহিদ আফ্রিদি (পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক)। 

    “তারা দুজনই শুধু। দলের বাকিরা বলেছে, “আমরা আমিরের সঙ্গে খেলতে চাই না’। সম্প্রতি এমন একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে, আমি দেশের হয়ে খেলতে চাই না, এই কথাটা আমাকে তাড়া করে ফিরছে। কে দেশের হয়ে খেলতে চায় না? দুই মাস পরপর কেউ না কেউ আমাকে নিয়ে কিছু না কিছু বলে। মাঝে বোলিং কোচ (ওয়াকার ইউনিস) বলেন, আমির আমাদের ধোঁকা দিয়েছে। মাঝে মাঝে শুনতে হয়, আমার ওয়ার্কলোড সন্তোষজনক নয়। যথেষ্ট হয়েছে ভাই। আর না।” 

    আমিরের এমন কথার পর পিসিবির বিবৃতিটাও হয়েছে ঝাঁঝালো, “পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান আজ বিকেলে মোহাম্মদ আমিরের সঙ্গে কথা বলেছেন, তিনি অবসর নিয়েছেন এমন সংবাদ আসার পর। ২৮ বছর বয়সী আমির পিসিবি প্রধান নির্বাহীকে নিশ্চিত করেছেন, তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ইচ্ছা বা লক্ষ্য নেই, এবং এ কারণে তাকে ভবিষ্যতে আর বিবেচনা না করতে। এটা মোহাম্মদ আমিরের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, যেটিকে পিসিবি সম্মান করে। ফলে এ বিষয়ে এখন আর কোনও মন্তব্য করা হবে না।” 

    আমিরের সঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সম্পর্কটা ভাল যাচ্ছে না বেশ কিছুদিন ধরেই। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে সীমিত ওভারের মনযোগ দেবেন বলে টেস্টকে বিদায় বলেছিলেন আমির। এরপর বাদ পড়েছিলেন পিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে। সম্প্রতি জিম্বাবুয়ে সিরিজ ও নিউজিল্যান্ড সফরের দলেও জায়গা হয়নি তার। অবশ্য মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিক ও আমির-- কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নেই কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে খেলার সম্ভাবনা আছে যাদের, তাদের ক্ষেত্রে ম্যাচ ফি সর্বোচ্চ গ্রেডের করে দিয়েছিল পিসিবি। 

    ২০০৯ সালে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক হওয়া স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে ৫ বছর নিষিদ্ধ হওয়া আমির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছিলেন ২০১৬ সালে। যে সম্ভাবনা নিয়ে এসেছিলেন, বা শুরুর দিকে যে ঝলক দেখিয়েছিলেন, দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞার পর সেটি সে অর্থে পূরণ হয়নি। 

    ঘটনাটা পাকিস্তান ক্রিকেট বলেই নিশ্চিত করে কিছু বলার উপায় নেই। তবে আমিরের এই বিদায়ই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চূড়ান্ত হলে তার পরিসংখ্যান পড়বে এমন-- ৩৬ টেস্টে ১১৯, ৬১ ওয়ানডেতে ৮১ ও ৫০ টি-টোয়েন্টিতে ৫৯ উইকেট তার। পাকিস্তানের এ শতাব্দীতে বড় দুই শিরোপা-- ২০০৯ আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও বোলিংয়ে অবদান রেখেছিলেন তিনি।